হ্যারি পটারের দুনিয়া দেখে মজেছিলেন সকলেই। আট থেকে আশি সকলের খুব পছন্দের তালিকায় এখনো হ্যারি পটার। লেখক জে কে রাউলিং-এর এই বই বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত বই-এর তালিকায় রয়েছে। আর সিনেমায় সেই ম্যাজিকাল জার্নি আমরা দেখতে পেয়েছি যার প্রভাব শুধু ইউরোপ বলে নয়, ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে। তারই সৌজন্যে আমরা সকলেই দেখেছি সেই ম্যাজিকাল বিশ্বে নানান সব অস্ত্র। সবই যেন জাদুর কাঠিতে ছোঁয়ানো। তখন মনে হত এমন অস্ত্র যদি আমাদের হাতে থাকত, তাহলে কত কিই না করে যেত। আমরা ভেবেছি, আর চিন সেটা কিছুটা হলেও করে ফেলেছে। আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে সব দেশ। কারণ চিন হ্যারি পটারের যে অস্ত্র বানিয়ে ফেলেছে সেটা যদি সত্যিই তারা কাজে লাগাতে শুরু করে তাহলে চিনের শত্রু দেশগুলোর সমূহ বিপদ। কী সেই অস্ত্র জানেন? ইনভিসিবিলিটি ক্লোক বা অদৃশ্য চাদর। এই চাদর গায়ে চাপালেই গায়েব। অবাক হচ্ছেন তো? পুরোটা শুনুন তাহলে। সঙ্গে বলব এই অস্ত্র তৈরি করতে কত টাকা খরচ করল চিনা সরকার।

চিনের গবেষক চু জুনহাও। তিনিই বানিয়ে ফেলছেন এমন একটা অস্ত্র যার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে হ্যারি পটারের ইনভিজিবিল ক্লোকের। বলা হচ্ছে, গবেষক চু জুনহাও যা বানিয়েছেন তা কার্যত বিজ্ঞানী মহলকে চমকে দিয়েছে আর ভয় ধরিয়ে দিয়েছে চিনের শত্রু দেশগুলিকে। আমরা সকলেই হয়ত ইনভিজিবল ক্লোকের ব্যবহার দেখেছি বা পড়েছি। হ্যারি পটারের সিরিজে এই অস্ত্রটির মোক্ষম প্রয়োগ আমাদের সকলকেই চমকে দিয়েছিল। চোখের সামনে গায়েব হয়ে যাবেন, ঘোরাফেরা করবেন- কেউ দেখতেও পাবে না। এই চাদর গায়ে চাপালেই গায়েব। তবে এমন এক ইনভিজিবল ক্লোক কিভাবে তৈরি করলেন তিনি? চিনা নিউজপেপার বলছে, এই ক্লোক তৈরি করার জন্য বিজ্ঞানী চু জুনহাও ব্যবহার করেছেন অ্যাডভান্সড লাইট ম্যানিপুলেটিং মেটিরিয়াল। যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এই ক্লোক। এই চাদর গায়ে চাপালেই উধাও হতে পারেন আপনি।

বলা হচ্ছে, এই ইনভিজিবল ক্লোক বানানোর জন্য যে প্রযুক্তি চিনা গবেষক ব্যবহার করেছেন তা আলোকে কার্যত ধোঁকা দিয়ে ফেলেছে। মানে যা খালি চোখে দেখা যায়, তাকে আর দেখা যাবে না। এভাবেই একটা পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছেন এই বিজ্ঞানী। এবং অনেকেই মনে করছেন এই ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে অপটিক্যাল টেকনোলজির দুর্দান্ত একটা দিক খুলে যাবে। ভবিষ্যতে এর ব্যবহার কার্যত মারাত্মক হতে পারে। কিরকম? চিনা গবেষকের এই প্রযুক্তি যদি সত্যিই আরও অ্যাডভান্সড হয় তাহলে চিনা সরকার তাকে জাতীয় নিরাপত্তায় ব্যবহার তো করবেই। আবার একইসঙ্গে ব্যবহার করবে নানা কাজে। তার মধ্যে অন্যতম সামরিক খাত। আর এটা নিয়েই চিন্তা বাড়ছে শত্রু দেশগুলোর। মনে করা হচ্ছে, অদৃশ্যে থেকে যুদ্ধ করার এই প্রক্রিয়া চিনা সেনাদের অনেকটা এগিয়ে রাখবে। মানে তারা শত্রু সীমান্তে গিয়ে একের পর এক যুদ্ধ চালাতে পারবে, এদিকে তাদেরকে দেখাও যাবে না। মনে করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে যেদিকে এগোচ্ছে তারপর এই প্রযুক্তি কার্যত শিংপিং-এর সরকারকে বেশ কয়েকধাপ এগিয়ে রাখছে। এমনকি রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, গবেষণা খাত সর্বত্র চিন এই ব্রহ্মাস্ত্র ব্যবহার করেই কেল্লা ফতে করা কোন ব্যপার নয়। বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, প্রাথমিকভাবে এই অস্ত্র বিশেষ কিছু করতে না পারলেও ভবিষ্যতে এটাই চিনাদের জন্য মোক্ষম অস্ত্র হয়ে উঠবে। আর সেটা হলে শত্রু ঘাঁটি ওলটপালট করে দিতে পারবে তারা, একেবারে সকলের আড়ালে থেকে। হ্যারি পটারের এই অস্ত্র তৈরি করে যা খেল দেখিয়ে দিয়েছে চিন তারপর চিনের এই প্রযুক্তির ফাঁক কোথায় রয়েছে মানে কিভাবে এই প্রযুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা প্রযুক্তি নিয়ে আসা যায় সেটা নিয়েই হয়ত ভাবতে বসেছেন বিজ্ঞানীদের অনেকে। তবে এই প্রযুক্তি তৈরি করতে কত খরচ হল সেই বিষয়েও জানা যায়নি কিছু।

বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ