Daily
আম, জামের পাশাপাশি বাঙালির গ্রীষ্মকালীন ফলের লিস্টে তরমুজের জায়গাটা কিন্তু বেশ উপরের দিকেই। গরমকালে রোদে পুড়ে বাজার গেছেন, অথচ তরমুজ নিয়ে দর কষাকষি করেননি, এমন মানুষ তো হাতে গোনা। হবে নাই বা কেন বলুন! রোদে পুড়ে বাড়ি ফেরার পর একটুকরো ঠাণ্ডা তরমুজ বা এক গ্লাস ঠাণ্ডা তরমুজের রস- আহা! স্বর্গসুখ। ডায়াবেটিস থেকে ডাইজেশন সিস্টেম কন্ট্রোল, হার্টের খেয়াল কিংবা হাই প্রেসার কমানো, এই সবটা নিয়ন্ত্রণ করতে তরমুজের জুরি মেলা ভার।
এখন তরমুজের পিক টাইম। আর বঙ্গালির এই প্রাণের প্রিয় তরমুজকে নিয়েই প্রতিবছর একটা বিশাল ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড চলে, নদীয়ার হরিণঘাটার সিঙ্গা বাজার এলাকার ভাণ্ডারখোলায়। বলতে গেলে, বাংলার অন্যতম বৃহৎ তরমুজের আড়ত রয়েছে এই এলাকাতেই। বছর কুড়ি আগে এখানে তরমুজের ব্যাপক পরিমাণে চাষ হলেও, বর্তমানে আবহাওয়ার কারণে চাষের সেই বাজার নেই। তবে, বাইরের সমস্ত জায়গা থেকে তরমুজ আসে এখান থেকে। তারপর এখান থেকেই বাংলার কোণায় কোণায় সেই তরমুজ পৌঁছে যায়। আশেপাশের গ্রামের প্রচুর মানুষ এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
এলাকার প্রায় ২২/২৪ টা আড়তে কম করে ৪০/৫০ জন লেবার কাজ করেন এই সময়। সকাল থেকে রাত হাড় ভাঙা খাটুনি শেষে যে মজুরিটুকু পান, তাতে কোনরকমে সংসার চলে তাদের।
ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে জুন মাস পর্যন্ত চরম ব্যাস্ততা থাকে এই অঞ্চলে। কখনও স্থানীয় আড়তদারদের হাত ধরে, কখনও বা ছোট ব্যবসায়ীদের গাড়িতে চাপিয়ে এই তরমুজ পৌঁছে যায় ধুলাগঢ়, ঘটকপুকুর সহ কোলকাতার বিভিন্ন মলে। আর এইকদিন এখানকার এই তরমুজ সাপ্লাইকে কেন্দ্র করে জমজমাট থাকে পরিবহণ ব্যবসাও।
সবমিলিয়ে এই তরমুজের হাত ধরেই এলাকায় ব্যবসায়িক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে এই সময়। একটা বড় অংশের মানুষের কর্মসংস্থানের খেয়াল রাখে এই তরমুজের মরশুম। এক কথায় এই তরমুজের জন্যই বদলে গিয়েছে সিঙ্গার অর্থনৈতিক চালচিত্রটা।
সুব্রত সরকার
নদীয়া