কথায় বলে, পেটে খেলে পিঠে সয়। কিন্তু খাদ্যরসিক বাঙালির জন্য শীত এসে পড়লে এই প্রবচনটিকে নির্দ্বিধায় উল্টে বলা যায়, পিঠে খেলে তবেই না পেটে সয়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যখন শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষায় বাঙালিরা মেতে ওঠেন পিৎজা, বার্গারের মত খাবারে। তখন বাংলার নিজস্ব খাদ্যধারায় এখনো গন্ধ ছড়ায় পিঠে, পুলি। মা-ঠাকুমাদের হাতে তৈরি দুধ পিঠে, সেদ্ধ পিঠের স্বাদ আর যাই হোক বাঙালির পক্ষে ভুলে যাওয়া মুশকিল।

তাই সময়ের অভাবে এখন বাড়ি বাড়ি পিঠে, পুলি তৈরি করাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ালেও উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রেমচাঁদ বর্মণ কিন্তু পিঠে, পুলির গন্ধ ছড়িয়েই বাংলাই ক্রেতার মন টেনে রেখেছেন। উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের মহেন্দ্রগঞ্জ এলাকায় প্রেমচাঁদ বর্মণের হাতে তৈরি ভোলানাথ নিরামিষ পিঠাপুলির দোকান। যেখানে পাওয়া যায় নানান স্বাদের পিঠে। ভাপা পিঠা,সরা পিঠা,মালপওয়া,পাটি সাপ্টা সহ নানান স্বাদের পিঠা নিয়ে শীতের সন্ধ্যায় পসরা সাজিয়ে বসেন প্রেমচাঁদ বাবু। বিক্রিও হয় ভালোই।

বছরের অন্যান্য সময় কৃষিকাজ বা অন্যান্য কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও শীত আসা মানেই প্রেমচাঁদবাবু পসরা সাজিয়ে বসেন পিঠেপুলির। আর সন্ধ্যা যতই গড়ায় ততই যেন আট থেকে আশি প্রত্যেকেই হাজির হন প্রেমচাঁদবাবুর দোকানে। ক্রেতাদের লাইন পড়ে যায় দোকানের সামনে।

বাঙালি খাদ্যরসিক। তাই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাঙালির খাদ্যতালিকায় পিৎজা, বার্গারের ঢুকে পড়াটা যেমন ধ্রুবসত্য। তেমনি বাঙালি তার নিজের সংস্কৃতির খাবারকেও যে একেবারে বর্জন করেনি সে কথাটাও একেবারে সত্যি। তাই বলাই যায়, সময়ের অভাবে ঘরে ঘরে পিঠেপুলি না তৈরি হলেও বাঙালির জিভে পিঠে পুলির স্বাদ পৌঁছে দিতে প্রেমচাঁদ বর্মণের মতনই বিক্রেতারা পসরা সাজিয়ে বসেন শীতের আমেজকে আরো একটু বাড়িয়ে দিতে।

অনুপ জয়সোয়াল
উত্তর দিনাজপুর