Story
বৈদিক যুগে নারীরা জ্যোতিষচর্চার পাশাপাশি যজ্ঞও করতেন। সাক্ষী আছে ইতিহাস। কালের নিয়মে পুরোহিতের জায়গা নিয়েছেন পুরুষরা। মহিলারা অবশ্য লক্ষ্মী পুজো আগেও করতেন, এখনও করেন। কিন্তু দশভুজার পুজো করবেন মহিলারা? অবিশ্বাস্য মনে হলেও এবার পৌরোহিত্যে সেই নারীশক্তিরই প্রকাশ পেল নদীয়ায়।
নদীয়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী দুর্গা পুজো হল বুড়িমাতলা মণ্ডপের দুর্গাপুজো। ১০০ বছর অতিক্রান্ত এই পুজো নদীয়ার চাকদায় তার শত বছরের দীর্ঘ ইতিহাস আভিজাত্যের সঙ্গে ধরে রেখেছে। যেখানে বাড়ির মহিলারা এই পুজোয় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। বংশপরম্পায় এই পুজো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে স্বারম্বরে। ঐতিহ্যের সঙ্গে মানিয়ে এই পুজো আজ নদীয়া জেলার অন্যতম প্রধান দুর্গা পুজো হয়ে উঠেছে।
রাখী, স্নেহা বা মিনুর মত মহিলারা প্রত্যেকেই নিজের নিজের কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। রাখী ভট্টাচার্য নিজে পেশায় আইনজীবী। স্নেহা চক্রবর্তী নিজে একজন বেসরকারি সংস্থার মহিলা কর্মী এবং মিনু চক্রবর্তী নিজে একজন লেখিকা। তাঁদের সম্মিলিত পৌরোহিত্যে এবারে উমার পুজো হতে চলেছে নদীয়ার বুড়িমাতলায়। কিন্তু পৌরোহিত্যে নারীশক্তি কেন?
বুড়িমাতলা মণ্ডপের দুর্গাপুজো নদীয়ার দুর্গাপুজোর মধ্যে অন্যতম। আর এই বছর মায়ের পুজো হতে চলেছে মেয়ের হাতে। রাখী ভট্টাচার্য, স্নেহা চক্রবর্তী এবং মিনু চক্রবর্তীর পৌরোহিত্যে পুজো হতে চলেছে বুড়িমাতলার দুর্গাপুজোর। এই অভিনবত্বের বিষয় নিয়ে কথা বললেন পুজো উদ্যোক্তা দীপ্তিমান কুণ্ডু।
নারীশক্তির এই নতুনরূপে প্রকাশের কথা স্বীকার করে নিলেন অন্যতম সদস্যা রীতা সরকারও।
একটাসময় রাখী, স্নেহা এবং মিনুরা মনসা পুজো দিয়ে পৌরোহিত্যে হাতেখড়ি করেছিলেন। এরপর করেছেন অন্যান্য পুজো। কিন্তু দশভুজার পুজো করার অভিজ্ঞতা এই প্রথম হতে চলেছে। ইতিহাসের পালে হাওয়া দিয়ে নারী ক্ষমতায়নের যুগে যা হতে চলেছে একেবারে ব্যতিক্রমী। আর বুড়িমাতলা মণ্ডপের পুজো প্রতিবারই যে চমক দেয় এবারে সেই ছবিটাই ফুটে উঠছে পুজো উদ্যোক্তাদের এই অভিনব পদক্ষেপের মাধ্যমে।
রনি চ্যাটার্জী
নদীয়া