Daily
মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু-মুসলমান
দেশে আজ নজরুল বাতাস
রাম মন্দির শেষের পথে। এবার মসজিদ তৈরির আশ্বাস
রাম মন্দির উদ্বোধনে আসবেন মোদী, আর মসজিদ শিলান্যাসে- সেখানেও মোদী?
নামাজ পড়বেন একসঙ্গে ৯ হাজার মানুষ
এটাই কি হতে চলেছে বৃহত্তম মসজিদ?
আমরা সাধারণত কোন ধর্মীয় প্রতিবেদন করি না। তবে আজকের প্রতিবেদনে একটা ইন্টারেস্টিং বিষয় আমরা লক্ষ্য করছি। সেটা শুধু দেশের নয়, বিদেশের জন্যও মোদী একটা সদর্থক বার্তা দিতে পারেন। কিরকম- সেটাই তো বলব আজকের প্রতিবেদনে।
মোদী মুসলিমবিদ্বেষী- এই কথাটা দেশের বিরোধী পক্ষ এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ মনে করেন। আর ধ্রুব সত্য মনে করে সকাল-বিকেল জপ করে পাকিস্তান। কিন্তু মোদী জমানায় ভারতের সঙ্গে আরব দেশের সম্পর্ক তো একেবারেই খারাপ নয়। বরং গোটা বিশ্ব দেখেছে কিভাবে ভারত এবং ইউএই- দুটি দেশ তেল বাদ দিয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। সম্প্রতি প্যালেস্তাইনে যে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেখানেও মোদীর উপর একটা অ্যান্টি মুসলিম ইমেজ তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। তুখোড় কূটনীতিকে আশ্রয় করে ঐ ঢেউ উতরনো সম্ভব হয়েছে। দেশের মধ্যে মুসলিম সমাজ যে মোদী বিরোধী ইমেজ ধরে রেখেছে সেটাও বলা যায় না। কারণ একটা কথা খুব শোনা যাচ্ছে যে অযোধ্যায় যে মসজিদ তৈরি হবে, তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন নাকি প্রধানমন্ত্রী মোদী। আর মোদীকে আহ্বান জানাচ্ছেন ভারতীয় মুসলিম লিগের সভাপতি মহম্মদ ইসমাইল আনসারি। কিন্তু কোথায় হবে এই মসজিদের শিলান্যাস? আর এটা কিভাবে ২০২৪ এর নির্বাচনের আগে তুরুপের তাস হিসেবে ধরা দেবে মোদীর কাছে?
এই উত্তর দেবার আগে রাম মন্দির নিয়ে দু’এক ঝলক। অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরি হবে, আর সেটা ভারত সরকারের এক হিস্টরিকাল স্টেপ হতে চলেছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিজেপি নেতৃত্ব বলছে, রাম মন্দির এমনভাবেই তৈরি করা হচ্ছে যে গোটা বিশ্বে নাকি এখান থেকেই হিন্দু গর্জন শুনতে পাওয়া যাবে। কিন্তু সামনে যে নির্বাচন। তারপর মুসলিম দেশ এবং মুসলিম ধনকুবেরদের সঙ্গে ব্যবসা আনার জন্য এতো দিনপাত। মাঠে কি আর মারা যেতে পারে? অতএব, মন্দিরের পাশাপাশি মসজিদেও নজর রাখছেন মোদী। রাম মন্দির তৈরিতে খরচ কত হচ্ছে? যেখানে মূল্যবৃদ্ধি আকাশছোঁয়া, সাধারণ মানুষের হাতে খালি নেই নেই অবস্থা সেখানে রাম মন্দির তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কেন রাম মন্দির তৈরি করা হচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজতে যাব না। বরং একটু উল্টো সুরেই কথা বলব। শুধু মন্দিরের শিলান্যাস করে কি আর ভোটযুদ্ধে জেতা সম্ভব? ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১৯.৭ কোটি। সুতরাং তাঁদের বাদ দিয়ে আর কী করে নির্বাচন যুদ্ধে জয়লাভ পসিবল? তাই মন্দিরের পাশাপাশি মসজিদের শিলান্যাসের প্রয়োজন রয়েছে। আর সেই সুযোগ করে দিয়েছে খোদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের একাংশ।
আগামী ২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের দ্বারোদঘাটন করতে চলেছেন মোদী। আর ঐ দিনেই মসজিদের শিলান্যাস করার অনুরোধ গিয়েছে মুসলিম পক্ষের থেকে। অযোধ্যার ধন্নিপুরে তৈরি করা হবে মসজিদ। রাম মন্দিরের থেকে দূরত্ব মাত্র ২০ কিমি। এই মসজিদ কেমন হবে? জানা যাচ্ছে, মসজিদের নির্মাণ এমনভাবে হবে যে সেটা গোটা পৃথিবীতে তাক লাগিয়ে দেবে। অনেকেই বলছেন যে তাজমহলের মতন নাকি এই মসজিদ বিশ্বখ্যাত হবে। সেই মসজিদের ব্লু প্রিন্ট প্রকাশ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, একসঙ্গে ৯ হাজার মানুষ নমাজ পড়তে পারবেন এখানে। তাহলে কি এটাই হতে চলেছে দেশের বৃহত্তম মসজিদ?
বুঝতেই পারছেন, মোদী যদি এই মসজিদের শিলান্যাস করেন তাহলে সেটা ভোটব্যাঙ্কে ভালোরকম প্রভাব ফেলবে। আর ইসলাম দেশগুলোতে মোদী হাওয়া নতুন করে বইতে শুরু করবে। ফলে বিদেশনীতিতে ভারত সরকারের স্ট্যান্ড যেমন শক্তপোক্ত হবে, তেমনই দেশের মাটিতেও। আজকের দিনে, পুরোটাই হয় রাজনীতির চক্রব্যুহের ভেতরে দাঁড়িয়ে। অতএব, রাম মন্দির এবং মসজিদ একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী যদি শিলান্যাস করেন তাহলে তো সেই নজরুল বার্তাই ছড়াবে- মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। আপনারা কি মনে করেন, মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন আর নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ