Trending
প্রতিবাদে সামিল প্রায় ২৫০০ ব্লিঙ্কইট ওয়ার্কার্স।
দিল্লি এবং পাশ্ববর্তী এলাকায় বন্ধ হয়েছে প্রায় ১০০ টিরও বেশি ডার্ক স্টোর।
পে স্ট্রাকচার পরিবর্তিত হতেই রাশভারী ব্লিঙ্কইটের ওয়ার্কার সোসাইটি।
ব্লিঙ্কইট নিয়ে নাস্তানাবুদ জোম্যাটো, প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে তাদের ১০ মিনিটের ডেলিভারি সার্ভিস।
১০ মিনিটে বাড়িতে বাজার এখন ইতিহাস। কুইক কমার্সের জামানায় নাকি বন্ধ হতে চলেছে কুইক ডেলিভারি সার্ভিস! প্রথমে ওলা তারপর একে একে জিওমার্ট, ডুইজো আর এখন ব্লিঙ্কইট। কুইক কমার্স পরিষেবা দেওয়া থেকে কার্যত দূরে সরে আসছে একের পর কোম্পানি। বিষয়টা যতটা না চিন্তার, তার চেয়েও বেশি আতঙ্কের।
২০২১-সালে কোভিডকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল কুইক কমার্স। ক্রেজ এতটাই ছড়িয়েছিল যে এই প্রথম কোন ইন্ডিয়ান স্টার্ট আপ শুরু হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই ১.৯৫ বিলিয়ন ডলারের ফান্ডিং রেইজ করেছিল। একটা স্টার্টআপ মানে- প্রচুর কর্মসংস্থান, লোকাল ডেভলপমেন্ট, এবং অবশ্যই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। আর সেইধরণের স্টার্টআপ লসের কারণে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে, ইন্ডিয়ান ইকনমির জন্য যে বিষয়টা বিশেষ সুখকর নয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কিন্তু আমার প্রশ্নটা একটু আলাদা। ভারতের মতো বাজারে কুইক কমার্স সার্ভিসের গুরুত্ব ঠিক কতটা? আর কেনই বা টিকে থাকার লড়াইয়ে এতটা ধুঁকতে হচ্ছে তাদেরকে? অদূর ভবিষ্যতে কুইক কমার্স সার্ভিসের একজিসটেন্স আদৌ থাকবে তো?
১০ মিনিটে দুয়ারে পরিষেবার বিষয়টা বেসিক্যালি শুরু হয়েছিল ৩০ মিনিট ধরে। ১৯৯৯ সালে ওয়েবভ্যান বলে একটি কোম্পানি পথম এই পরিষেবা চালু করে। ওয়্যারহাউস থেকে শুরু করে চেকপয়েন্ট, অ্যালগোরিদম একদম আঁটসাঁট ব্যবস্থাপনা ছিল সেই সময়ই। মাত্র কয়েকদিনের মাথায়, ৬ বিলিয়ন ডলারের ভ্যালুয়েশনে ইউনিকর্নের তকমা পায় কোম্পানিটি। কিন্তু সাফল্যের মুকুট বেশিদিন টেকেনি, শুরুর ঠিক তিন বছরের মাথায় দেউলিয়া এবং সবটা শেষ হয়ে গেল। অ্যাগ্রেসিভ এক্সপানশন, টারগেটিং প্রাইস সেনসিটিভ মাস মার্কেট কঞ্জিউমারস এবং স্ক্রাচের মাধ্যমে নিজস্ব ইনফাস্ট্রাকচারাল ডেভেলপমেন্টের আইডিয়া তাদের মার্কেটে টিকতে দিল না। রেকর্ড টাইমে গ্রসারি ডেলিভার করার কমিটমেন্টই শেষমেশ তাদের দেউলিয়া করে দিল। কারণ প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে গিয়ে তারা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করছিল।
এসব শুনে হতাশার কিছু নেই। কারণ সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট বলছে, ইন্ডিয়ার কুইক কমার্স প্ল্যাটফর্ম ৩০০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে। রিপোর্টের সঙ্গে একেবারে একমত টাটার বিগবাস্কেটও। এই মুহূর্তে ভারতে ম্যাক্রো ইকোনমিক স্লো-ডাউন নজরে পড়লেও আগামী দিনে এই ইন্ডাস্ট্রি নাকি গ্রো করবেই। আমি না। রিপোর্ট বলছে। তাই এখনও প্রচুর কোম্পানি স্ট্রাগল করে চলেছে।
আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন। এখন এত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। প্রতিযোগিতার বাজারে স্ট্রাগল কেন করছে? তার অনেক কারণ রয়েছে। প্রথমত, তারা হিউজ ক্যাশব্যাকের অফার দিয়ে আপনাকে প্রলভন দেখায় যাতে আপনি অন্য কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার না করে। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত প্রলভনের মাধ্যমে ড্রাইভারদের ইন্সেন্টিফাই করা। যেটা জেপ্টো বা ব্লিঙ্ককিট এর আগেও করেছে। নেক্সট থিং ইস দ্যাট ডার্ক স্টোরে রাখা প্রোডাক্টের কোয়ালিটি মেন্টেন করা। স্পেশ্যালি স্টেন ফুডের ক্ষেত্রে, যা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
এখানেই শেষ নয়। আজকের দিনে ভারতে দাঁড়িয়ে কুইক কমার্স সার্ভিসের অ্যাভারেজ অর্ডার ভ্যালু মাত্র ৪০০ টাকা। শুধুমাত্র ফ্রেশ ফুড ছাড়া যে কোনোরকমের গ্রসারি আইটেমে তারা মাত্র ১০% প্রফিট করে, which is really razor thin. কাজেই এই প্রফিট মারজিনে ভারতের বাজারে সারভাইভ করাটা বেশ শক্ত। আর এটুকু অর্ডার যদি ১০ মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি করতে হয়, তাহলে তো বিষয়টা টেন্ডস টু ইম্পসিবল।
লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট। একটা স্পেসে যত বেশি কম্পিটিটর পপ-আপ করবে, কম্পিটিশন তততাই হার্ড হবে। তখন ১০% এর ডিস্কাউন্ট মার্জিন বেড়ে ২০% হবে। তারপর সেটাকে মাত দিতে ২০% হবে ৩০%।
ভিওঃ এবং এইভাবে একেকটা কম্পিটিটর মাটিতে মিশতে শুরু করবে এবং লড়াই শুরু হবে মাত্র দুজনের মধ্যে। মোস্ট অফ দ্য কঞ্জিউমার সেগ্মেন্টে আপনি দুজন উইনারই দেখতে পাবে। লাইক জোম্যাটো-সুইগি, ওলা-উবের। আর ডুওপলিকে বাকি কম্পিটিটররা মোটামুটি অ্যাক্সেপ্ট করে নিয়েছে। আর তাই বাকীরা স্ট্রাগলই করছে। ভারতের সিনারিওটা অ্যাটলিস্ট এটাই।
এই স্ট্রাগল্টা কিছুটা কমাতে পারে স্ট্র্যাটেজি। ডার্ক স্টোর হচ্ছে এই ফিল্ডে সারভাইভ করার সবচেয়ে স্মার্ট এবং ইম্পরট্যান্ট ক্রাইটেরিয়া।
ডার্ক স্টোর কি? যেকোনো কুইক কমার্স প্ল্যাটফর্ম এলাকায় প্রতি ১ কিমি রেডিয়াসে একটা করে হাব বানায়, যেখানে সমস্ত প্রোডাক্ট স্টোরড থাকে। এবং ১০ মিনিট ডেলিভারি করা ইজি হয়। আর সেখানেই আপনাকে স্ট্র্যাটেজিক্যালি আপনার এলাকার মানুষের ডিম্যান্ড বুঝে অ্যাস ওয়েল অ্যাস প্রোডাক্টের মার্কেট সাইজ বুঝে ডার্ক স্টোর সাজানোটা ইম্পরট্যান্ট।
এবার আসি অপিনিয়ন পার্টে। ভেবে বলুন তো, ভারতের বাজারে এই ১০ মিনিট ডেলিভারির গুরুত্ব ঠিক কতটা? ভারতীয়দের কি সত্যিই এর কোন প্রয়োজন আছে? যদি আমার মতামত জানাই, তাহলে বলব, আমার মনে হয় এই ১০ মিনিট ডেলিভারির বিষয়টা একটা কমপ্লিট মার্কেটিং গিমিক। ব্লিঙ্কইট বলুন বা জেপ্টো এরা প্রত্যেকেই গ্রসারি ডেলিভারি কোম্পানি এবং দিনের শেষে তারা প্রত্যেকেই চাইবে আপনার ট্রাস্ট অর্জন করতে। এবং এদের কম্পিটিশনটা এখানেই। আর সেই জন্যেই এত স্ট্রাগেল। কঞ্জিউমার নিড তো ডেফিনেটলি রয়েছে এবং থাকবেও। কিন্তু লং টার্মে কঞ্জিউমার নিডের রেস্পেক্টে এই কোম্পানিগুলো কতটা প্রফিটেবল থাকবে, তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ