Trending
ভোটের বিনিময়ে দিদি নং ওয়ানে যাওয়ার সুযোগ। কাজের বিনিময়ে ভাতা। আর শিল্পের বিনিময়ে…
প্রচার দেখে ভিরমি খাওয়ার কিছু নেই। এও এক ধরণের শিল্প। নির্বাচনের আগে হুগলীতে একেবারে অন্যধরণের প্রচার চলছে। যেখানে কোন কর্মসংস্থান তৈরি করার প্রতিশ্রুতি না থাকলেও রয়েছে গালভরা কিছু কথা।
হুগলী, শিল্পের জেলা। হুগলী নদীর দু-ধার ভরে একধিন সত্যি সত্যিই শিল্পের ধোঁয়া উঠেছিল। পাট শিল্প, নয় শিল্প, বস্ত্র শিল্প- লিস্ট ধরে বলতে বসলে সময়ে কুলবে না। এমনকি বহুচর্চিত সিঙ্গুর। সেই সিঙ্গুরও এই হুগলীতেই। যেখানে সত্যিই একদিন শিল্পকারখানা গড়ে উঠতে পারত। কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারত। কিন্তু আজ মৃত্যু মহল্লা হুগলী শিল্পাঞ্চল।
২০১৪ সাল থেকে বন্ধ হিন্দমোটর কারখানা। যে মোটরগাড়ি কারখানায় একটা সময় সোনা ফলত, আজ সেখানেই খাঁ খাঁ করছে চারপাশ। অন্তত চারশো মানুষ এখনও শ্রমিক আবাসনে বাস করছেন। আলো, জল কিছুই নেই তাদের। তবু ঠাঁই নাড়া হতে পারছেন না মানুষগুলো। কাজ নেই। রোজগার নেই। এত এত শিল্প সম্মেলন হয়, কাওকে ডেকে এই কারখানা দেখানো যায় না? রাজ্য সরকারের কিছুই কী করনীয় নেই?
কেউ আত্মঘাতী হয়েছেন। কেউ দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে যাচ্ছেন। তা যে শিল্পাঞ্চলে আজ শ্মশানের মতো অবস্থা, সেখানে কীসের কালো ধোঁয়া দেখলেন অভিনেত্রী? শিল্পের!
হুগলীর মত সম্ভাবনাময় জেলায় মুখোমুখি দুই অভিনেত্রী। লকেট ভার্সেস রচনা। যেখানে একজন অভিনয় ছেড়ে কোমর বেঁধে রাজনীতিতে নেমেছেন। অন্যজনের বিন্দুমাত্র রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাই নেই। বিগত নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে হুগলীর মানুষের ভোট পেতে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একজন ব্যাক্তিত্ব মানে রচনা ব্যানার্জি-কে টিকিট দিল শাসক দল। এটা কী তাদের কোন স্ট্র্যাটেজিক মুভ, নাকি মহিলা ভোটব্যাঙ্ক সুনিশ্চিত করার নতুন চাল।
যিনি নির্বাচনের প্রচারে এসে কোন এক পার্টিকুলার শো-এর প্রচার চালান যেটা কিনা কেবল মহিলাকেন্দ্রিক। যিনি মৃতপ্রায় হুগলী শিল্পাঞ্চলেও কালো ধোঁয়া দেখতে পান। যার কাছে রাজনৈতিক কোন প্রশ্ন করলে ‘যার যার ব্যাক্তিগত মতামত’ বলে পাশ কাটিয়ে যান- তিনি নির্বাচনে জিতলে কতটা মানুষের হয়ে কাজ করবেন? সেই প্রশ্ন কিন্তু থাকছেই।
কখনও ‘ধোঁয়াই ধোঁয়া’-কখনও সিঙ্গুরের দই- আপাতত ইউনিক প্রচারের স্টাইলে চর্চায় রচনা ব্যানার্জি। আর তার মন্তব্যের জেরে আর কিছু হোক বা না হোক- হুগলী শিল্পাঞ্চলটুকু নিয়ে আবারও হাজার লেখালিখি বা হেডলাইন তৈরি হয়েছে। এখন এই দৌলতে এবং রাজ্য সরকারের শুভ-উদ্যোগে হুগলী নদীর দুই ধারে সত্যিই ধোঁয়াই ধোঁয়া হয় কী না বা কর্মসংস্থান তৈরি হয় কি না- সেটাই দেখার।