Trending
কিন্তু এই লড়াই-এর পর আদৌ কোন সুরাহা কি মিলবে? যারা প্রায় ১ হাজার দিনের ওপর রাস্তায় বসে রয়েছেন, এই চাঁদিফাটা গরম, ঝড় জল বৃষ্টি আজ যাদের গা সওয়া হয়ে গিয়েছে তাঁরা তো আজ কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন। আশার আলো দেখছেন শুধু নয়, বরং এখন তাঁরা অনেকটাই খুশি। খুশি কারণ যোগ্যদের বিচার এখনো হয় নি বটে কিন্তু অযোগ্যদের তো পদ থেকে নামিয়ে দেওয়া গেল। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁদের কাছে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের রায় যেন গরমে খানিক স্বস্তির বৃষ্টি। একইসঙ্গে দিনে দিনে রাজ্যের শাসক দলের প্রতি অনাস্থা যেন বাড়ছে। বাড়ছে কারণ তাঁরা মনে করছেন একে তো ধর্না মঞ্চে বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ একেবারে অন্ধকারে চলে যাবার পথে ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন নি। এখন অযোগ্যদের জন্য সাফাই! ফলে সুড়ঙ্গ শেষে আলোর সন্ধান যেন মিলল। কিন্তু তাতেও কি রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে? কোন চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন মমতা?
একসঙ্গে প্রায় ২৬ হাজারের চাকরি বাতিল- এমন দুর্নীতি যেন সচরাচর চোখে পড়ে না। বিদ্যাসাগর, রামমোহন, রবীন্দ্রনাথের বাংলা। যে বাংলা শিক্ষা, সংস্কৃতির শক্তিপীঠ বললে অত্যুক্তি হবে না, সেই বাংলায় শিক্ষকতার চাকরির দুর্নীতির জাল সময়ের সঙ্গে এতো গভীরে পৌঁছে যাবে যে দিন শেষে শুধু…
বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। সেই কবে লিখেছিলেন কবিগুরু। সেদিনের সেই লাইনের গুরুত্ব আজ সামান্যতম কমেনি। বিচারক এবং বিচারকের বিচার আর সেই বিচার দেখে শাসক দলের অস্বস্তি আজ বেজায় বেড়ে গেছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বলছেন, এই রায়কে তিনি চ্যালেঞ্জ জানালেন। সুপ্রিম কোর্টে যাবেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই রায়কে বেআইনি বলা নিয়েও সমাজের বিভিন্ন স্তরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। তার মধ্যে সুকান্ত মজুমদার তোপ দেগেছেন, হাঁস-মুরগি বিক্রির মত চাকরি বিক্রি করেছে যে দল সেই দলের সুপ্রিমো হয়ে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রী পদ আঁকড়ে তিনি থাকবেন? উঠেছে এই প্রশ্ন। কিছুটা কটাক্ষের ভঙ্গিতে কথা বলেছেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য নিজেও। তিনি বলেছেন, আম আদমির করের টাকায় মমতা দিল্লি যেতেই পারেন, কিন্তু তাই বলে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট রায় দিয়ে যে দুর্নীতির পর্দাটি ফাঁস করে দিয়েছে সেখানে সুপ্রিম কোর্ট কোনরকম হস্তক্ষেপ করবে না। মুশকিল হচ্ছে, কলকাতা হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে তারপর মমতার হুঁশিয়ারি আরও অনেকটা বেড়েছে। কিছুটা কটাক্ষ করেই যেন বিজেপির বিচারালয়ের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। সঙ্গে বলেন তৃণমূল সরকার ১০ লক্ষ চাকরি ইতিমধ্যেই তৈরি করে রেখেছে। তারপর…
এই রায়ের পর অযোগ্যদের পাশাপাশি কিছু যোগ্যদের চাকরিও গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। কারণ তাঁরা মেধার ভিত্তিতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। বেতন পাচ্ছিলেন। আজ হঠাৎ করেই একই বন্ধনীতে ফেলে দেওয়া হল বলে জানা গিয়েছে। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। বিজনেস প্রাইম নিউজের সকল দর্শকদের কাছে একটাই প্রশ্নঃ দিনের শেষে তাহলে কী হবে? এটা অন্য কোন চাকরি নয়। শিক্ষকতার চাকরি। শিক্ষক যারা সমাজ গড়ার কারিগর আজ তাঁদের নিয়োগ নিয়ে এতো এতো দুর্নীতি। এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির মধ্যে বারবার ধাক্কা খাচ্ছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। আরও কঠিন হচ্ছে প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। এই প্রশ্নটা শুধু নির্বাচন কেন্দ্রিক নয়। এই প্রশ্নটা একেবারে সমাজের সর্বস্তরে। শিক্ষা কালিমালিপ্ত হলে সেই রাজ্যের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে তার বড়সড় প্রভাব পড়ে। ফলে রাজনীতির ময়দান উত্তপ্ত হচ্ছে, সেটা আলাদা ব্যপার। কিন্তু রাজ্যের শিক্ষার ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? আস্থা কি রয়েছে রাজ্য সরকারের ওপর? মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন। আর সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ