pujo scope 2022
এ পুজো আর পাঁচটা পুজোর মত নয়। বনেদি বাড়ির পুজো যে! বোধন থেকে বিসর্জন- এই পুজোয় ভরপুর সাবেকিয়ানা। আটপৌরে, সাদামাটা, ছিমছাম।
ঠাকুরদালান, একচালা, আর সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো থামগুলো ইতিহাসের সাক্ষী। প্রায় ৭৬১ বছরের ইতিহাস। রানাঘাটের শর্মা চৌধুরীদের বাড়ির পুজো। এ পুজো বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন পুজোর একটা।
১২৬২ খ্রিষ্টাব্দ। রাণাঘাট তখন ব্রহ্মডাঙ্গা। পদব্রজে রাঢ়বঙ্গে আসেন রামকুমার চক্রবর্তী- উমার সেবক। লোকে বলে, স্বপ্নাদেশ পেয়ে নাকি ৫ বাড়ি ভিক্ষে করে, তিনিই শুরু করেন এই পুজো। সেই থেকে নদীয়াতে ঊমার পুজো হয় বুড়ো মা হিসেবে।
পরবর্তীকালে নদীয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের তৎপরতায় এ পুজোর আরও ব্যপ্তি হয়। আজও সেই জৌলুষ অমলিন।
নয় রকমের ভাজার সঙ্গে প্রতিদিনই মাকে ভোগ নিবেদন করা হয়। চতুর্থীতে মাকে পুজোর বেদিতে বসানো হয়। পঞ্চমীতে সে গয়নায় সাজে। আর ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে যায় উৎসবের ব্যস্ততা। প্রতিদিনই প্রচুর ভক্তের সমাগম চলে। তবে, অষ্টমীর দিন তিল ধারনের জায়গা থাকে না।
নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির যুগে, অগোছালো পরিবারকে এক করে পুজো। তাই দেশে-বিদেশের যে প্রান্তেই ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা হোক না কেন? পুজোর কটা দিন বাড়িতেই সবাই। এ বিষয়ে অবশ্য সবচেয়ে বেশি এক্সাইটেড থাকে বাড়ির খুদেরাই।
এ বাড়ির পুজোর বিশেষত্ব হচ্ছে একেক দিনের একেক নিয়ম। তবে নবমীর নিয়মটা বেশ ইন্টারেস্টিং। কাদাখেলা।
ঠাকুরদেখা, ঘোরাফেরা, আড্ডা, খাওয়াদাওয়া-পুজোর এই হই-হট্টগল অনেকেরই না-পসন্দ। শহরের কোলাহল এড়িয়ে অনেকেই একটি নিরিবিলিতে পুজো কাটাতে পছন্দ করেন। যেখানে জাঁকজমক কম থাকুক কিন্তু আন্তরিকতাটা যেন ভরপুর থাকে। তারা এখানে ঢুঁ মারতেই পারেন। আর তাছাড়া নবাবী আমলে দুর্গাপুজো কেমন হত? সেই গল্পও শুনে আসা যাবে তাহলে।
সুব্রত সরকার
নদীয়া