Trending
কে কত টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছেন? কবে কত টাকার বন্ড ভাঙ্গানো হয়েছে? কোন পার্টির নামে কত টাকা জমা পড়েছে? সেই সব নথি স্টেট ব্যাঙ্কের মুম্বই শাখায় মুখ বন্ধ খামে রাখা রয়েছে। তারপরেও তথ্য ডিসক্লোজ করতে কেন গড়িমসি করছে স্টেট ব্যাঙ্ক?
২০১৭-১৮ সাল নাগাদ নির্বাচনী বন্ড বিক্রি এবং ভাঙ্গানোর জন্য বিশেষ টেকনোলজি ইন্ট্রোডিউস করেছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। এরপর ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিক্রি হওয়া ইলেক্টোরাল বন্ডের তথ্য অর্থাৎ মাত্র ২২,২১৭ টি বন্ডের তথ্য প্রকাশ্যে আনতে তো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তাহলে, সেই তথ্য সামনে আনা হচ্ছে না কেন?
মোদী জামানায় রাজনৈতিক চাঁদার জন্য ইলেক্টোরাল বন্ড চালু করা হয়। যার এক এবং একমাত্র অধিকার পায় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। খরচ কত হয়? ৯০ লক্ষ টাকা। এখন নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোন রাজনৈতিক দল কত টাকা পেয়েছে, সেটা কেন খোলসা করতে চাইছে না স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া?
কোন শিল্পপতি বা কোন ব্যাক্তি কোন রাজনৈতিক দলকে কত টাকা দিয়েছেন তার হিসেব রাখতে ইলেক্টোরাল বন্ড চালু করেন মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্টেট ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেয় যে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এবং ডেটা প্রকাশ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে তো স্টেট ব্যাঙ্ক এবং মোদী সরকারের বলতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দু’দিন আগে স্টেট ব্যাঙ্ক সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছে, জুন পর্যন্ত সময় প্রয়োজন। লোকসভা ভোটের আগে কোন দলের থেকে কে কত টাকা চাঁদা পেয়েছে, সেই তথ্য প্রকাশে রাজি নয় স্টেট ব্যাঙ্ক। সোজা কথায়, নির্বাচনের আগে কোনভাবেই তথ্য ফাঁস নয়। স্টেট ব্যাঙ্কের চাবিকাঠি তাহলে কী সত্যি সত্যিই এখন মোদীর হাতে?
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ইলেক্টোরাল বন্ড সংক্রান্ত তথ্য সকলের সামনে আসাটা জরুরী। কারণ, মানুষ কোন নেতাকে ভোট দিচ্ছেন, এবং তার পিছনে কোন ব্যাক্তি কত টাকা খরচ করেছেন, খরচের ফলে সেই ব্যাক্তি বা শিল্পপতি কি ধরণের সুবিধা পেয়েছেন- সেই সমস্ত হিসেব জানার অধিকার জনগনের রয়েছে এবং সেটা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে। আরটিআই অ্যাক্ট তো অন্তত সেই আইনের কথাই জানাচ্ছে। কাজেই নিয়ম অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসবিআই-এর কাছে থাকা ইলেক্টোরাল বন্ডের যাবতীয় ডেটা জনগনের সামনে চলে আসার কথা ছিল। কিন্তু স্টেট ব্যাঙ্ক ১৩৬ দিন সময় চেয়ে নিয়েছে।
নির্বাচনী প্রচার যেভাবে চলছে, তাতে তো প্রচারের তৎপরতায় কোন অভাব নেই। একদিনও অপেক্ষা করা যাচ্ছে না। আর নির্বাচনের আগে পছন্দের দলের ইলেক্টোরাল বন্ডের হিসেব এবং সুযোগ সুবিধার তথ্য জানতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে ১৩৬ দিন? কেন? কেন আবার কী? জলের মতো সহজ হিসেব এটা। ১৩৬ দিন পর হিসেব আসবে। আর হিসেব বুঝে আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটাই অপশন। ২০২৯-এর নির্বাচন। ততদিনে এসব ইলেক্টোরাল বন্ডের বিষয় নিয়ে আপনার মাথাব্যথাও থাকবে না। আপনি আর কোন প্রশ্নও করবেন না। সবটা স্টেবল হয়ে যাবে।
যথাযথ টেকনোলজি রয়েছে, যথেষ্ট ডেটা রয়েছে এসবিআই-এর দখলে, তারপরেও কীসের বাধা? ২২,২১৭ টা বন্ডের ডেটা প্রকাশ করতে ১৩৬ দিন সময় কেন দেওয়া হবে এসবিআই-কে? কেন এতদিন অপেক্ষা করবে সাধারণ মানুষ? সর্বোপরি এটা যখন আইন বিরুদ্ধ? এর পিছনে নাকি বিজেপির কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন বিরোধীদের একাংশ। স্টেট ব্যাঙ্ককে ঢাল করে নির্বাচনী প্রচারের আগে তথ্য লুকতে চাইছে মোদীর দল। তাই কোনরকম অস্বস্তি এড়াতে এখন সময় কিনছেন তারা, দাবি বিরোধীদের।
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৪৪,৪৩৪ টি ডেটা এন্ট্রি করা সম্ভব। সেখানে ২২,২১৭ টি ডেটা সামনে আনতে ১৩৬ দিন কেন চাওয়া হচ্ছে? ডিজিটাল যুগে তো মাউসের ক্লিকেই সবটা সামনে আনা যায়, এবং সেটা সামান্য সময়ের মধ্যে, তাহলে অযথা সময় বাড়ানো কেন? বিরোধীদের প্রশ্নে আপাতত জর্জরিত বিজেপি সরকার এবং এসবিআই। এবিষয়ে আপনাদের মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।