Story
ঘরের এক কোণে এক টুকরো সবুজের ছোঁয়া, ঘরের aestheticity কে যেন দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। আজকের দিনে এটাই তো ট্রেন্ড। আর এই ট্রেন্ডের কথা মাথায় রেখেই আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম বলাগড়ে। গিয়ে তো চক্ষু চড়ক গাছ। শুধু ইন্ডোর প্লান্ট নয় সেখানে রয়েছে নানান জাতের, নানান বর্ণের ফুল, ফল, অর্কিড, বনসাই, ক্যাকটাসের সমারোহ। পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত এক জায়গায় এত বড় নার্সারি? হ্যাঁ ঠিক তাই।
এটাই নাকি বাংলার সবচেয়ে বড়ো নার্সারি এলাকা। প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের রুজি-রুটির ঠিকানা। শুরুর দিকে এই এলাকায় উৎপাদিত চারা ব্লক ও জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন এই চারা পৌঁছে যাচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে।
একটা সময় ছিল যখন প্রথাগতভাবেই চাষবাস করে কোনোরকমে সংসার চালাতেন এখানকার মানুষ। কিন্তু তাতে অভাব তো মিটছিলই না উল্টে বেড়ে যাচ্ছিল। আর যখন পিঠ একেবারে দেওয়ালে ঠেকে গেল তখন ঘুরে দাঁড়িয়ে বিকল্প হিসেবে এই নার্সারি ব্যবসাকে বেছে নিলেন তারা। আর যথেষ্ট লাভবানও হলেন। আসলে যদি সদিচ্ছা থাকে, যদি ঠিকমত শ্রম দেওয়া যায় তাহলে বছরের শেষে সবকিছু সামলাবার পরেও কিন্তু ১ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করা যায় এই ব্যবসা থেকে। লাভের অঙ্কটা কিন্তু নেহাত মন্দ না। তবে একটা ব্যাপার নিয়ে এই নার্সারি ব্যবসায়ীরা ভীষণরকম চিন্তিত।
শুধু নার্সারি শিল্পী এবং ব্যবসায়ীরাই নয়। পরোক্ষভাবেও বহু মানুষের রুজি রুটি নির্ভর করে এই ব্যবসার ওপর। এক কথায় বলা যায় এলাকার হাজার হাজার মানুষ বেঁচে আছে এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরে।
বর্তমান ট্রেন্ড এবং এই ব্যবসার পজিটিভ দিকগুলোর কথা মাথায় রেখে বহু মানুষ এই ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন। শুধু প্রয়োজন একটু সরকারি সহায়তা আর সরকারি নিয়ম কানুনের একটু শিথিলতা। সরকার যদি এই সব মানুষগুলোর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, যদি সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া যায় সরকারের তরফে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই ব্যবসা যে ফুলে ফেঁপে উঠবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সুব্রত সরকার
নদীয়া