Trending
আঠেরো এগারো দুহাজারবাইশ। মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে তৈরি হল নতুন মাইলস্টোন। সফল হল মিশন প্রারাম্ভ। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের লঞ্চ প্যাড থেকে সফল উৎক্ষেপণ হয় হায়দ্রাবাদের বেসরকারি সংস্থা ‘স্কাইরুট এরোস্পেস’-এর তৈরি রকেটটির। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভিক্রম-এস’। ইসরো সূত্রে জানা গিয়েছে, উৎক্ষেপণের পর সফলভাবেই রকেটটি তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে গিয়েছে।
দুরন্ত গতিতে এগোচ্ছে মহাকাশ গবেষণা। বাড়ছে মহাকাশ শিল্পের ডিম্যান্ড। গোটা বিশ্ব এখন ইন্টারনেট নির্ভর। তাই ইন্টারনেট ভিত্তিক স্যাটেলাইট আর তার নজরদারি করা এখন সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট ব্যাপার। এদিকে এই ঘোরদৌড়ে সামিল হতে না পারলে পিছিয়ে পড়বে ভারতের মহাকাশ গবেষণা। অন্যদিকে এত পরিমাণে রকেট বা স্যাটেলাইট তৈরির ফাণ্ড ইসরোর কাছে নেই। এখন উপায়? উপায় একটাই। দায়িত্ব বণ্টন। অতএব ঘোষণা করা হল ‘স্পেসকম নীতি’। যেখানে বলা হয়, এবার থেকে শুধুমাত্র ইসরোই নয়, রকেট এবং স্যাটেলাইট বানাতে পারবে প্রাইভেট মহাকাশ সংস্থাও। বেসরকারি মহাকাশ সংস্থাগুলিকে মিশন চালানর অনুমতি দেওয়া হলে তা গবেষণার জন্য সরকারি তহবিল উন্মুক্ত করে এবং ভারতকে বৈশ্বিক মহাকাশ বাজারে একটা বড় জায়গা নিতে সাহায্যও করে।
এখন আপনারা প্রশ্ন করতেই পারেন যে, এতদিন ধরে এই প্রাইভেট স্পেস ফার্মের সাহায্যও কেন নেয়নি ভারত সরকার? আসলে কি জানেন তো? গত তিন দশকে এই ইউএস বেসড প্রাইভেট সংস্থাগুলর সাথে হাত মেলানোয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার গবেষণায় এক আমূল পরিবর্তন আসে। এই সমস্ত প্রাইভেট স্পেস ফার্ম থেকে টেক সাপোর্ট চায় নাসা। যার ফান্ডিং দেয় মার্কিন সরকার। এরপরেই শুরু হয় মার্কিনী ম্যাজিক। বিশ্বের স্পেস ইন্ডাস্ট্রিতে গত তিন দশক ধরে একা নাসাই রাজত্ব চালিয়েছে। আর এত কিছু ঘটে যাওয়ার পর টনক নড়ে ভারত সরকারের। যে ডিসিশন আরও আগে নেওয়ার কথা ছিল, তা নেওয়া হল ২০২০ তে। প্রসঙ্গত, আগামী ১০ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ২০ হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়। যার শুভ উদ্বোধন শুরু হল ভিক্রম-এস-এর হাত ধরেই।
তবে, এখনও ভারত কিন্তু মহাকাশ শিল্পের বাণিজ্যিকরণের ব্যাপারে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যেখানে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের কাছে রয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার সেখানে ভারতের অগ্নিকুল কসমস বা স্কাইরুটের মতো সংস্থারা মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্যও পেয়েছে। যেটা মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একটা অন্যতম ডিসঅ্যাডভান্টেজ। যদিও ভারতীয় স্টার্ট আপগুলো এখনও প্রাক-বাণিজ্যিক পর্যায়ে রয়েছে। আর প্রথম মিশন সফল হলে আরও বড় ফান্ডিং আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করছেন তারা। এবং এই ভিক্রম-এস এর সফল উৎক্ষেপণ প্রাইভেট মহাকাশ গবেষণার যাত্রায় এক অন্যতম ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ