Daily
বাজেটে বাংলার প্রাপ্তি প্রায় শূন্য। যা পেল বিহার, তার কানাকড়ি পেল না বাংলা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট ঘোষণার পরে এই কথাটাই ঘুরে ফিরে উঠে আসছে। একইসঙ্গে বিরোধীরা মূলত তৃণমূল বিজেপিকে দুষছে, কারণ বাংলার শাসক শিবির মনে করছে এবারের বাজেট দেশের নয় বরং বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের। মানে বিজেপি যে দুটি রাজ্যের শাসকদলের ওপর ভরসা করেছে, তাদের জন্য একেবারে মুক্ত হস্তে দান করছে বিজেপি। যদিও বিজেপি বলেছে পূর্বদয় পরিকল্পনা, যেখানে বাংলা বিহার ঝাড়খণ্ড ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য সেটা গেম চেঞ্জার হতে চলেছে, অনেকেই বলছেন এই পরিকল্পনা আসলে বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের জন্যই। তাহলে বাংলার ভাগ্যে রইল কী?
বাজেট ঘোষণার সময় বাংলার নাম দুবার মাত্র করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। একবার রেলের কথা বলার সময় অমৃতসর-কলকাতা বাণিজ্যিক করিডরের কথা তিনি বলেছেন। আবার একইসঙ্গে বলেছেন গয়া কতটা উপকৃত হবে। অর্থাৎ অনেকেই বলছেন যে, এই বাণিজ্যিক করিডরের কথা ভাবা হয়েছে গয়া মানে বিহার কতটা উপকৃত হবে সেই কথা ভেবে। একবার পূর্বোদয় পরিকল্পনা আর একবার এই বাণিজ্যিক করিডর- মাত্র দুবারই বাংলার কথা শুনতে পাওয়া গেছে। বাংলার জন্য এবারের বাজেট কেন এতো মুখ ঘুরিয়ে থাকল? যেখানে কয়েকদিন আগে সিকিমে ব্যপক বৃষ্টির কারণে তুমুল বিপর্যয় নেমে আসে, আর সেই আঁচ এসে পড়ে উত্তরবঙ্গে, সেখানে সিকিমের জন্য বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে বরাদ্দের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু বাংলার জন্য কিছুই শোনা যায় নি। বিহার, অসম, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানে বাংলা একেবারে বাদ! বাজেটে বাংলার প্রাপ্তি শূন্য। এই নিয়ে কার্যত ময়দানে নেমে পড়েছেন বাংলার শাসক শিবিরের মাথারা। তৃণমূল মুখপাত্র সাকেত গোখলে বলেছেন, বিজেপি বাংলায় ভালো ফল করতে পারে নি। তাই খারাপ ফলের বদলা নিতেই বাংলাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। একইভাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে আক্রমণ করেছেন বাজেট নিয়ে। তিনি বলেছেন, ব্যর্থ সরকারের ব্যর্থ অর্থমন্ত্রীর পেশা করা এক ব্যর্থ বাজেট। জোট সঙ্গীদের ঘুষ দেবার জন্য এই বাজেট বানিয়েছে বিজেপি। সেই একই পথে হেঁটেছে, কুণাল ঘোষ। তিনি বলেছেন, এটা কেন্দ্রীয় বাজেট নয়। অন্ধ্র, বিহারকে তোষণের বাজেট কুর্সি রাখার জন্য। বাংলাকে আবার বঞ্চনা করা হল।
আর যদি পড়শি রাজ্যের দিকে তাকাই, তাহলে দেখা যাবে বিহারের জন্য এবারের বাজেটে পরিকল্পনার ছড়াছড়ি। সেখানে হবে নতুন বিমানবন্দর, নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, মেডিক্যাল কলেজ, পরিকাঠামোর উন্নয়ন। গঙ্গার ওপর তৈরি হবে দুই লেনের সেতু। ২৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হবে পাটনা-পূর্ণিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, বক্সার-ভাগলপুর মহাসড়ক, বোধগয়া-রাজগীর-বৈশালী-দ্বারভাঙ্গা সড়ক। এছাড়া পর্যটন খাতে বিহারের জন্য দরাজ থেকেছে কেন্দ্র। কিন্তু বাংলায় বিজেপির ক্রমশ শক্তিহ্রাসের কারণেই কি বাংলার ভাগ্য প্রসন্ন হল না এবারের বাজেটে? প্রশ্ন রইল আমাদের থেকে। মতামত জানান কমেন্ট বক্সে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ