Start-Up Business
মোটা টাকা আয় করতে গেলে ব্যবসা ছাড়া গতি নেই। এদিকে ব্যবসা করতে গেলে প্রয়োজন পড়ে পুঁজির, প্রয়োজন পড়ে আইডিয়ার। কম পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করে বড় প্রফিট মার্জিন করা যায় এমন ব্যবসা কিন্তু অনেক। শুধু জানতে হবে সেই ধরণের বিজনেস আইডিয়া কি কি হতে পারে। তাই আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব এমন ১০ বিজনেস আইডিয়া যা আপনাদের ব্যবসায়িক সাফল্য দিতে পারবে। তাও আবার কম পুঁজি দিয়ে শুরু করলেই হবে।
১। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার SOCIAL MEDIA MANAGER
পলিটিশিয়ান হোক বা সেলিব্রিটি- সাধারণ মানুষের সঙ্গে সবসময় টাচে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু তাঁরা এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে রেগুলার শিডিউলে তাঁদের পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল করা পসিবল হয় না। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া তো সাধারণের কাছে পৌঁছনো এখন সম্ভব নয়। তাই আপনি নিজে তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলের দায়িত্বটা নিয়ে ফেলুন। কি করবেন? তাঁদের যাবতীয় আপডেটস সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ থেকে ছড়াতে পারেন। নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ থেকে যাবতীয়ভাবে সাধারণ মানুষের টাচে থাকার গুরু দায়িত্ব নিয়ে নিন। সোশ্যাল মিডিয়া যদি আপনার অ্যাডিকশন হয়, তাহলে তাকে বিজনেসে কনভার্ট করাটা অসুবিধে হবে না। আয় করবেন মোটা টাকা।
২। USED PRODUCTS BUYING AND SELLING
নতুন প্রোডাক্ট কেনার লোক যেমন রয়েছে, তেমনই পুরনো জিনিস কেনার লোকের অভাব নেই। তাই আপনার দরকার এমন একটা প্ল্যাটফর্ম- যেখান থেকে আপনি সহজেই পুরোনো প্রোডাক্ট বেচাকেনা করতে পারেন। তেমনই একটা প্ল্যাটফর্ম হল ওএলএক্স। বন্ধুরা পুরনো প্রোডাক্ট বেচা-কেনা করেই মোটা টাকা আয় করা সম্ভব।
৩। WEDDING PLANNER
বিয়ের মরশুমে দিনে দিনে এদের চাহিদা বাড়ছে। একটা বিয়ে নিশ্চিন্তে হতে গেলে তার পিছনে প্রপার প্ল্যানিং এর প্রয়োজন পড়ে। আর প্রত্যেকেই চান, নিজেদের বিয়ে যেন এমনভাবে হয় যাতে কোন খুঁত না থাকে। সেই গুরু দায়িত্ব নিয়ে নিন আপনি। যদি আপনার ক্রিয়েটিভিটি ইউজ করে আপনি ওয়েডিং প্ল্যানিং সুন্দরভাবে দাঁড় করাতে পারেন তাহলে ওয়েডিং প্ল্যানার হিসেবে আপনার কদর বাড়বে। আর যত কদর বাড়বে তত দর বাড়বে। বড় অঙ্কের উপার্জন করতে পারবেন ওয়েডিং প্ল্যানার হিসেবে।
৪। YOGA CENTRE
আজকের দিনে সকলেই কমবেশি হেলথ কনশাস। কেউ যান জিমে আর কেউ আসেন য়োগা সেন্টারে। আপনি যদি নিজে যোগব্যায়ামে অ্যাডিক্টেড হন, তাহলে খুলে ফেলতে পারেন আপনার নিজস্ব য়োগা সেন্টার। পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে সকলকেই শেখাতে পারেন যোগ ব্যায়ামের গুরুত্ব। যেহেতু এই পুরো আইডিয়াটা হেলথ রিলেটেড, তাই বিজনেস রান করতে খুব একটা অসুবিধে হবে না। ভালো আয়ের পথ খুলে দিতে পারে একটি য়োগা সেন্টার।
৫। FAST FOOD PARLOUR
একদিকে যখন মানুষ হেলথ কনশাস, তখন অন্যদিকে ফাস্ট ফুড খাবারের পপুলারিটি আকাশছোঁয়া। ইউনিক খাবার, নানান ধরণের খাবার নিয়ে আসুন আপনার পার্লারে। সঙ্গে দাম রাখুন একটু কম। খেয়াল রাখবেন, এই ব্যবসায় কম্পিটিশন রয়েছে ভালোই। কিন্তু দাম কম এদিকে গুণগত মানে যদি আপনার তৈরি ফাস্ট ফুড অন্যদের টেক্কা দিতে পারে তাহলে ভিড় আপনার কাছেই বেশি হবে। প্রথমে অল্প মার্জিন রেখে শুরু করুন। ধীরে ধীরে না হয় বাড়াবেন। কারণ ডিম্যান্ড যে বাড়বেই, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ডিম্যান্ড বাড়লে বিজনেস রান করবে সাকসেসফুলি।
৬। PHOTOGRAPHY
ফটো তোলা আপনার যদি প্যাশন হয় তাহলে এটাই হতে পারে আপনার পেশা। মোবাইল হোক বা ক্যামেরা, ক্রিয়েটিভ মাইন্ড থাকলে আপনার ছবি সর্বত্র ঝড় তুলতে পারে। ইভেন্ট হোক বা পথচলতি দৃশ্য। ভালো ফটোগ্রাফারের কদর সর্বত্র। সেই ছবি আপনি নিজে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিক্রি করতে পারবেন। মোটা টাকা আয়ের পথ খুলে যাবে।
৭। ONLINE TUTORIALS
কোন সাবজেক্টে আপনি আনপ্যারালাল, সেটা আগে বুঝুন। সায়েন্স, আর্টস, মিউজিক, ডান্স যেটাই হোক। আপনি যে সাবজেক্টে সাবলীল সেই সাবজেক্ট নিয়েই খুলে ফেলুন অনলাইন কোচিং সেন্টার। মানে অনলাইনে ছেলেমেয়েদের সেই শিক্ষা দিন। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে অনলাইনে পড়ানোর চাহিদার গ্রাফ শুধু ওপরের দিকে। তাই আপনি যদি অনলাইনে আপনার সাবজেক্ট পড়াতে চান তাহলে ছাত্রছাত্রীর অভাব হবে না। শুরুতে এই বিজনেসের গতি একটু স্লো হলেও ভবিষ্যতে অনেক স্টুডেন্ট পাবেন। আর যেহেতু যাতায়াতের খরচ নেই, তাই কোচিং ফি-র পুরোটাই আপনার প্রফিট।
৮। MEAL SERVICE
এই আইডিয়া অনেকটা বেশি মহিলাদের জন্য। তবে চাইলে পুরুষেরাও করতে পারেন। কিন্তু আমাদের শহরের ওয়ার্ক প্লেসে এমন বহু কর্মী আছেন যারা বাইরে থেকে আসেন। টিফিনের সমস্যা তাঁদের থেকেই যায়। আর প্রতিদিন স্ট্রিট ফুড খেতেও মন বসে না। বরং তাঁরা বাড়ির তৈরি রান্নার দিকে ঝোঁকেন বেশি। তাই আপনি যদি এমন এক মিল সার্ভিস চালু করতে পারেন এবং বিভিন্ন ওয়ার্কপ্লেসে গিয়ে টিফিনের সমস্যা মেটাতে পারেন তাহলে তাঁদের পেট ভরবে আর আপনার পকেট। প্রতিদিন বাড়ির তৈরি নানান হোম মেড খাবার আপনার মেনুতে রাখুন। দেখবেন বিজনেস কেমন সাকসেসফুলি রান করে।
৯। GARDENING
এই বিজনেস করতে গেলে একটা বিষয় প্রয়োজন। সেটা হচ্ছে গাছপালার প্রতি ঝোঁক। শুধু ব্যবসা করার জন্য করতে গেলে মুশকিল। কিন্তু বিভিন্ন ধরণের বাহারি গাছ বা বাহারি ফুলের প্রতি যদি আপনার ঝোঁক থাকে তাহলে গার্ডেনিং-এর মত বিজনেস নেই। কারণ এখানে পুঁজি কম। রোদ, হাওয়া খেলে এমন জায়গায় রংবাহারি ফুলের চাষ করুন। তারপর চড়া দামে বিক্রি করে দিন। মাথায় রাখবেন, রংবাহারি ফুলের গাছ বাড়িতে সাজিয়ে রাখার ট্র্যাডিশন দিন দিন বাড়ছে। তাই এই বিজনেসে লস হবার ভয় তো নেইই, বরং প্রফিট হবে অনেক বেশি।
১০। MEDICAL SAMPLE COLLECTION
আপনার সঙ্গে যদি সাইকেল বা বাইক থাকে তাহলে এই বিজনেস সাকসেসফুলি রান করাতে একটু সুবিধে হবে। আপনাকে করতে হবে কি? বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাল্ড, স্টুল বা ইউরিনের স্যাম্পেল কালেক্ট করতে হবে। তারপর পৌঁছে দিতে হবে আপনার চেনা প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবে। তারপর রিপোর্ট পৌঁছে দিতে হবে বাড়ি বাড়ি। বিশ্বাস করুন, আজকের দিনে কেউ আর প্রয়োজন না পড়লে প্যাথলজিক্যাল সেন্টারে যেতে চান না। তারওপর অনেক বয়স্ক মানুষ রয়েছেন, যাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই আপনি সেই দায়িত্ব নিয়ে নিন। বাড়ির সংখ্যা যত বাড়বে, আপনার লাভের অঙ্ক তত বাড়বে।
বন্ধুরা, এই হল দশটি লো ইনভেস্টমেন্ট এদিকে হাই প্রফিট বিজনেস আইডিয়া। আর শুধু এই ধরণের বিজনেস নয়। রয়েছে আরও অনেক। আপনি যদি এমন আরও বিজনেস আইডিয়া পেতে চান বা এই ধরণের বিজনেস নিয়ে আরও কিছু ডিটেলে জানতে চান তাহলে কমেন্ট বক্সে জানান। আমরা সেই ধরণের বিজনেস আইডিয়া ডিটেলে আপনাদের সামনে তুলে ধরব। তার জন্য লাইক করুন, শেয়ার করুন। আর নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করুন অবশ্যই আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ