Trending
টেট নিয়ে ফের বিস্ফোরক কোলকাতা হাইকোর্ট। ওএমআর শিটের সঠিক তথ্য খুঁজে পাওয়া না গেলে বাতিল হবে টেট। সাফ জানাল কোলকাতা হাইকোর্ট। অস্বস্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
আচ্ছা একটা কথা বলুন তো, কোথাও গিয়ে কী চাল আর কাঁকড়কে আলাদা করার পরিবর্তে জোর করে মিশিয়ে ফেলা হচ্ছে? দীর্ঘ আট বছর কোন টেট পরীক্ষা হয়নি। ২০১৪-তে যাও বা একটা আইওয়াশ গোছের পরীক্ষা হল, সেটাতেও কেলেঙ্কারি। এতগুলো ছেলে-মেয়ে পাশ করে বসে আছে। চাকরিটা কোথায়? আর এরইমধ্যে বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো হুঁশিয়ারি শোনা গেল কোলকাতা হাইকোর্টের গলায়। চাকরি খোয়াতে পারেন আরও ৫৯ হাজার ৫০০ জন।
কোন বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা? রিক্রুটমেন্ট স্ক্যাম ২০১৪। বিষয়টা কী? একটু সাজিয়ে বলা যাক। ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটের মাধ্যমে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছিল, তাতে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল। মামলা করা হয়েছিল হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানিতেই চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ জানান যে, তারা ওএমআর-এর আসল তথ্য হাতে পাননি। আর এখানেই গোরায় গলদ দেখেন বিচারপতি মান্থা।
ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট কোথায়? নিয়োগের ক্ষেত্রে কোথায় কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে? তা নিয়ে একটা সংক্ষিপ্ত বিবরন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কোলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। ২০১৪-র পর ২০১৬ এবং ২০২০ তে নিয়োগ। যে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এত চর্চা, ধর্না, অভিযোগ, এবার সেই গোটা পরীক্ষা বাতিলের হুঁশিয়ারি দিলেন ককাতা হাইকোর্টের বিচারপরি রাজশেখর মান্থা। যদি তাইই হয় তাহলে সেক্ষেত্রে চাকরিহারা হবেন বাংলার ৫৯ হাজার ৫০০ জন।
ওএমআর এর সম্পূর্ণ তথ্য হাতে না পেয়ে বিচারপ্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া মানে খড়ের গাদায় সূচ খুঁজে বেড়ানো। আর তাছাড়া যেখানে এখন সমস্ত সরকারী তথ্য ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় জমা থাকে, সেখানে যেকোনো সময় তথ্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব। মুছে ফেললেও সেই তথ্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব। তাই বিচারপতির সাফ বক্তব্য যে, তথ্য মঙ্গল গ্রহে থাকলেও তা খুঁজে আনতে হবে সিবিআইকে, এবং সেটা এক সপ্তাহের মধ্যেই। প্রশ্নটা হচ্ছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া একটা সমস্যা। কিন্তু এর সমাধানটা কী? নিয়োগ দুর্নীতির পরিনামটা কী? শেষে আবার অশ্ব-ডিম্ব না জোটে।
একদিকে চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগের অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে বসে আছেন। অন্যদিকে যোগ্য শিক্ষকের অভাবে রসাতলে যাচ্ছে সরকারী স্কুলগুলো। স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দুর্নীতি এবং আদালতের (তারিখ পে তারিখ)। এবার তো ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে চাকরিপ্রার্থীদের। এ রাজ্যে দুর্নীতির পর্দাফাঁস হয়। কিন্তু যারা দুর্নীতি করে তাদের কোন পরিণতি হয় না।
কতগুলো দিন কেটে গিয়েছে অথচ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ। কখনও প্রশ্ন করেছেন, কী হবে এতগুলো চাকরিপ্রার্থীর? কবে সরকারী স্কুলের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া হবে? কোর্টের দোহাই দিয়ে আর কতদিন শিক্ষাব্যবস্থাকে বঞ্চিত করে রাখা হবে? এত বড়ো একটা সংকটের দিনেও একটা বড়ো অংশের মানুষ নির্বিকার। নির্বাচনী প্রচারে প্রার্থীরা দরজায় দরজায় আসছেন। তাদের অন্তত একবার এই প্রশ্নগুলো করতে পারেন। আর যদি প্রশ্ন না করেন, তাহলে চোখের সামনে শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্জলি যাত্রা দেখা ছাড়া আর কোন উপায় কী সত্যিই থাকবে আর?
মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।