Market
এবার রেলস্টেশনে ঢুকলেই মনে হবে, (চারিদিকে সব wow- মোশাররফ করিম এক্সপ্রেশন)। চলছে অমৃত ভারত প্রকল্পের দ্বিতীয় দফার কাজ। যার মধ্যে রয়েছে বাংলার ২৮ টি স্টেশন। সেই কাজের জন্য ভিত্তিপ্রস্থ স্থাপন করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে আজ আপনাদের জানাব সেরা ১৬ টি স্টেশনের কথা।
নিছকই ভোটের চমক? নাকি সত্যিই ভারতীয় রেলের পরিকাঠামোকে বিশ্বমানের করে তোলা? প্রশ্ন জিইয়ে রেখেই সোমবার অমৃত ভারত প্রকল্পের ভার্চুয়াল উদ্বোধন সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের নজরে বাংলা। প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের মোট ৪৫ টি স্টেশনের ভোল বদলাতে চলেছে। বরাদ্দ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। তা এই স্টেশনগুলো নতুন ভাবে সেজে ওঠার পর কেমন দেখতে হবে? রইল তার বিস্তারিত খবর, বিজনেস প্রাইম নিউজে।
শুরুতেই বলি, ব্যান্ডেল রেলস্টেশনের কথা।
ব্যান্ডেল জংশনঃ পূর্ব রেলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন এই ব্যান্ডেল জংশন রেলস্টেশন। হাওড়া-ব্যান্ডেল, হাওড়া-কাটোয়া, ব্যান্ডেল-নৈহাটি স্টেশনের লোকাল ট্রেন যাতায়াতের প্রধান জাংশন পয়েন্ট এটি। এছাড়াও একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াত করে এই স্টেশনের উপর দিয়ে। তাই এই স্টেশনের রেনোভেশন মাস্ট। পূর্ব রেলের নজরে রয়েছে, এই স্টেশনের মেক-ওভার। এই স্টেশনের উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩০৭ কোটি টাকা।
লিস্টে দ্বিতীয় নাম, বারাসাতের।
বারাসাত স্টেশনঃ ভারতের রাজধানী শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনের উন্নয়নের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় রেলের। শিয়ালদা বনগাঁ লাইনের এই গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশনের উন্নয়নের মিশনে নেমেছে ভারতীয় রেল। অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় থাকা এই স্টেশনের উন্নয়নের জন্য রাখা হয়েছে ২৮.২৩ কোটি টাকা।
বনগাঁ স্টেশনঃ শিয়ালদা ডিভিশনের বনগাঁ স্টেশনকে নতুন রুপে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা ভারতীয় রেলের। সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি একটি এসি ওয়েটিং রুমও পাচ্ছে বনগাঁ স্টেশন। ভারতীয় রেলের তরফে বনগাঁ স্টেশন পেয়েছে ২৯.৫৪ কোটি টাকা।
এবার বলি, বালি স্টেশনের কথা।
বালি স্টেশনঃ কলকাতা এবং শহরতলীর অন্যতম ব্যস্ত স্টেশন এই বালি স্টেশন। অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় যা একেবারে নতুন রুপে আসতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের অমৃত ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে এই স্টেশনের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ২৭.১৬ কোটি টাকা।
চন্দননগর স্টেশনঃ হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনের অন্যতম প্রধান স্টেশন। অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় যার রেনোভেশনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৮.৩৪ কোটি টাকা।
ডানকুনি জাংশন স্টেশনঃ অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় থাকা ডানকুনি জাংশন স্টেশনটি পেয়েছে ১৫.০৬ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, হাওড়া ডিভিশনের অন্তর্গত এই স্টেশনের উপর দিয়ে হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস এবং শিয়ালদা-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের মত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন যাতায়াত করে।
লিস্টে রয়েছে পানগরের নাম।
পানাগড় রেলস্টেশনঃ অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় একেবারে নতুন রূপে সাজতে চলেছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশন। এই প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা।
আসা যাক, ধুলিয়ান গঙ্গা স্টেশনের কথায়।
ধুলিয়ান গঙ্গা স্টেশনঃ অমৃত ভারত প্রকল্পের ছোঁয়ায় সাজতে চলেছে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান গঙ্গা রেলস্টেশন। এটি মালদা ডিভিশনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলস্টেশন। আর এই স্টেশনের আধুনিকীকরণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১২ কোটি টাকা।
খাগড়াঘাট স্টেশনঃ হাওড়া ডিভিশনের আওতায় থাকা মুর্শিদাবাদ জেলার এই স্টেশনটি পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ১০.১৮ কোটি টাকা পেয়েছে।
জঙ্গিপুর রেলস্টেশনঃ অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় একেবারে খোলনলচে বদলাতে চলেছে মালদা ডিভিশনের আরও এক রেলস্টেশনের। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর রেলস্টেশনের ঝাঁ-চকচকে মেক-ওভারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
দমদম-জংশনঃ শিয়ালদা-বনগাঁ, শিয়ালদা-কৃষ্ণনগর কিংবা ধরুন, শিয়ালদা-ডানকুনি লোকাল অথবা দূর-দূরান্তের এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এই দমদম জংশন স্টেশন। আর এই স্টেশনকে সাজিয়ে তোলা যে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা ভালমতই জানে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। বরাদ্দ করা হয়েছে, ৯.৯৮ কোটি টাকা।
সাঁইথিয়া স্টেশনঃ অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে হাওড়া ডিভিশনের সাঁইথিয়া স্টেশনকেও। ভারতীয় রেল জানিয়েছে, এই স্টেশনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৭.৩ কোটি টাকা মত।
আসা যাক, গেদে স্টেশনের কথায়।
গেদে স্টেশনঃ শিয়ালদা ডিভিশনের আরও এক গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন গেদে রেলস্টেশন। অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় এই স্টেশনকেও সাজিয়ে তোলা হবে। বরাদ্দ করা হয়েছে ১৮.০৫ কোটি টাকা।
নৈহাটি স্টেশনঃ যার উন্নয়ন প্রকল্পের বরাত ৭.২৫ কোটি টাকা। শিয়ালদা মেইন লাইনের জাংশন পয়েন্ট এই স্টেশনটিকে ঝাঁ-চকচক করে তোলার কাজ আর কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে।
সাঁতরাগাছি স্টেশনঃ সাঁতরাগাছি স্টেশনটি হবে ৫ তলা। চোখ ধাঁধানো মেক-অভারে ঢাকবে এই স্টেশন। সাথে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গেও কানেক্ট করা হবে। এই পরিকল্পনা বিগত ৬ বছর ধরেই ছিল। তবে, নানান কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। এবার অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় এই স্টেশনটিকে নতুনভাবে গড়ে তলা হবে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।
শালিমার স্টেশনঃ সাঁতরাগাছি স্টেশনের মতই বিশ্বমানের পরিকাঠামোতে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল শালিমার স্টেশনকেও। বাড়ছে প্ল্যাটফর্ম সংখ্যা।
পশ্চিমবঙ্গের স্টেশনগুলকে ঢেলে সাজাতে দক্ষিন পূর্ব রেল এবছর ১,৭৯১ কোটি টাকা দিয়েছে। এবার কেন্দ্রের বরাদ্দ মেলায় এবছরের মধ্যে সাঁতরাগাছি এবং শালিমার স্টেশনের কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়েছে, সাঁতরাগাছি স্তেশনে প্ল্যাটফর্মের সঙ্খ্যা ৬ থেকে বেরে হবে ৮ টি। অন্যদিকে শালিমার স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম সংখ্যা ৩ থেকে বেরে হবে ৫। তৈরি হবে আন্ডারপাস। বসবে লিফট। এবং থাকবে এসক্যালেটর। ভবিষ্যতে শালিমার স্টেশন দিয়ে বন্দে ভারত চালানর পরিকল্পনা রয়েছে রেলের। আর তাই এই যাগযজ্ঞ।
আজকের প্রতিবেদনটি কেমন লাগল? জানান কমেন্টবক্সে। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হক অর্থবহ।