Trending
নির্বাচনী বন্ড হিসেবে ৫৪২ কোটি টাকা! লটারি সংস্থার বিপুল অনুদানেই তৃণমূলের লক্ষ্মীলাভ। এ যে একেবারে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! অনেকটা ঐ ভানু পেল লটারির মতো। তবে ওটা যদিও স্বপ্ন ছিল। আর এটা একেবারে বাস্তব। টাকার অঙ্ক জানলে আপনার অবশ্য স্বপ্ন মনে হতে পারে। হয়তো ভিমরিও খেতে পারেন।
এতদিন জানা ছিল না যে কার কাছ থেকে কোন দল কত টাকা পেয়েছে। শীর্ষ আদালতের ধমকে এসবিআই সমস্ত তথ্য প্রকাশ করেছে। আর তাতেই কেঁচো খুঁড়তে একেবারে কেউটে হাজির। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে নির্বাচনী বন্ডের গিফট হ্যাম্পারে সাজিয়ে দিয়েছে লটারি গেম সংস্থা। গরম গরম ৫৪২ কোটি টাকা। নির্বাচনী বন্ড হিসেবে তৃণমূলকে সর্বাধিক এই এত অঙ্কের টাকা দিয়েছে স্যান্টিয়াগো মার্টিনের সংস্থা ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস। জানা গিয়েছে ঐ লটারি গেমিং সংস্থা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ চাঁদা দিয়েছে তৃণমূলকেই। সংস্থার চাঁদার মোট ৪০ শতাংশ এসেছে তৃণমূলের ভাঁড়ারে। বাংলায় যেই সংস্থার ডিয়ার লটারি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
যা নিয়ে বিরোধীদের তীব্র আক্রমনের স্বীকার বাংলার শাসক দল। প্রসঙ্গত, এই একই সংস্থা ডিএমকে-কে ৫০৩ কোটি, বিজেপি-কে ১০০ কোটি এবং কংগ্রেসকে ৫০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে।
বাইটঃ শুভেন্দু অধিকারী
মোদী সরকার নির্বাচন বাবদ যে বন্ডের নিয়ম চ্চালু করেছিলেন সেটা তাকে ব্যাকফায়ার করেছে, সেটা সকলেই জানেন। কারণ সবচেয়ে বেশি চাঁদা তার দলই পেয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন ইলেক্টরাল বন্ড সংক্রান্ত এক খসরা প্রকাশ করেছে। আর সেই খেরোর খাতাতেই রয়েছে এই হরির লুঠের হিসেব। তথ্য বলছে, বিগত চার বছরে নির্বাচনী বন্ড বাবদ সবচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছে বিজেপি। অঙ্কটা, ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা। আর এই লিস্টে ঠিক পরের নামটাই হচ্ছে তৃণমূলের। ১ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা এসেছে তার ফান্ডে। কংগ্রেসের থেকেও বেশি অঙ্কের অনুদান এসেছে তৃণমূলের নামে।
ভিওঃ এখানেই শেষ নয়। আরও চমক রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তৃণমূলের ভাঁড়ারে আরও কত এসেছে? তা একেবারে পরিষ্কার। স্টেট ব্যাঙ্কের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কোলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার গ্রুপ তৃণমূলকে দিয়েছে ৪৫৯ কোটি টাকা। ধারীওয়াল ইনফাস্ট্রাকচার লিমিটেড দিয়েছে ৯০ কোটি টাকা। কেভেন্টার দিয়েছে ৬৬ কোটি টাকা। এমকেজে এন্টাপ্রাইজেস দিয়েছে ৪৫.৯০ কোটি টাকা। অ্যাভিস ট্রেডিং দিয়েছে ৪৫.৫ কোটি টাকা। আইএফবি অ্যাগ্রো দিয়েছে ৪২ কোটি টাকা। চেন্নাই গ্রিন হাউজ এবং পিসিবিএল লিমিটেড প্রত্যেকে ৪০ কোটি টাকা করে দিয়েছে। প্রারম্ভ সিকিউরিটিজ দিয়েছে ৩৮.৭৫ কোটি টাকা। এবং ক্রিসেন্ট পাওয়ার লিমিটেড দিয়েছে ৩৩ কোটি টাকা।
প্লেটঃ তৃণমূলের ভাঁড়ারে কত এল?
সঞ্জীব গোয়েঙ্কার গ্রুপ ৪৫৯ কোটি টাকা
ধারীওয়াল ইনফাস্ট্রাকচার লিমিটেড ৯০ কোটি টাকা
কেভেন্টার ৬৬ কোটি টাকা
এমকেজে এন্টাপ্রাইজেস ৪৫.৯০ কোটি টাকা
অ্যাভিস ট্রেডিং ৪৫.৫ কোটি টাকা
আইএফবি অ্যাগ্রো ৪২ কোটি টাকা
চেন্নাই গ্রিন হাউজ ৪০ কোটি টাকা
পিসিবিএল লিমিটেড ৪০ কোটি টাকা
প্রারম্ভ সিকিউরিটিজ ৩৮.৭৫ কোটি টাকা
ক্রিসেন্ট পাওয়ার লিমিটেড ৩৩ কোটি টাকা
ইলেক্টরাল বন্ডের হিসেব সামনে চলে আসায় এখন কে কত জলে সেটা সকলের সামনে হাজির। অনুদানের নামে আর্থিক কেলেঙ্কারি, সাধারণ মানুষের টাকায় পলিটিক্যাল ফান্ডিং, ব্যবসার নামে লটারি কিং কোম্পানির আর্থিক নয়ছয়, তাতে শাসক দলের শাট, নির্বাচনের আগে তথাকথিত জনদরদীদের পর্দাফাঁস- স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বাড়াচ্ছে সকলের মধ্যে।
দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।