Trending
আর নয় ফসিল ফুয়েল। অপ্রচলিত শক্তিই হয়ে উঠছে ভবিষ্যৎ। আর যে কারণে অপ্রচলিত শক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। কমছে ফসিল ফুয়েলে বিনিয়োগ। আর এই ছবিটা শুধু ভারত বলে নয়। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিশ্বের অধিকাংশ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রে। কোন দেশ বিনিয়োগের নিরিখে রয়েছে এগিয়ে আর কোন দেশ এখনো ফসিল ফুয়েলকেই হাতিয়ার করছে? কেনই বা বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে অপ্রচলিত শক্তি খাতে? এই সব নিয়েই শুরু করা যাক আজকের প্রতিবেদন।
যত পেরোচ্ছে সময়, ততই এনার্জি ক্রাইসিস বিশ্বব্যাপী মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর যে কারণে ফসিল ফুয়েলের ভবিষ্যৎ যে ক্রমশই অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে, সেটা আর নতুন কিছু নয়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে প্রয়োজন এমন এক বিকল্পের যা বিশ্বব্যাপী এই সমস্যাকে জুতসই সমাধানের পথ খুঁজে দেবে। আর সেই লক্ষ্যেই এগোতে চায় বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো। বিষয়টা কেমন হচ্ছে জানেন? ফসিল ফুয়েলে এখন যদি কেউ এক ডলার বিনিয়োগ করে, অপ্রচলিত শক্তি খাতে বিনিয়োগ করা হচ্ছে ১.৭ ডলার। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই রেশিও ছিল প্রায় এক। এই বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি বা আইইএ-র এগজিউকিটভ ডিরেক্টরের বক্তব্য একেবারে জলের মতন সহজ। তিনি বলছেন, “Clean energy is moving fast, faster than many people realise. This is clear investment trends, where clean technologies are pulling away from fossil fuels.” মোদ্দা কথা, সাধারণ মানুষ যত তাড়াতাড়ি অপ্রচলিত শক্তিখাতের ব্যপারে বুঝতে পারছেন, তার থেকে আরও দ্রুত বিনিয়োগ বাড়ছে এই খাতে। আর এই বিনিয়োগ ফসিল ফুয়েলের থেকে অনেকটাই নিজের দিকে টেনে নিচ্ছে অপ্রচলিত শক্তি। তার একটা বড় উদাহরণ হল সোলার এনার্জি। এই প্রথমবারের জন্য সোলার এনার্জি খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। আর এই বিনিয়োগ ছাড়িয়ে গেছে তেল উৎপাদনে যত পরিমাণ বিনিয়োগ হয় তার থেকে অনেকটা বেশি।
আর দ্বিতীয় হচ্ছে, লো এমিশন ইলেক্ট্রিসিটি টেকনোলজি। যেমন ইলেকট্রিক ভেহিকলস। পাওয়ার জেনারেশন সেক্টরে যা বিনিয়োগ হচ্ছে, তার অনেকটাই করা হচ্ছে এই খাতে। আর মজার বিষয় কী জানেন? শুধু ব্যবসায়ীরা নন। এই খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কনজিউমাররা নিজেও। কিন্তু হঠাৎ করে অপ্রচলিত শক্তি খাতে এতো বিনিয়োগের কারণ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পিছনে অনুঘটকের কাজ করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। খেয়াল রাখবেন, ২০২২ সালে রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে ন্যাচারাল গ্যাস পাঠানোর কাজটা একধাক্কায় কমিয়ে দিয়েছিল প্রায় ৮০%। ফলে গোটা ইউরোপ জুড়ে শুরু হয় এনার্জি ক্রাইসিস। আর যে কারণে অপ্রচলিত শক্তি খাতে বিনিয়োগ যাতে আরও বৃদ্ধি পায়, সেদিকেই নজর ঘোরায় বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো। আইইএ বা ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্য বলছে, বিশ্বব্যাপী অপ্রচলিত শক্তিখাতে সবথেকে বেশি বিনিয়োগ করছে চিন। ২০২২-এর রিপোর্ট মোতাবেক, চিন বিনিয়োগ করেছে ১৮৪ বিলিয়ন ডলার। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিনিয়োগ ১৫৪ বিলিয়ন ডলার। তারপর রয়েছে আমেরিকা, তারপর জাপান এবং পাঁচে রয়েছে ভারত। ১৯ বিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যেই ভারত বিনিয়োগ করেছে অপ্রচলিত শক্তি খাতে। আর একেবারে শেষে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া এবং রাশিয়া। তাদের বিনিয়োগ বরং ধীরে ধীরে কমতির দিকে। বিশ্ব মার্কেটে ভারত ক্লিন এনার্জি সেগমেন্টে যেভাবে বিনিয়োগ করছে তাতে এটা পরিষ্কার যে, ভারতে অপ্রচলিত শক্তি নিজেকে যথেষ্ট ছড়াতে পারছে। বিনিয়োগকারীদের আশা-ভরসার জায়গা তৈরি করছে। ফলে বিশ্বব্যাপী যখন এনার্জি ক্রাইসিস দেখা যাচ্ছে, তখন ভারত নিজের জায়গাকে ধরে রাখতে পারছে। তার কারণ, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপ্রচলিত শক্তি খাতে ভারত যেভাবে র্যাপিড বিনিয়োগ করছে তাতে মনে করা হচ্ছে, বিশ্বে অপ্রচলিত শক্তি বাজারে ভারত খুব বড়সড় একটা ভূমিকা পালন করবে। আপনার কি মনে হয়? অপ্রচলিত শক্তিখাতে বিনিয়োগ করার এটাই কি সঠিক সময়?
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ