pujo scope 2022
পুজো শেষ। শহরের রাস্তায় পাতলা হচ্ছে মানুষের ভিড়। আবারও চেনা ছন্দে ফিরছে শহরের ট্র্যাফিক, মানুষজন। পরের বছরের জন্য মাকে আহ্বান জানিয়ে মিষ্টি মুখ করেই বিজয়া পর্ব মিটে গিয়েছে। মহালয়া থেকেই যেভাবে ভিড় শহরের রাজপথে লক্ষ্য করা গেছিল, বোঝা যাচ্ছিল এবারে ব্যবসা তুমুল হতে পারে। হয়েছেও তাই। সেটা কত? এখনো এই তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। তবে এই বছর পুজোয় কিছু বাড়তি আয় করেই মুখে হাসি ফুটিয়েছেন পিছিয়ে পড়া কিছু মানুষ। যেমন ফুচকা বিক্রেতা, রিকশাওয়ালা, অথবা বেলুনওলা। মাথায় রাখবেন, পুজো মানেই শুধু বড় বড় ব্র্যান্ডের ভিড়-ই কিন্তু নয়। বা তাদের ব্যবসাই শুধু বাংলার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে না। ফুচকাওয়ালা, রিকশাওয়ালার মত পিছিয়ে পড়া মানুষের কন্ট্রিবিউশন থাকে দারুণ। তাহলে আর কি চলুন শুরু করা যাক আজকের প্রতিবেদন।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটা রিপোর্ট ইঙ্গিত দিয়েছিল, যেভাবে মানুষ পুজো শুরুর আগেই প্যান্ডেল হপিং করতে শুরু করেছেন তারপর পুজোর এই টাইম ফ্রেমে বাংলার ব্যবসা এমনিই দুর্দান্ত হবে। কারণ মহালয়া থেকেই মানুষজন বেরিয়ে পড়েছিলেন ঠাকুর দেখার জন্য। শহরে ক্রমশই ভিড় বাড়ছিল। এমনকি জেলা থেকেও মানুষ আসা শুরু করে দিয়েছিলেন। প্রশাসন আন্দাজ করেছিল, এই বছর ভিড় উপচে পড়বে। রেল দফতর বুঝে এক্সট্রা ট্রেন চালু করেছিল। মেট্রোতেও রেকর্ড পরিমাণ ভিড় হয়েছিল। এমনিতেই পুজোর সময় ব্যবসা রেকর্ড অঙ্ক করে। আর পুজোর সময় তো করবে, জানা কথাই। কিন্তু ঐ যে বললাম, পুজোয় যে বিশাল অঙ্কের টাকা রোল হয় তার ক্রেডিট একা বিগ ব্র্যান্ডদের দিলে হবে না। এর পিছনে অনেকটা কনট্রিবিউশন থাকে এই ফুচকাওয়ালা, রিকশাওয়ালা বা বেলুনওয়ালার মত মানুষদের। এদের সর্বমোট রোজগার কত, সেই তথ্য এখনো আসে নি। সবে তো গতকাল দশমীর পর্ব চুকল। এতো তাড়াতাড়ি তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। হয়ত আর দু’এক দিনের মধ্যেই পুজোয় কত ব্যবসা হল সেই বিষয়ে আমরা একটা ছবি পেয়ে যাব। তবে এদের রোজগার ভালো হয়েছে অন্যান্য বছরের থেকে, সেই তথ্য ইতিউতি কয়েকটি জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে।
তার মধ্যে প্রথমেই বলা যাক রিকশাওয়ালার কথা। মানুষের ভিড় থমকে দিয়েছিল শহরের রাজপথ। এমনকি মেন রোডগুলোয় ট্র্যাফিক প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে প্যান্ডেল হপিং এর নেশা, ঠাকুর দেখার ইচ্ছে- সেগুলোকে জলাঞ্জলি কি দেওয়া যায়? অতএব সাধারণের ভরসা তখন রিকশা। মেন রোড না ধরে শুধু অলি-গলি দিয়ে মানুষদের পৌঁছে দিয়েছে নিজের নিজের গন্তব্যে। আর এটাই বাঁচিয়ে দিয়েছে রিকশাওয়ালাদের। বাঁচিয়ে দিয়েছে মানে, তাদের তো ঘর-বাড়ি সংসার রয়েছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রয়েছে। পুজোর সময় তারা আর বঞ্চিত হন নি। রাজপথ যখন থমকে তখন যাত্রীদের সিটে বসিয়ে এই গলি, ঐ গলি দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে রিকশা। বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে একটু বেশিই ভাড়া হাঁকিয়েছেন তাঁরা। তবে পুজোর সময় নাকি সেভাবে দরদস্তুর করেন নি কেউ। প্রয়োজন মত ভাড়া পেয়েছেন। ফলে তাঁদের আয় মন্দ হয় নি। বরং হাসি ফুটেছে মুখে।
তেমনই রিকশাওয়ালাদের মত ফুচকাওয়ালা, ঝালমুড়িওয়ালাদের উপার্জন ঠাকুরের আশীর্বাদে মন্দ হয়নি। দুর্মূল্যের বাজারে প্রতিদিন কি আর বড় বড় হোটেল বা রেস্তরাঁয় ঢোকা সম্ভব? স্পেশ্যালি ফুচকার কথা যদি ধরি, তাহলে বলব বিরিয়ানি, ফ্রায়েড রাইসের পাশাপাশি ফুচকার স্বাদ কোনভাবেই ফিকে হবার নয়। আট থেকে আশি ফুচকা ভালোবাসি। আর এই ভালোবাসাবাসির মোহে আটকে পোয়া বারো হয়েছে তাঁদের। হ্যাঁ, ফুচকাওয়ালাদের ব্যবসা নাকি এই বছর ছিল জমজমাট। দই ফুচকা, ঘুঘনি ফুচকা, আলুর দম ফুচকা, মিঠে ফুচকা আরও কত কী! যত না বাহার ততই আহার। একটা ঠিকঠাক স্পট দেখে স্টল নিয়ে বসে পড়া। অতএব, ফুচকাওয়ালাদের বিক্রি যেভাবে বেড়েছে সেটা রীতিমত হাসি ফুটিয়েছে ফুচকাওয়ালাদের মুখে। ঐ যে বললাম, সংসার তাঁদেরও আছে। তাঁদের ঘরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার যদি বলেন, বিক্রি কত হল? তাহলে বলি ঐ যে, সবে তো গতকাল বিজয়া দশমী শেষ হল। এখনই সব তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। তবে যেটুকু জানা গেল, যে রিকশাওয়ালা, ফুচকাওয়ালাদের ব্যবসা এই বছর কিন্তু ভালোই হয়েছে। বাংলায় পুজোর অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয় এদের হাত ধরেও। সেটা কিন্তু খেয়াল রাখা উচিৎ সকলের। আজ এটুকুই। কত কী ব্যবসা হল, এই সব তথ্য নিয়ে আরেকটা প্রতিবেদনে হাজির হব। আপাতত এখানেই শেষ করছি। প্রতিবেদন ভালো লাগলে লাইক করুন শেয়ার করুন। আর সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ। সকল দর্শকদের জানাই বিজয়া দশমীর আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
জীবন হোক অর্থবহ