Daily
মহাভারতে যিনি অর্জুন তিনিই পার্থ। মোদী ভারতে নাম আলাদা, ব্যক্তি আলাদা। আর ভোট ময়দানে দুজনের আদর্শ আলাদা। অর্জুন সিংকে গদ্দার বলছেন পার্থ। আবার পার্থকে আক্রমণ করছেন অর্জুন। ভোট ময়দানে বাকযুদ্ধ চরমে। কিন্তু এই কথা চালাচালির মধ্যে আদৌ কি খরা থেকে বেরোতে পারছে ব্যারাকপুর? ব্যারাকপুর বললেই দ্বিতীয় আরেকটা শব্দ মাথায় চলে আসে। আর সেটা হল শিল্পাঞ্চল। বড় বড় কারখানা, হাজার হাজার শ্রমিকের আসাযাওয়া, কথাবার্তা আর দুর্দান্ত এক কর্মযজ্ঞ। মুশকিল হচ্ছে, ব্যারাকপুর কার হবে অর্জুন নাকি পার্থ-র এই প্রশ্ন উঠলেও শিল্পাঞ্চলের ছবিটা যেন দিন দিন ফিকে হয়ে আসছে। মানুষের পাশে প্রত্যেকেই দাঁড়াতে চাইছেন, কিন্তু মানুষকে স্ব-নির্ভর করতে চাইছেন কে কে? কেন বললাম এবার সেটা বলি।
ব্যারাকপুর, সোদপুর, পানিহাটি- এই পুরো এলাকা জুড়ে যদি দেখা যায় তাহলে একটা সময় ছিল যখন সত্যি সত্যিই রচনা ব্যানারজি এলে আকাশে ধোঁয়া দেখতে পেতেন। ডাকব্যাগের কারখানা, প্রিয়া বিস্কুটের কারখানা, দীপ্তির কারখানা, সুতোর কল, জুট মিলের মত একের পর এক কারখানা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যেত আকাশে। হাজার হাজার মানুষ সেখানে কাজ করতেন। আর তাঁদের দৌলতে চলত অনেক দোকান। কারণ সেই সব দোকানের মূল ক্রেতারাই ছিলেন এই কারখানার শ্রমিকরা। কিন্তু আজ কোথায়? ডাকব্যাগ বন্ধ, প্রিয়া বিস্কুট বন্ধ আর এভাবেই একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়েছে। কোথাও সেখানে গজিয়ে উঠেছে গুদাম, তো কোথাও পড়ে রয়েছে ফাঁকা জমি আর না হলে কোথাও হয়েছে আকাশছোঁয়া আবাসন। অভিজাত মানুষের ভিড় বেড়েছে। সেখানে আপত্তি নেই। কিন্তু বড় মানুষের কথা ভেবে যারা আসল শ্রম এতকাল ধরে দিয়ে এসেছেন, তাঁদের মুখে কি ভাত ওঠে? তাঁদের ছেলেমেয়েরা কি পড়াশোনা করেন? যে সকল শ্রমিকরা এই সব কারখানার কাজ করতেন, তাঁদের পরিবারগুলো কিভাবে দিনলিপি লিখছেন? সেখানে দাঁড়িয়ে যদি আজ পার্থ ভৌমিক বা অর্জুন সিংকে পৌঁছে যেতে হয়, তাঁদের প্রশ্ন করা হয় আদৌ কি তাঁরা আর পারবেন উপযুক্ত জবাব দিয়ে দেখিয়ে দিতে কেমন আছে ব্যারাকপুরের মরে যাওয়া শিল্প? তাঁদের কাছে কি সেই সঞ্জীবনী মন্ত্র রয়েছে?
পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, অর্জুন সিং-কে মানুষ চিনতে পেরেছেন। কারণ তাঁর আদর্শ বলে কিছু নেই। একবার তৃণমূল, সেখান থেকে বিজেপি তারপর আবার তৃণমূল এখন আবার তৃণমূল থেকে বিজেপি। এদিকে পার্থ ভৌমিক তিনি নিজে অবশ্য তৃণমূল ছাড়ার কথা ভাবতেই পারেন না। আর ঘাসফুলের প্রতীকে তিনি দাঁড়িয়ে এবার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দেবার জন্য প্রস্তুত। উল্টোদিকে অর্জুন সিং। অর্জুনের বিরুদ্ধে পার্থ কী বলছেন শুনে নিন,
কিন্তু এসব করেও যে দিনের শেষে প্রশ্নটা একই থেকে গেল। এই জমানায় ঘটা করে বিজনেস সামিট হয়। কেন্দ্রের সরকার এখানে ওখানে ব্যবসায়ীদের নিয়ে সুমহান আয়োজন করেন। যা হচ্ছে সেখানে শুধু চমক রয়েছে। কিন্তু অতীতের যে শিল্পাঞ্চল আজ শুধু কুলীন হয়েই থেকে গেল, স্মৃতির ঝলকে আসা যাওয়া করছে মাত্র সেগুলোকে সঞ্জীবনী মন্ত্র দিয়ে বাঁচিয়ে তোলার কোন উদ্যোগ দেখা গেল কি? যদি থাকত তাহলে নিশ্চয়ই ডাকব্যাগ, প্রিয়া বিস্কুটের মত যে শয়ে শয়ে কারখানা বন্ধ ছিল, সেগুলো খুলে যেত। কারখানায় শ্রমিকদের আসা যাওয়া চলত। কিন্তু…রাজনীতির ময়দানে শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় কিন্তু রেখেই দিলেন ঘাসফুল এবং পদ্মফুলের দুই প্রার্থী। আপনারা কি মনে করেন জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন। আর নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ