Trending
শুধু গালভরা বুলি। নিপাত যাক চাকরির প্রতিশ্রুতি। শুধু এই একটা ক্ষেত্রেই বোধ হয় বাঘে গরুতে একঘাটে জল খাচ্ছে। ডবল ডবল চাকরি। আত্মনির্ভর ভারত। শুধু গালভরা বিজ্ঞাপন। ভিতরটা পুরো ফোঁপরা হয়ে আছে। জানেন কী?
রিপোর্ট বলছে, ২০২৪-এ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ৮৩ শতাংশ। ২০০০ সাল নাগাদ যেটা কিনা ছিল মাত্র ৩৫ শতাংশ। এই তো, কী সুন্দর (দেশ আগে বার রাহে হ্যায়)… পরোতে পরোতে শুধুই (উন্নয়নের জোয়ার)
আইআইটি বোম্বে। দেশের প্রথম সারির সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে চান্স পেতে গেলে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়- তারা পর্যন্ত হাত তুলে নিচ্ছে। তাদের ৩৬ শতাংশ স্টুডেন্ট চাকরি পাচ্ছে না। ২০০০ জনের মধ্যে ৭১২ জনই প্লেসমেন্ট পায়নি। ভাবতে পারছেন? দেশের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা স্টুডেন্টরা বেকার। (ভাবুন, ভাবুন। ভাবা প্র্যাক্টিস করুন)। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ ঘরে বসে আছে দেশের শিক্ষিত বেকাররা। লাখ লাখ টাকা খরচ করে এমবিএ করে ফিরে আসার পর কী মিলছে? ১০ বছরে তো রেলে ১০ লক্ষ চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিয়ুশ গয়েল। মাত্র ৩ লক্ষের হিসেব দিচ্ছেন কেন এখন? ৮ বছরে নতুন করে একটাও এসএসসি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি আসল না কেন? কেউ স্লোগান তুলছে, জনগনের গর্জন বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন স্লোগান তোলে। কেউ আবার ইস বার ৪০০ পারের স্লোগান তুলছেন। কী হবে ৪০০ পার করে? চাকরি হবে? দেশে শিক্ষিত যুবকের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে? এইভাবেই কি ২০৪৭-এ উন্নত ভারত গঠিত হতে চলেছে?
জেনারেল ডিগ্রি কলেজগুলো কার্যত মাছি তাড়াচ্ছে। সরকারী স্কুলগুলো ধুঁকছে। একটা চাকরির খোঁজে রোদে-বৃষ্টিতে ভিজে দরজায় দরজায় ঘুরছে দেশের শিক্ষিত যুবকরা। অবশ্য তাতে আপনার কী? আপনি নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমোন। প্রশ্ন করে কে আর কবে কী করে ফেলেছে বলুন?
দেখুন, রুজি-রুটির কথা ঝেড়ে কেশে করা ভালো। একদিনে চলছে আর্থিক বৃদ্ধির ঢাক পেটান, অন্যদিকে বাস্তব বলছে অন্য কথা। সংবাদমাধ্যম মারফৎ প্রকাশিত তথ্য বলছে, ভারতের চাকরির হাল বেহাল। লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। শহরতলিতে চাকরি বেড়েছে, কিন্তু তাতে মাইনে? যৎসামান্য। তাও আবার কন্সট্রাকশন সেক্টরে। ভারতের ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে ৬.৯ কোটি চাকরি হয়েছে। কিন্তু এর চেয়ে ঢের বেশি মানুষ কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
পড়াশুনো করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে, এসব এখন অতীত জানেন তো। ভারতের ক্ষেত্রে বিষয়টা হচ্ছে, ওরা যত বেশি পড়ে, ততই চাকরি কমে। দেখুন না। আয়রনিক্যালি ওয়াল স্ট্রিট জারনালের রিপরতেই তাঁর প্রমাণ পাবেন। ২৫ বছরের কমবয়সী এমন ১১ শতাংশ যুবক রয়েছে যারা শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েট কিন্তু চাকরি নেই। অথচ, ১৪ শতাংশ এমন যুবক রয়েছেন যারা প্রাইমারি লেভেলে শিক্ষিত এবং মিনিমাম রোজগার রয়েছে। তবে, উইথ ডিউ রেস্পেক্ট টু অল প্রফেশন, শিক্ষা একটা বেসিক নিড। কারণ শিক্ষা আনে চেতনা।
সরকারী মুখপাত্ররা আবার বলছেন, সরকার দেশের সব সমস্যার সমাধান করতে পারে না। হ্যাঁ হয়তো সমস্যা খুঁজে বের করতে পারেন। কিন্তু সবসমস্যার সমাধান করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। সুতরাং সরকার হাত তুলে নিচ্ছেন। অতয়েব নিজের হকের কথা নিজেকেই বলতে হবে। কাজেই প্রচারে গা না ভাসিয়ে বরং প্রশ্ন করুন। ভোটের আগে দল নির্বিশেষে, তৃণমূল, বিজেপি, সিপিআইএম বা কংগ্রেস- যেই দলের প্রতিনিধিই আপনার দরজায় আসুন না কেন, অন্তত সুস্থ আগামীর জন্য তাদেরকে বলুন আর কোন প্রতিশ্রুতি নয়, চাকরি এবং শিক্ষা নিয়ে বিস্তারিত কি প্ল্যান রয়েছে- সেটা ঝেড়ে কাশুন
দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।