Trending

সময় লাগল মাত্র ৯ সেকেন্ড। তাসের ঘরের মতন গুঁড়িয়ে দেওয়া হল নয়ডার টুইন টাওয়ার। ব্যবহার করা হল ৩৭০০ কেজির বিস্ফোরক। রবিবার চোখের নিমেষে ধূলিসাৎ হয়ে গেল কুতুব মিনারের থেকেও লম্বা ১০০ মিটার উচ্চতার গগনচুম্বী এই টুইন টাওয়ার। যার একটির নাম অ্যাপেক্স, অন্যটির নাম সিয়েন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দীর্ঘ ৯ বছরের আইনি লড়াইয়ের অবসান হল। কিন্তু কেন প্রাসাদোপ্রম এই যমজ বহুতল ধ্বংস করে দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট?
২০০৫ সালে টুইন টাওয়ার তৈরি শুরু করে সুপারটেক লিমিটেড। এই গোটা প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছিল এমেরাল্ড কোর্ট। প্রতিটি ফ্ল্যাটের দাম ধরা হয়েছিল ১ কোটি থেকে ৩ কোটি টাকা। ১০ তলার ১৪টি বিল্ডিং তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয় নির্মাণকারী সংস্থাকে। জানানো হয়, বিল্ডিংয়ের উচ্চতা রাখতে হবে ৩৭ মিটারের মধ্যে।
এরপর আরও দুটি বিল্ডিং তৈরির জন্য বদল আসে পরিকল্পনায়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেক্ষেত্রে বিল্ডিং নির্মাণ করা যাবে ২৪ তলা পর্যন্ত। কিন্তু দেখা যায়, এই টুইন টাওয়ারের বিল্ডিংয়ের উচ্চতা বাড়িয়ে করা হয় ৩২ তলা। দলিলে যে জায়গায় দেখানো হয়েছিল বাগান, সেখানেই তৈরি করা হয় টুইন টাওয়ার। বিতর্ক শুরু এখান থেকেই।
২০১২ সালে এই অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে মামলা করে দ্য এমারেল্ড কোর্ট ওনার্স রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। বলা হয়, আইন মোতাবেক এই দুটি বিল্ডিংয়ের মধ্যে দূরত্ব রাখার কথা ছিল ৩৭ মিটার মতন। কিন্তু দেখা যায় অ্যাপেক্স এবং সিয়েন তৈরি করা হয়েছে মাত্র ১৬ মিটার দূরত্বে। মামলা যায় এলাহাবাদ হাই কোর্টে।
২০১৪ সালে টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলেও এলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্মাণকারী সংস্থা আর্জি জানায় সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু ধোপে টিকল না আর্জি। এরপর ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্ট টুইন টাওয়ার ভেঙে দেওয়ার বিষয়টিতে সিলমোহর দেয়।
অ্যাপেক্সের ৩২ তলা এবং সিয়েনের ২৯ তলা একত্রে কার্যত ধ্বসে পড়ে যায়। এই দুটি বিল্ডিংয়ে ফ্ল্যাটের সংখ্যা ছিল এক হাজার। বর্তমানে এই টুইন টাওয়ারের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। এই যমজ বিল্ডিংয়ে ৭১১ জন টাকা দিয়েছিলেন ফ্ল্যাট কেনার জন্য। এদের মধ্যে ৬৫২ জনকে ইতিমধ্যেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বুকিং অ্যামাউন্ট এবং সুদ সমেত। যদিও এখনো ৫৯ জন এই টাকা পাননি। প্রায় ৮০ হাজার টন ধ্বংসস্তুপ তৈরি হয়েছে টুইন টাওয়ার ভেঙে পড়ার কারণে। আর এই বহুতল ভাঙতে খরচ করা হল ২০ কোটি টাকা। টুইন টাওয়ার নির্মাণকারী সংস্থা এমারেল্ডের ক্ষতির অঙ্ক পৌঁছল ৫০০ কোটি টাকায়।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ