Daily
বন্ধ হচ্ছে বেআইনি টোটো?
কমে যাবে পথচলতি টোটোর সংখ্যা?
প্রশ্নের মুখে উঠে আসছে কর্মসংস্থানের হাল?
আবার কি চওড়া হতে চলেছে বেকারত্ব?
কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন টোটো ড্রাইভাররা?
অনেকেই বলছেন, চাকরির যা বাজার! অন্তত টোটো চালিয়ে তো রুজিরুটির ব্যবস্থা কিছু হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার যদি সেখানেও রাশ টানতে যায় তাহলে কর্মসংস্থানে দখলদারি হবে। কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন টোটো চালকরা? সেক্ষেত্রে যদি টোটো বন্ধের দাবি ওঠে তাহলে অকূল-পাথারে পড়বে অনেকের সংসার। কারণ মফঃস্বল, গ্রামেগঞ্জে সর্বত্র মানুষের যাতায়াতের ভরসা হয়ে উঠেছে টোটো। টোটোয় রাশ টানার আগে কি চালকদের জন্য দ্বিতীয় কোন কর্মসংস্থানের পথ খুলে রেখেছে সরকার? তৃণমূল বিরোধী মনোভাব সেক্ষেত্রে চওড়া হবে না তো?
টোটোর দৌরাত্ম্যের খবর আমরা কমবেশি অনেকেই পাচ্ছি। বিভিন্ন জেলা থেকে সেই খবর শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন রাজ্য সড়কে বা জাতীয় সড়কে লাগামছাড়া টোটোর সংখ্যা নাকি বহু সমস্যা তৈরি করছে। তার মধ্যে অন্যতম যাত্রী সুরক্ষা এবং প্রবল যানজট। কাজেকম্মে যেতে দেরি হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। অনেক সময় টোটোর দৌরাত্ম্যের জন্য দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও ভালোরকম বাড়ছে। ফলে টোটো একদিকে যেমন যাতায়াতের ভাবনায় জল ঢেলে যাত্রীদের সুবিধে করে দিচ্ছে, তেমনই আবার সেই টোটো নিয়েই যাত্রী অসন্তোষ নতুন করে বাড়ছে। তারপরেই কার্যত মাঠে নেমে পড়ে রাজ্য সরকার। বেআইনি টোটো রাশ টানার ব্যপারে উদ্যোগী হয়। তবে এমন কথাও জানতে পারা যাচ্ছে যে, টোটোর কারণে নাকি বাসে যাত্রী সংখ্যা দিন দিন কমছে। অনেক বাস রুট নাকি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেও খবর এসেছে। আর যে কারণে পুরসভা, পঞ্চায়েতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকা। লোকাল পুলিশ প্রশাসন সেই বিষয়ে তৎপর। কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। যাত্রী সুরক্ষা এবং যানজট এড়াতে অবৈধ টোটোয় রাশ টানার ব্যপারে প্রশাসন তৎপর হয়েছে, খুব ভালো কথা। কিন্তু আমাদের রাজ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের রুজিরুটি সবই নির্ভর করে টোটো চালিয়ে। মানে তিন চাকার এই যান বহু সংসারে ভাত, রুটির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল, অবৈধ টোটো বন্ধ হলে তাঁদের কি হবে? বেকারত্বের ছবিটা তো এমনিই দিনে দিনে পরিষ্কার হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের কি হবে? সংসার চালাবেন কি করে?
টোটো বন্ধ করার কোন ইচ্ছা যে প্রশাসনের নেই, সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যাচ্ছে। এদিকে অবৈধ টোটোর দাপাদাপি বন্ধ করাটা বিশেষভাবে প্রয়োজন। তাই বলে টোটো চালকদের গভীর কোন সমস্যায় পড়তে হবে এমন কথা বলা যায় না। কারণ প্রশাসন যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, সেই মত চললে আখেরে সুবিধা হতে পারে টোটো চালকদের। তাই বেআইনিভাবে কেউ যাতে টোটো না চালান সেই ব্যপারে প্রশাসন নিশ্চিত হতে চাইছে আর যে কারণে বেঁধে দিয়েছে কিছু নিয়ম। টোটোচালকদের জন্য কিউআর কোড দেবার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেটাই হতে চলেছে ঐ টোটোচালকদের পরিচয়পত্র। একইসঙ্গে পরিবহন দফতর থেকেও পুরসভা এলাকায় টোটোর সংখ্যা কত তার তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে যে, নতুন করে কেউ যদি টোটো রাস্তায় নামাতে চান তাহলে পুরসভায় নাম নথিভুক্ত করা অবশ্যই প্রয়োজন।
এখন বিষয়টা হচ্ছে, জেলা মফঃস্বল বা গ্রামীণ এলাকায় টোটোই হচ্ছে লাইফলাইন। যাত্রীদের নিয়ে আসা, নিয়ে যাবার জন্য টোটো আনপ্যারালাল। সেখানে টোটো ছাড়া বহু যাত্রীর যেমন গতি নেই, তেমনই আবার টোটোকে বাদ দিলে হেঁশেলের আগুন বন্ধ হতে পারে বহু মানুষের। তাই অবৈধ টোটোয় রাশ টানা হোক। একইসঙ্গে কিভাবে তাঁরা নতুন করে বৈধ উপায়ে টোটো চালাতে পারেন সেদিকে নজর দিক প্রশাসন। আশা করা যাবে, অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে টোটো চালকদের। আপনারা কি মনে করেন, মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন। আর নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ