Tourism
টয় ট্রেন ছাড়া দার্জিলিং ভ্রমণ! নৈব নৈব চ। পাহাড়ি রাস্তার বাঁক ঘুরে ঘুরে, সমতল থেকে টয় ট্রেন সফরের মজাই আলাদা। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি তো এমনি এমনি আসে না। আফটার অল হিমালয়ের কোলের শহর দার্জিলিং। আজ বাঙালি বলে নয়। গোটা ভারত থেকেই পর্যটকরা এখানে ভিড় জমাতে আসেন। দার্জিলিং ভ্রমণ যে টয় ট্রেন ছাড়া খাপছাড়া, সেটা এতদিনে কারুরুই আর অজানা নয়। আর সেই কারণেই গত অর্থবর্ষে বিশাল অঙ্কের মুনাফা করে রেকর্ড গড়ল দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। প্রায় ২০ কোটি টাকা!
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে সূত্রে খবর, প্রায় দেড় লক্ষ পর্যটক টয় ট্রেনের মজা নিয়েছেন। এই সংখ্যাটা ডিএইচআরের জন্য নতুন রেকর্ড তৈরি করল। সত্যি বলতে, টয় ট্রেনে এই পরিমাণ পর্যটকের সংখ্যা, একইসঙ্গে ১৯.২১ কোটি রোজগার- পুরোটাই ইতিহাস তৈরি করেছে বলেই জানা গিয়েছে। আর সবথেকে অবাক করা বিষয় হল, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে যেখানে টয় ট্রেনের হাত ধরে আয়ের অঙ্ক ছুঁয়েছিল ৭.৯২ কোটি টাকা মতন, সেটাই গত অর্থবর্ষে বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু আকস্মিক এই বৃদ্ধির কারণ কী?
অনেকেই মনে করছেন, দার্জিলিং-এর কদর দিনে দিনে গোটা দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি বিদেশিদের কাছেও দার্জিলিং খুব পছন্দের ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন হয়ে উঠেছে। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, গত পাঁচ বছরে বেশ কিছু নতুন সার্ভিস দিতে শুরু করেছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। শিলিগুড়ি জংশন এবং নিউ জলপাইগুড়ি জংশন থেকে দিন প্রতি ছোট ছোট ট্যুরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া চা-বাগান, জঙ্গল সাফারি। সঙ্গে টয় ট্রেনে যুক্ত হয়েছে ভিস্তাডোম কোচ। যুক্ত হয়েছে এসি কোচ। সার্বিকভাবে দার্জিলিং টয় ট্রেন ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য আরও সুখকর হয়ে উঠছে। বর্তমানে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে বা ডিএইচআর নিউ জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং-এর মধ্যে রেগুলার টয় ট্রেন সার্ভিস ছাড়াও দার্জিলিং এবং ঘুমের মধ্যে জয় রাইডের ব্যবস্থা করে থাকে। বলা হচ্ছে, পরপর বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার কারণেই টয় ট্রেনে এতো বেশি পরিমাণ ভ্রমণপ্রেমীদের ভিড় বেড়েছে।
এখানেই জানিয়ে রাখি, ১৮৮১ সালে প্রথম টয় ট্রেন দার্জিলিং-এর পাহাড় চিড়ে যাত্রা শুরু করেছিল। তারপর ২০১৮-১৯ সালে সেই ট্রেনের হাট ধরে আয় এসেছিল প্রায় ১১.৯১ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে টয় ট্রেনের আয়ের অঙ্ক একধাক্কায় বেশ কিছুটা নেমে আসে। তারপর ফের ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সেই অঙ্ক নতুন রেকর্ড তৈরি করে। উপার্জন পৌঁছে যায় প্রায় ২০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তবে এবার দার্জিলিং-এ সাধারণ মানুষের ভিড় বছর বছর আরও বাড়তে পারে। তার অন্যতম কারণ জি-২০ সম্মেলন। বিশ্বব্যাপী তাবড় তাবড় প্রতিনিধিদের পা পড়েছে এখানে। টয় ট্রেন সহ গোটা দার্জিলিং শহরটাই উপভোগ করেছেন তাঁরা। মনে করা হচ্ছে, জি-২০ সম্মেলনের কারণেই দার্জিলিং এবং টয় ট্রেন ধীরে ধীরে হিমালয়ান গ্রোথ লক্ষ্য করবে অদূর ভবিষ্যতে। বলাই বাহুল্য, পর্যটকদের সংখ্যা যত বাড়বে, ততই দার্জিলিং-এর ব্যবসা-বাণিজ্যের চাকা আরও মসৃণ গতিতে ঘুরবে। আর একইসঙ্গে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙবে টয় ট্রেন।
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ