ক্যাশলেস সোসাইটি। শুনতে খানিকটা সায়েন্স ফিকশন মনে হলেও, বিগত কয়েক বছর ধরে এটাই বাস্তব। গোটা দুনিয়ায় ক্যাশ ক্যারি করেন, এমন মানুষের সংখ্যা এখন হাতেগোনা। যেখানে এক সোয়াইপ বা এক স্ক্যানেই পেমেন্ট হয়ে যাচ্ছে কয়েক সেকেন্ডে, সেখানে ব্যাগ হাতিয়ে, খুচরো গুণে, ঘেমে নেয়ে পেমেন্ট করার চাপ কে নেবে বলুন না? অত সময় কোথায়? আর আপনার হাতে যখন ডিজিটাল ডিভাইসটি রয়েছে কিংবা উল্টোপিঠে স্ক্যানার বর্তমান, তখন তো আর কোন চিন্তা নেই। গো ফর আ ক্যাশলেস জার্নি। তা এই ক্যাশলেস ওয়ার্ল্ডে ভারতের জায়গা কোথায়? কতদূর এগোল ভারতের ইলেক্ট্রনিক ট্রাঞ্জাকশন জার্নি?

আজ গোটা বিশ্বের পাশাপাশি ডিজিটাল লেনদেনের জার্নিতে সামিল হয়েছে ভারতও। দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ এখন বুঁদ হয়ে রয়েছে ডিজিটাল লেনদেনে। শহরতলি থেকে গ্রামের অলিগলি- ছবিটা কিন্তু এক্কেবারে এক। যা একেবারে জলের মতো স্বচ্ছ বেসরকারি সংস্থা ‘ব্রাঞ্চলেস ব্যাঙ্কিং ও ডিজিটাল নেটওয়ার্ক’ PayNearby-এর প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্যে। তাহলে কি ‘হর ঘর ইউপিআই’-এর পথে ভারত? রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে শহরতলি ও গ্রাম্য এলাকায় তাদের কাউন্টারে ইউপিআই লেনদেন, নগদ তোলার, ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের জন্য ঋণ নেওয়া, ই-কমার্স পরিষেবার আর্থিক মূল্য ও লেনদেনের ভলিউম যথাক্রমে ২৫% এবং ১৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। যা থেকে এটুকু স্পষ্ট যে নগদের বিকল্প হিসেবে ভারতের অর্থনৈতিক পরিসরে ডিজিটাল লেনদেন একটা মজবুত জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। ডিজিটাল লেনদেনের এই বৃদ্ধিতে দেশের প্রধান শহরগুলোকে রীতিমত টেক্কা দিচ্ছে গ্রামীণ ভারতও। ব্যাঙ্কের লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর থেকে সবাই এখন আস্থা রাখছে ইলেক্ট্রনিক উইথড্রল প্রসেসে।

শহরতলি ও গ্রামীণ ভারতে ডিজিটাল লেনদেন যে মজবুত জায়গা করে নিতে পারছে, তার অন্যতম কারণ হল মাইক্রো এটিএম এবং মোবাইল পয়েন্ট অব সেল যন্ত্রের চাহিদা। আর্থিক লেনদেনের হ্যাপা কম বলে মাইক্রো এটিএমকে সঙ্গে রাখতে পছন্দ করছেন ব্যবসায়ীরাও। আর ট্রাঞ্জাকশনের সময় কম লাগায়, ক্রেতাদেরও পছন্দ এই ডিভাইসটি। বর্তমানে মাইক্রো এটিএমের ডিম্যান্ড বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশের কাছাকাছি। ডিজিটাল মাধ্যমে ক্যাশ কালেকশন বেড়েছে প্রায় ২০০%। টাকার অঙ্কে যার সংখ্যাটা প্রায় ১৪০০ কোটি মত। বেড়েছে ই-কমার্স কোম্পানিগুলো থেকে পাওয়া টাকার ভলিউম। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, ডিজিটাল লেনদেন এখন শুধুমাত্র শহরের অর্থনৈতিক পরিসরেই সীমাবদ্ধ নয়। ডিজিটাল লেনদেনের অভ্যাস তৈরি হয়েছে ভারতের গ্রামীণ এলাকাতেও। আর যার ফলে ক্রমেই আর্থিক সংযুক্তিকরণের দিকে এগিয়ে চলেছে ভারত।

বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ