Academy
অস্থায়ী শিক্ষকদের স্থায়ীকরণের সিদ্ধান্ত বিহারের
লোকসভা ভোটের আগেই মাস্টারস্ট্রোক নিতিশের
৪ লক্ষ চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে স্থায়ী করল নিতিশ সরকার
আর বাংলায় কী হয়? বাংলায় দেদার চাকরি লুঠ হয়, চাকরি চাইলেই জেল, জোটে লাঠিপেটা। বাংলায় চাকরিপ্রার্থীদের বছরের পর বছর কাটে রাস্তায় বসে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিহার পারলে, বাংলা কবে পারবে?
বাংলা আজ যা ভাবে, ভারতবর্ষ একদিন পর তা ভাবে। কোথায় সেসব নীতিকথা? কোথায় সেসব প্রতিশ্রুতি? ২০১৪ থেকে ২০২৪-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আমরা- নিয়োগ কোথায়? প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি আর নিয়োগের নামে দুর্নীতির আখড়া এই রাজ্য। আর ঠিক এখানেই বিহারের কাছে মুখ পুড়ল বাংলার।
গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বা মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে প্রতিদিন প্রায় তিন লক্ষ চাকরিপ্রার্থী জড়ো হয়। বলা ভালো, যোগ্য এবং বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা জড়ো হয়। নিজের যোগ্যতারও প্রমাণ দিতে হয় এই বাংলায়। বিহারে চার লক্ষ অস্থায়ী শিক্ষককে স্থায়ী করল নিতিশ সরকার। আপনারা বলতেই পারেন, লোকসভা ভোটের আগে এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই এখানে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। থাকুক প্রভাব। তাতে অন্তত বিহারে চাকরিপ্রার্থীদের সঠিক সুরাহা তো হল। যোগ্য প্রার্থীরাই চাকরি পেল। এবার আসা যাক বাংলার কথায়। কোথায় চাকরি? কোথায় বিচার? অন্তত রাজনৈতিক প্রভাবের দোহাই দিয়েই চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের সুরাহা করুক সরকার। বিহারের মতো রাজ্যে এই সিদ্ধান্ত নিতে দেরী না হলে বাংলায় কেন হচ্ছে? তোষণনীতিতে ভর করে আর কতদিন এগোবে বাংলা? যোগ্যরা কী এ রাজ্যে ব্রাত্যই থেকে যাবে?
এক বছরের বেশি সময় ধরে যে মানুষগুলো ফুটপাথে বসে আছেন, ধুলো খাচ্ছেন, নিজেদের সিট নিজেদের কাছে ফিরিয়ে নেবেন বলেই লাঠিপেটা খাচ্ছেন, হাজতবাস করছেন- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে কী মেসেজ যাচ্ছে ভেবে দেখেছেন? তাঁরা তো এটাই মনে করছে, পরীক্ষা দিয়ে পড়াশুনো করে টেট পাশ করে ভুল করেছেন। বাংলায় পড়াশুনোর পরিবেশ তলানিতে পৌঁছেছে।
প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের হেডলাইন থাকে স্নাতকে ভর্তির হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে বর্তমান শিক্ষাবর্ষে। সেটা এমনি এমনি? সোশ্যাল মিডিয়া-র দৌলতে এখন গোপন কথা গোপনে থাকে না। আগামীর প্রজন্মের একাংশ তো রীতিমত প্রশ্ন তুলছে, কেন পড়াশুনো করবে তারা? কীসের ভিত্তিতে পড়াশুনোতে আগ্রহ রাখবেন তারা? যে রাজ্যে নিজের অধিকারের জন্য নিজেকে লড়তে হয়, যে রাজ্যে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা বারবার দুর্নীতির কবলে পড়েন, সে রাজ্যের ভবিষ্যৎটা কী?
সরকারপক্ষের দাবি, আইনি জটে আটকে নিয়োগ। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, সেই জট ছাড়বে কবে? ছাড়াবেই বা কে? সরকারেই তো এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু সরকারের কী সেই সদিচ্ছা রয়েছে? যদি সেই সদিচ্ছা থেকে থাকত, তাহলে সরকার কেন অযোগ্যদের বাঁচাতে কোর্টে হলফনামা জমা দিল? এই প্রশ্নগুলো স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।
বিহারের শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে নিয়োগ নিয়ে বহুবার বহু প্রশ্ন উঠেছে এবং এই হাল এখনও বহাল। সেখানে বিহারের মতো রাজ্যে এত বড় ঘোষণা যখন হয়ে গেল, বাংলা সেখানে কেন আটকে এখনও? কবে পথে দেখাবে বাংলা? সেই প্রশ্ন কিন্তু থাকছেই। এ বিষয়ে আপনাদের কী মতামত জানান আমাদের কমেন্টবক্সে। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।