Daily
প্রচণ্ডর দেশে এখন প্রচণ্ড মূল্যবৃদ্ধি। চিনের দুর্বুদ্ধিকে হাতে-কলমে কাজে লাগিয়েছে নেপাল। তারপরেই কার্যত ধরাশায়ী হতে চলেছে নেপালের অর্থনীতি। জিনিসপত্রের এমন দাম বাড়তে শুরু করেছে যে নেপালের মানুষ অর্থনৈতিক সংকটে। আর তাই কি বাধ্য হয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড ফোন করলেন মোদীকে। সুরাহা খোঁজার চেষ্টা করছেন তাঁরা? কিন্তু ভারতের সঙ্গে কোনরকম পরামর্শ না করে চিনের কথায় কেন ময়ূরপুচ্ছ দোলাল নেপাল? এখন অবস্থা বেগতিক দেখেই কি প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে সাহায্য চাইছেন তিনি?
নেপালের বড় ভরসায় দেশ ভারত। একইভাবে ভুটানের বড় ভরসা জোগায় ভারত। নেপাল ভারতের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে দুই দেশের বন্ধুত্ব কোনদিনই যেন চিড় ধরার নয়। কিন্তু জিংপিং-এর দৃষ্টি সর্বত্র। ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক এমন থাকলে চিনের কাছে সেটা যে খুব সন্তোষজনক হবে না- স্বাভাবিক। এমনই একটা সময়ে হঠাৎ উলটপুরান। আর সেটা ভারতের সঙ্গে কিছুটা বিশ্বাসঘাতকতারই সামিল। চিনের কথায় নেচে উঠেছে নেপাল। প্রত্যেকটা জিনিসের শুল্ক বাড়িয়েছে তারা। তারপরেই কার্যত রে রে করে উঠেছেন নেপালের আমজনতা। রান্নার গ্যাস থেকে হেঁসেল চালানোর যাবতীয় খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চরম সংকটে পড়েছেন তাঁরা। মনে করা হচ্ছে, নেপালের যা অবস্থা তাতে আয়ের ৭০ শতাংশই নাকি চলে যাচ্ছে শুধু হেঁশেলের ঠেলা সামলাতে। এই সময়ে দাঁড়িয়ে চিনের সাহায্য? জিংপিং স্বাভাবিকভাবেই নাকি মুখটা ঘুরিয়ে রেখেছেন। এদিকে প্রচণ্ড মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রচণ্ড চাপ বাড়ছে প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড-র ওপর। তারপরেই নাকি নয়া দিল্লিতে ফোন গেল সটান। মোদীর কাছে সাহায্য চাইলেন তিনি।
নেপাল এবং ভারতের সীমান্তবর্তী ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে বহুদিন ধরে। শিলিগুড়ির পর পানিট্যাঙ্কির ব্যবসা সেই সুদিনের কথাই আজ মনে করাচ্ছে। এই পানিট্যাঙ্কিতে যে ব্যবসা হয় সেটা লক্ষ লক্ষ টাকার। এই সীমান্তে মূলত বিক্রেতারা হলেন ভারতীয়। এবং ক্রেতারা হলেন নেপালি। আগে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কেনাকাটা করলে ভারত থেকে নেপালে পণ্য নিয়ে যাওয়া কোন ঝামেলার হত না। কিন্তু নেপাল সরকার সিদ্ধান্ত নিল, ভারত থেকে ১০০ টাকার পণ্য ক্রয় করলেই নেপালকে দিতে হবে চড়া শুল্ক। তারপরেই ব্যবসার গতি ভালোরকম গোঁত্তা খেল। প্রায় শুনশান হয়ে পড়ে ব্যবসায়ীদের এলাকা। ধাক্কা খেয়েছে সীমান্ত ব্যবসা বাণিজ্য। এদিকে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাসমতি চাল ছাড়া আর কোন চাল বিদেশে রফতানি করবে না তারা। এই সিদ্ধান্ত নেবার পরেই সংকট যেন আরও তীব্র হয়েছে। নেপালে চালের ক্রাইসিস মারাত্মক হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে ভারতের হাত সরে যাওয়ায় নেপাল সরকারের অবস্থা এখন বেশ চাপে। এদিকে অর্থনীতি ক্রমশ নিচের দিকে নামছে।
তারপরেই কার্যত ঘুম ভেঙেছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডের। তিনি সরাসরি ফোন করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। এদিকে আইএমএফ বা ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড সাফ জানিয়ে দিয়েছে, নেপালকে যদি নিজের অর্থনীতির চাকা মসৃণ রাখতে হয় তাহলে চিন নয় বরং ভারতের সঙ্গেই নেপালের হাঁটা উচিৎ। না-হলে ভবিষ্যৎ যে খুব একটা সুখকর হবে না। চিনের কথায় যদি নেপাল এগোয় তাহলে নেপাল শ্রীলঙ্কা হতে পারে নিকট ভবিষ্যতে। আইএমএফের সতর্কবাণী ভেসে আসতেই নড়েচড়ে বসল প্রচণ্ড সরকার। পিএম মোদীর সঙ্গে কী কথা হল প্রচণ্ডর? সুরাহা কিছু বেরোল নাকি ভারতকে টপকে চিনের ঘাস খেতে গিয়ে ভারতের রোষানলে পড়বে নেপাল? আপাতত সেই উত্তরের অপেক্ষায়। ভারত এবং নেপালের সীমান্তবর্তী ব্যবসা-বাণিজ্যের কী হাল দাঁড়িয়েছে, এই নিয়ে ভবিষ্যতে আরেকটা প্রতিবেদন করার ইচ্ছে রইল।
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ