Trending
বিজেপি-র স্বস্তি। তৃণমূলের অস্বস্তি। নির্বাচনের দোরগোড়ায় মহামান্য কোলকাতা হাইকোর্টের রায়ে আরও খানিকটা অস্বস্তিতে শাসক দল। একসঙ্গে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল। অথচ নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় সন্দেহভাজন মাত্র ৫ হাজার জন। তাহলে বাকিদের চাকরি কেন বাতিল করা হল? বিচারব্যবস্থা কি তাহলে সত্যিই একপেশে রায় দিতে শুরু করেছে? এবার বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে রাজ্য।
গত সপ্তাহের শেষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, এই সপ্তাহের শুরুতেই নাকি বোমা ফাটতে চলেছে বঙ্গে। যার ফলে পিসি-ভাইপো একইসঙ্গে ফ্যাসাদে পড়তে পারেন। তাহলে সেই ইঙ্গিতই কি মিলল আজকের কোলকাতা হাইকোর্টের রায়ে? যদি তাই হয়, তাহলে রায়ের আগেই কী করে এমন ইঙ্গিত দিতে পারেন তিনি? আর যদি না হয়, তাহলে আর কী অপেক্ষা করছে বঙ্গ রাজনীতির জন্য?
কোর্ট জানিয়েছে, প্রয়োজনে আবারও স্ক্রুটিনি হবে। ২৫, ৭৫৩ জনের ওএমআর শিট পুনরায় রিভিউ করা হবে। একইসঙ্গে সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে। পাশাপাশি যারা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের সমস্ত বেতন ১২ % সুদ সমেত ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তাও আবার ৪ সপ্তাহের মধ্যে। এই বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। যথাযথ তদন্তের নির্দেশ মিলেছে কোর্টের তরফে। আর হাইকোর্টের এই রায়েই চাপে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল। নির্বাচনী আবহে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত আবার তৃণমূল সুপ্রিমোর গলার কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায়।
বিরোধীরা অবশ্য বলছেন যে, এই বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার নাকি অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কোন প্ল্যানিং বা স্ট্র্যাটেজিই ধোপে টেকেনি। অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে যেভাবে দুর্নীতির সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের নাম জড়িয়েছে, তারপর আর কোন সাফাই- ই ধোপে টেকার কথা নয়। কয়লা কেলেঙ্কারি, টেট দুর্নীতি, চাকরিতে বেআইনি নিয়োগ-এসব কিছুর পরেও রোয়াবে চলছে কাদা ছোড়াছুঁড়ির রাজনীতি।
রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই নিয়োগ দুর্নীতি। আর ওদিকে দেখুন, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা সঠিক বিচারের অপেক্ষায়। দিনের পর দিন তারা রাস্তায় কাটাচ্ছেন। টেট কোয়ালিফাই করেও নিয়োগ নেই তাদের। গান্ধী মূর্তির তলদেশে তাদের ধর্না অব্যাহত, হাজারেরও বেশি দিন ধরে। আসলে ঐ যে কথায় বলে, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।
এবার প্রশ্ন, কিন্তু ৫ হাজার বেআইনি নিয়োগের ফল বাকীরা কেন পাবেন? এটা কি লঘু পাপে গুরুদন্ড নয়? আর এই বিষয়েই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে এসএসসি। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই মামলার রায় দিতে সুপ্রিম কোর্টের সময় লাগবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখানেই একটা বিষয় লক্ষ্য করার মতো।
একটা রাজ্য, যেখানে দুর্নীতির ভয়ে রাজ্যে সরকারের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। অন্ন-সংস্থানের জন্য রাজ্য ছাড়ছে তারা। তবু হুঁশ নেই কারও? এবারেও না হলে, আর কবে? আজ ২৫,৭৫৩ হাজার শিক্ষকের চাকরি গেল। কাল হয়তো গান্ধী-মূর্তির তলদেশে থাকা হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর কোন সুরাহা হবে। আচ্ছা, আপাদের কি মনে হয়? হাইকোর্টের এই রায়ের পর রাজ্য সরকারী পরীক্ষায়, প্রার্থীরা কতটা আস্থা রাখতে পারবেন? বা আদৌ আস্থা রাখতে পারবেন তো? প্রশ্ন রইলো আপনাদের কাছে। উত্তর জানান কমেন্টবক্সে। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।