Daily
ইতিহাসের পাতায় প্রথমবারের মতো ঠাঁই পায় ১৮৭৯ থেকে ১৮৮১-র মধ্যে। তারপর কেটে গিয়েছে এতগুলো বছর। তবু ৩৩০ ফুট উচ্চতা থেকে যখন পাহাড়ের গা বেয়ে ৭ হাজার ফুট উচ্চতায় উঠে পড়ে, তখন উপস্থিত পর্যটকদের মুখে ফুটে ওঠে দুর্দান্ত হাসি। সবাই এতক্ষণে বুঝতেই পেরে গেছেন, আমরা কথা বলছি টয় ট্রেন নিয়ে। যা হেরিটেজ ঠিকই। তবু এই হেরিটেজ বাহনে চড়ে পাহাড়ের পাকদণ্ডি রাস্তা বেয়ে উপরে ওঠার মজাটাই আলাদা। সমতল থেকে পাহাড়ে টয় ট্রেনে ভ্রমণ করার এই অভিজ্ঞতা সকলেই নিতে চান সমানভাবে। এবার সেই অভিজ্ঞতাই আপনারও হবে আরেকটু বেশি। কারণ দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে বা ডিএইচআর পর্যটকদের জন্য নিয়ে এসেছে এসি ভিস্তা ডোম কোচ সহ টয় ট্রেন। মনে করা হচ্ছে, এই পরিষেবা চালু হওয়ার কারণে পাহাড়ের বাঁক ধরে ছুটে চলা এনজেপি-দার্জিলিং ভিস্তা ডোম টয় ট্রেন পরিষেবা পেল এক অন্য মাত্রা।
সম্প্রতি এই পরিষেবা চালু হয় উত্তরবঙ্গে। পুজোর ঠিক আগে-আগেই। এই পরিষেবার উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বাড়লা, দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা, জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, সাংসদ খগেন মুর্মু সহ অন্যান্যরা। মনে করা হচ্ছে, এই পরিষেবা চালু হওয়ার কারণে পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় আরও অনেকটাই বাড়বে। যা উত্তরবঙ্গের ট্যুরিজম কেন্দ্রিক অর্থনীতির জমি অনেকটাই মজবুত করবে। এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা জানান,
এমনিতেই বছরভর দার্জিলিংয়ে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। বাঙালির অতি প্রিয় এই শৈল শহরে ভিড় আরও বাড়ে ঠিক পুজোর আগে আগেই। আর পর্যটকদের উপর নির্ভর করেই যেখানে অধিকাংশ মানুষের রুজিরুটি থাকে ভালোভাবে মিশে, সেখানে টয় ট্রেনে এই পরিষেবা বাড়তি উন্মাদনা যে তৈরি করবে, সেটা হলফ করে বলাই যায়। এমনিতেই টয় ট্রেন সবসময় একটা বাড়তি আকর্ষণের জায়গা দখল করে থাকে পাহাড়ে। তাই এসি ভিস্তা ডোম কোচের টয় ট্রেন নিঃসন্দেহে পাহাড়ের অর্থনীতিকে ভালোরকম অক্সিজেন দেবে। তবে এখানেই শেষ নয়। কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর – পূর্ব সীমান্ত রেলের উন্নয়নে কাজ করেই চলেছে। আগামীতে তিনধারিয়া, কার্শিয়ং সহ অন্যান্য স্টেশনগুলোকে আরও উন্নত করা হবে। এই বিষয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার অনসুল গুপ্তা জানিয়েছেন,
জানা গিয়েছে, সপ্তাহে অন্তত তিনটে দিন চালানো হবে এই ট্রেন। এনজেপি থেকে এই ট্রেন চলবে সোমবার, বুধবার এবং শনিবার। অন্যদিকে শৈলশহর দার্জিলিং থেকে এই ট্রেন চালানো হবে মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার এবং রবিবার। ভিস্তা ডোম কোচের ভাড়া রাখা হয়েছে যাত্রীপিছু ১৫০০ টাকা এবং রেস্তোরাঁর ভাড়া রাখা হয়েছে ১৩০০ টাকা। পুজোর সময় এসি ভিস্তা ডোম টয় ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই দার্জিলিংয়ের ট্যুরিজম কেন্দ্রিক অর্থনীতি অনেকটাই বুস্ট আপ হবে। পাহাড়ের ব্যবসা থেকে স্থানীয় মানুষের রুজিরুটির পথ চওড়া হবে এখন অনেকটাই। ফলে পাহাড়ের অর্থনীতি সবদিক থেকেই অনেকটা মজবুত হবে। আর বছর বছর ভিড় বাড়বে শৈলশহর দার্জিলিংয়ে।
অরূপ পোদ্দার
শিলিগুড়ি