Daily
গমের ফলনে প্রাথমিক পর্যায়ে একটু বাধা এসেছিল ঠিকই। কিন্তু ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এবং স্টেট গভর্নমেন্ট এজেন্সিসগুলোর তড়িঘড়ি উদ্যোগ হাসি ফোটাল গম চাষিদের মুখে। যেভাবে তারা গত এক সপ্তাহে গম সংগ্রহ করেছে, সেটা চলতি বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০%। এক সপ্তাহের মধ্যে গমের সংগ্রহ পৌঁছে গিয়েছে ১৮.৩৭ মিলিয়ন ক টনে। মনে করা হচ্ছে, যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলো গম কেনার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন, তারপর গম মজুদের পরিমাণ খুব শীঘ্রই ছুঁয়ে ফেলবে ১৯ মিলিয়ন ক টনে। যা গেল বছর এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে সরকার গম কিনেছিল ১৮.৭৯ মিলিয়ন টন মতন। সেই সংখ্যা ইতিমধ্যেই ছুঁয়ে ফেলা গেছে।
গেল বছরেও গরমের দাপট ছিল ভালোরকম। ২০২২ সালের মার্চে গরমের কোপে গমের উৎপাদন ভালোরকম ধাক্কা খায়। যে কারণে ২০২১ সালের তুলনায় ৫৬% কমে হয় গমের বিক্রি। তারপর এক ধাক্কায় ৪৩.৩ মিলিয়ন ক টন থেকে নেমে আসে ১৮.৮ মিলিয়ন ক টনে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী ভারতীয় গমের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছিল। জানা যাচ্ছে, চলতি বছরে যে সকল রাজ্যগুলি থেকে গমের মজুদ সবচেয়ে বেশি হয়েছে, সেগুলি হল পঞ্জাব, হরিয়ানা, এবং মধ্যপ্রদেশ। পঞ্জাব থেকে গমের মজুদ হয়েছে ৮.৩৫ মিলিয়ন ক টন, হরিয়ানা থেকে ৫.২৬ মিলিয়ন ক টন এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে ৪.৬ মিলিয়ন টন। এমএসপি বা যাকে বলা হয় মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস- সেটাও খুব কাছাকাছি থেকে গিয়েছে রাজস্থান এবং উত্তরপ্রদেশে। রাজস্থান থেকে গম মজুদ করা হয়েছিল ৩৮,১২৪ টন। এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে ৯৪,৬৩৩ টন।
সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, সরকারের সহযোগিতার কারণে লাভবান হয়েছেন দেশব্যাপী ১.৮৫ মিলিয়ন কৃষক। কৃষকদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩ কোটি ৮৭ লক্ষ ৭২ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। তার মধ্যে সরকারি এজেন্সি মারফৎ খরচ এখনো পর্যন্ত হয়েছে ২৩,০১৯ কোটি টাকা। সরকারের এখন লক্ষ্য গমের মজুদ যাতে অনেকটা বাড়ানো যায়। মনে করা হচ্ছে, মজুদের পরিমাণ পৌঁছে যেতে পারে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন ক টনে। এই সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এসেছে একটা অনুমতি। সেটা কি? বিভিন্ন রাজ্য সহ উত্তরপ্রদেশকে বলা হয়েছে, তারা গম মজুদ করতে পারবে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে। পরিবর্তে তারা কমিশন পাবে কুইন্টাল প্রতি ২৭ টাকা। বলা হচ্ছে, সরকারের এই সুযোগ করে দেওয়াটা কৃষকদের জন্য অনেকটা হ্যাপা কমিয়ে দিয়েছে। কারণ গমের মজুদ এতে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ কৃষকরাই সরাসরি পঞ্চায়েত অফিসে মজুদ করছেন গম। তাঁদের আর মজুদঘরে আলাদা করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে পাঠাতে হচ্ছে না। এর ফলে, কৃষকরাও লাভের মুখ কিছুটা দেখতে পাচ্ছেন।
এছাড়াও কৃষকদের জন্য আরেকটা দারুণ সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যে সকল শস্য ভেঙে গিয়েছে বা যে সকল সামান্য ক্ষতি হয়েছে, সেই সকল শস্যগুলির এখন ১৮% কিনে নেওয়া হবে ঠিকঠাক দামে। আগে পঞ্জাব, হরিয়ানা, এবং রাজস্থান থেকে এই সকল শস্য কেনা হত ৬% মতন। সরকার মনে করছে, প্রাকৃতিক বা আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা তেমন না থাকলে চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসে গমের উৎপাদন পৌঁছে যেতে পারে ১১২ মিলিয়ন টনে। আর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কৃষকদের জন্য যদি এভাবেই একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে দিনের শেষে লাভবান হবেন তো কৃষকরাই। তাই না?
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ