Story
২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকের ফুড ফেস্টিভ্যালে বাংলা থেকে পাঠানো হয়েছিল এই চাল। এই চালকে উত্তরবঙ্গের গর্ব বললেও খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। কারণ স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্য এই চালের খ্যাতি আজ দেশ থেকে ছড়িয়েছে বিদেশে। তাই তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ কৃষকদের মধ্যে ক্রমশই বাড়িয়ে তুলছে কৌতূহল।
তুলাইপাঞ্জি চাল আগে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ, মোহিনীগঞ্জে উৎপাদিত হলেও, এখন কৃষি দফতরের সহযোগিতায় কালিয়াগঞ্জ এবং হেমতাবাদ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় এই ধান চাষ করা হচ্ছে। কৃষি আধিকারিকদের পরামর্শ মেনে স্বাদ ও সুগন্ধ বজায় রেখেই কম ফলনেও বেশি লাভ করছেন কৃষকরা। বর্তমানে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের সাড়ে সতেরো শো হেক্টর জমিতে তুলাইপাঞ্জী ধান চাষ আবাদ করছেন কৃষকবন্ধুরা। কেন এই ধানের চাষ শুনে নেওয়া যাক কৃষকদের মুখ থেকেই।
এমনিতে এই ধানের ফলন অন্যান্য ধান অপেক্ষা অনেকটাই কম। এমনি ধান থেকে যদি বিঘা প্রতি ১০ মণ ফলন পাওয়া যায়, তাহলে তুলাইপাঞ্জির ফলন প্রতি বিঘায় হয়ে থাকে ৮ মণের মত। তবু বিক্রির দিক থেকে তুলাইপাঞ্জি কৃষকবন্ধুদের লাভের হাসি অনেকটাই চওড়া করে দেয়। তাই কৃষি দফতরের পক্ষ থেকেও তুলাইপাঞ্জির ফলন বাড়াতে কৃষকবন্ধুদের আরো উৎসাহিত করা হচ্ছে।
তুলাইপাঞ্জী চাষের ক্ষেত্রে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সারের প্রয়োজন হয়। তবে খুব বেশি সার এই ধানের জন্য ব্যবহার করা হয় না। অন্যদিকে শুধু রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফলনও কম হয়। তাই জৈব সার ব্যবহার করা হয় স্বাদ এবং সুগন্ধের দিকটা মাথায় রেখে। তাই অন্যান্য ধানের সঙ্গে এই ধানের ফারাকটাও চোখে পড়ার মত।
একদিকে যখন অন্যান্য ধান মণ হিসেবে বিক্রি করলেও তেমন একটা লাভের মুখ থাকে না সেদিক থেকে দেখতে গেলে তুলাইপাঞ্জি চাল প্রায় ১২০০ টাকা মণে বিক্রি করছেন কৃষকরা। তাই ফলন কম হলেও এই ধানচাষেই আগ্রহ বাড়ছে কৃষকবন্ধুদের। আগে রায়গঞ্জের মোহিনীগঞ্জের তুলাইপাঞ্জি চাল বিদেশে প্রশংসা কুড়ালেও এখন কৃষি দফতর এই ধান চাষে উৎসাহ যোগাচ্ছেন কৃষকদের মধ্যে। তাই কালিয়াগঞ্জ ও হেমতাবাদ ব্লকেও তুলাইপাঞ্জী ধানের চাষ হচ্ছে ভালোরকম। আর অল্প খরচে বেশি লাভ করতে পারছেন বলে দিনের শেষে হাসি চওড়া হচ্ছে কৃষকদেরই।
অনুপ জয়সোয়াল
উত্তর দিনাজপুর