Tech-Talk
আগামি বছরের মধ্যেই ৫জি পরিষেবা পাওয়া যাবে ভারতে বিক্রি হওয়া ৭০-৮০ শতাংশ স্মার্ট ফোনে। দেশের ৫০টি শহর এখন ৫জি পরিকাঠামো নিয়ে প্রস্তুত। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ভারতবাসীর প্রহর গোনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে ক্রমশ পিছিয়ে পড়বে ৪জি। অন্যদিকে প্রত্যেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবে ৫জি পরিষেবা। ফলে মোবাইল থেকে কাজ করাটা জলের মতন সহজ হয়ে যাবে। আর এই মুহূর্তে গোটা ব্যাঙ্কিং সিস্টেমটাই এখন চলে এসেছে মুঠোফোনের দখলে। সেটা স্মার্ট মোবাইল ব্যবহারকারীদের সময় একদিকে যেমন বাঁচিয়ে দিচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে দুর্দান্ত একটা পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে ন্যূনতম কোন হ্যাপা না সামলে। এখন বিষয়টা হচ্ছে, ভারতে দিন দিন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছরে ভারতে স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন প্রায় ৪৩ শতাংশের বেশি মানুষ। কিন্তু এদের মধ্যে কতজনের মোবাইল হ্যাক হচ্ছে খেয়াল আছে কিছু? বিষয়টা কিন্তু একেবারেই ফেলে দেবার নয়। কারণ, আজ আপনার সঙ্গে হচ্ছে না বলেই যে কাল হবে না তার গ্যারান্টি কতটুকু? একবার ভেবে দেখুন, ভারতে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা যত বাড়বে ততই কিন্তু পাল্লা দিয়ে বাড়বে হ্যাকারদের উৎপাত। আর হ্যাকাররা আমার, আপনার যে-কোন ফোন খুব সহজেই হ্যাক করতে পারে যদি আপনার দেওয়া পাসওয়ার্ডটি দুর্বল হয়। তাই আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব, সেই ১০টি দুর্বল পাসওয়ার্ডের তালিকা যা ব্যবহার করলে আপনার বিপদ আপনি ডেকে আনবেন নিজে।
প্রথমেই বলি, আমরা কেন পাসওয়ার্ড দিই? যাতে তথ্যচুরির মত ঘটনা না-ঘটে। মানে আমার রাখা তথ্য যেন অন্যের হাতে সহজে না-চলে যায়। তার জন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়। আপনি যেমন পাসওয়ার্ড দিয়েই নিশ্চিন্ত থাকছেন, খেয়াল রাখবেন হ্যাকাররাও কিন্তু আপনার ফোনের পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করতে দারুণ ওস্তাদ। তাই, যেমন তেমন সাধারণ একটা পাসওয়ার্ড দিয়েই আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন না। সাধারণ মানুষের স্বার্থে এই কথাই বলছে সাইবার সিকিউরিটি সংস্থাগুলো। নর্ড পাস নামের একটি সংস্থা সেই দুর্বল পাসওয়ার্ডের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য যে দশটি পাসওয়ার্ডের কথা তারা বলেছে, সেই পাসওয়ার্ডগুলো বহু মানুষ ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, এই ধরণের পাসওয়ার্ড আবার হ্যাকারদের মুখের হাসি চওড়া করে দেয়। কারণ, আদতে যে পাসওয়ার্ড আপনার কাছে বেশ শক্তপোক্ত এবং ক্র্যাক করা অসম্ভব ঠেকে, হ্যাকাররা সেই কাজ করে ফেলে ঝুটঝামেলা ছাড়া এবং ত্রুটিহীনভাবে। তাই কেমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন?
সেটা বলার আগে নর্ড পাস কোন দশটি পাসওয়ার্ডের তালিকা প্রকাশ করল, যেগুলোর একটি আপনি ব্যবহার করলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি থাকবে? আসুন, আগে সেই তালিকা দেখে নেওয়া যাক।
123456, bigbasket, password, 12345678, 123456789, pass@123, 1234567890, anmol123, abcd1234, googledummy.
নর্ড পাস সতর্ক করে জানিয়েছে, এই দশটি পাসওয়ার্ড যদি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে হ্যাকারদের জন্য এই পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করা কোন ব্যপার হবে না। এগুলি খুবই দুর্বল পাসওয়ার্ড। সংস্থাটির বক্তব্য, ‘password’- কে পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন দেশের ৩.৫ লক্ষ মানুষ। আবার অন্যদিকে, বিগবাস্কেট পাসওয়ার্ডটি ব্যবহার করেন, প্রায় ৭৫ হাজারের বেশি ভারতীয়। যদি স্পেশ্যালি এই দুটো পাসওয়ার্ডের দিকে খেয়াল করেন, তাহলে দেখবেন, দুটো পাসওয়ার্ডের মধ্যে কোন সংখ্যা নেই। রয়েছে শুধু অক্ষর। আর শুধু অক্ষর বা লেটার ব্যবহার করা পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করে হ্যাকারদের জন্য কাজটা খুব সহজ করে দেয়। আবার উল্টো দিকটা যদি দেখেন, তাহলে বলব, পাসওয়ার্ড শুধু নিউমেরিকাল হলেও হ্যাকারদের জন্য সেটা বিশেষ সুবিধের। যেমন ১২৩৪৫৬ বা ১ থেকে ০ পর্যন্ত দেওয়া পাসওয়ার্ড। তাই অক্ষর এবং নিউমেরিক্স মিলিয়ে মিশিয়ে ব্যবহার করা উচিৎ। সেক্ষেত্রেও যে সেই পাসওয়ার্ড খুব শক্তিশালী হবে, আর কোন হ্যাকার সেই পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করতে পারবে না তারই বা গ্যারান্টি কোথায়? নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু তার মানে সেটা এবিসিডি১২৩৪ বা আনমোল১২৩ দেবেন না।
সংস্থাটি বলছে, পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এমনভাবে যার মধ্যে শুধু অক্ষর, নিউমেরিক্স থাকলেই হবে না। সঙ্গে থাকতে হবে স্পেশ্যাল ক্যারেক্টার। বলা হচ্ছে, লেটার নিউমেরিক্স এবং স্পেশ্যাল ক্যারেক্টার একটি পাসওয়ার্ডকে খুব শক্তিশালী করে দেয়। যেটা ক্র্যাক করার জন্য হ্যাকারদের হ্যাপা পোয়াতে হয় ভালোরকম। তাই শুধু পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলেই হল না। কেমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন, সেটা খেয়াল রাখুন। আর তাহলেই হ্যাকারদের হাত থেকে কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন। আপনিও কি এই ধরণের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন? প্রতিবেদনটি যদি ইনফরমেটিভ মনে হয়, তাহলে অবশ্যই সেটা শেয়ার করে দিন। সতর্ক করুন আপনার পরিচিতদের।
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ