মহিষাসুর বধের জন্য দশভুজার হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন সকল দেবতারা। তবে বর্তমান সময়ে অস্ত্র তুলে দেওয়ার কাজটি করছেন নবদ্বীপের অধিকারী পরিবার। বংশ পরম্পরায় যারা দশভুজার অস্ত্র তৈরি করছেন এবং পাঠিয়ে দিচ্ছেন বাংলা সহ ভিন রাজ্যে।

নদীয়া জেলার নবদ্বীপের অধিকারী পরিবার প্রায় চার পুরুষ ধরে করছেন অস্ত্র তৈরির কাজ। আর শুধু পরিবারের বয়স্করাই নন। অস্ত্র তৈরির কাজে হাত পাকিয়েছেন পরিবারের আধুনিক প্রজন্ম। বড়দের কাছ থেকে হাতেকলমে শিক্ষা নিয়ে এখন অস্ত্র তৈরির ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাঁরা। আগে একটা সময় টিন দিয়ে এই অস্ত্র তৈরি হত। বর্তমানে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অস্ত্র তৈরি হচ্ছে পিতল, তামা, স্টেইনলস স্টিল দিয়ে। আর তাই দিয়েই নিপুণ দক্ষতায় কাজ করে যাচ্ছেন অধিকারী পরিবারের ইয়ং জেনারেশন।

বছরের অন্যান্য সময় অধিকারী পরিবারের ব্যস্ততা মোটের উপর একরকম থাকলেও দুর্গা পুজোর সময় ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেকটা। মা দুর্গার অস্ত্র তৈরি করা কি চাট্টিখানি কথা!

অতিমারির কারণে গেল বছর অর্ডার একটু কম থাকলেও এই বছর নাওয়া খাওয়া ভুলতে বসেছে অধিকারী পরিবার। যে সকল ক্লাব, বারোয়ারি পুজোর অর্ডার নেওয়া আছে এখন তাদের হাতে দেবী দুর্গার অস্ত্র তুলে দিতে না পারলে যেন শান্তি নেই। আর শুধু বাংলায় নয়। তাঁদের তৈরি অস্ত্র ভিন রাজ্যে দশভুজার হাতেও পৌঁছে যায়।

দেবীর হাতে অস্ত্র না উঠলে কি দশভুজার রূপ পরিপূর্ণতা পায়? অসুর নিধনের জন্যই তো দেবীর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন দেবতারা। আজ নবদ্বীপের অধিকারী পরিবার এই অস্ত্র তুলে দিচ্ছেন দেবীর হাতে। নিপুণ দক্ষতায় দেবীর অস্ত্রসজ্জা পরিপূর্ণতা পাচ্ছে। অসুর যেমন নিধন করেছিলেন দেবী, তেমনি করোনাসুর কে কবে নিধন করবেন দশভুজা? আপাতত সেই আশাতেই তো বসে রয়েছে গোটা বিশ্ববাসী।

রনি চ্যাটার্জী
নদীয়া