Academy
এই তো শীত শীত ভাব। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে হাত ভর্তি করে পানি ফল নিয়ে আসার দিন। শীতকাল, পানিফল, কমলালেবু এসবেরই সময়। না! পানিফলের গুনাগুন কী বা কেন খাওয়া উচিৎ এসব নিয়ে কথাবার্তা আজ নয়। আজ আপনাদের নিয়ে যাব পানিফলের সবচেয়ে বড় বাজার ঘোরাতে।
স্বাদে বিস্বাদ কিন্তু পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলের বাজার যে এত বড় হতে পারে, সেটা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই ফল চাষ থেকে শুরু করে বিক্রি- এই পুরো প্রসেসটার সঙ্গে এত মানুষ জুড়ে থাকতে পারে, সত্যি বলতে সেখানে না গেলে এটা বিশ্বাস করা সম্ভব হত না।
স্টেশনের পাশেই রয়েছে নদিয়ার সেই বাজার যেখানে সস্তায় পুষ্টিকর এই পানিফল পাওয়া যায়। বাজারের টাইমিং ফিক্সড। ভোর ৬টা থেকে ১০ টা। সেই সময় শিয়ালদা স্টেশনের ব্যস্ততাকেও হার মানাবে এখানকার ব্যস্ততা। দূর দূর থেকে পাইকারি এবং খুচরো ব্যবসায়ীরা আসছেন, চলছে কেনাকাটা, দরদাম, একটা ভালোরকমের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড। কিন্তু এখানে গিয়ে জানা গেল যে এই বছর পানিফলের বাজার অনান্যবারের তুলনায় একটু খারাপ।
এই কালিনারায়ণপুরের আশপাশ এলাকায় প্রায় ৪০ বিঘা জলাজমির ওপর চাষ চলছে পানিফলের। কাজেই হাতবদলের প্রশ্ন নেই। জলাভূমি থেকে পানিফল সংগ্রহ করে চাষিভাইরা সোজা চলে আসছেন এই বাজারে। কিন্তু এই বছর বৃষ্টিপাত কম। বৃষ্টির ঘাটতি মেটাতে কেউ কেউ পাম্পের জল ব্যবহার করলেও অনেকেই খরচের কারণে তা করে উঠতে পারছেন না। তাই অন্যবারের তুলনায় ফলন বেশ কম।
মাসে তিন থেকে চার বার পানিফল সংগ্রহ করা যায়। সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফল তোলা শুরু হয়ে জানুয়ারি পর্যন্ত কম বেশি ফল পাওয়া যায়। বিঘে প্রতি জমিতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচের বিনিময়ে বিঘে প্রতি লাভের অঙ্কটা কিন্তু নেহাত খারাপ নয়-প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
শীতকালীন অর্থনীতিতে পানিফলের গুরুত্ব যে কতটা, সেটা বোধ হয় কৃষির সঙ্গে যুক্ত সকলেই জানেন। তাই আলাদা করে বলার কিছু নেই। কিন্তু নদীয়া জেলার অর্থনীতির জন্য এই বাজার যে একটা স্ট্রং পয়েন্ট, সেটা যারা জানতেন না- তাদের জন্যই আজকের এই প্রতিবেদন।
সুব্রত সরকার
নদীয়া