Daily
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ব্লকের ছোট্ট একটি গ্রাম এরাপুর। গ্রামটি রয়েছে হাউর এবং ক্ষীরাই-এর মধ্যে। এই গ্রামটি বিশেষভাবে পরিচিত গোঁসাইবাবার বিখ্যাত মন্দিরের জন্য। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এই গ্রামটি এখন আর মন্দিরের জন্য নয়, বরং বিখ্যাত হয়ে গেছে টোম্যাটো চাষের জন্য। গ্রামের প্রায় ৭০% কৃষক আজ টোম্যাটো চাষ করছেন। এবং আর্থিকভাবে তাঁরা এতটাই স্বচ্ছল হচ্ছেন যে, আজ টোম্যাটো ছাড়া অন্য কোন ফসল চাষ করতে মোটেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এমনকি যারা একটা সময় ধান চাষ করতেন, আজ তাঁরাও ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কারণ টোম্যাটো চাষ করে আয় পৌঁছে যাচ্ছে ১৪ গুণ বেশি। সেই বিষয়েই কথা বলতে এরাপুর গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিজনেস প্রাইম নিউজের প্রতিনিধি।
এরাপুর গ্রামের মাটি যথেষ্ট উর্বর। একটু পরিশ্রম করলেই সোনার ফসল ফলে। তাই কয়েক বছর আগে হাতে গোনা কিছু কৃষকবন্ধু ধান চাষ ছেড়ে নজর দিয়েছিলেন টোম্যাটো চাষে। ক্রমে দেখা যায়, টোম্যাটোর চাষ এতটাই লাভদায়ক হয়ে উঠছে যে, আজ একের পর এক কৃষকবন্ধু ধান চাষ ছেড়ে নজর দিচ্ছেন টোম্যাটো চাষে। এই গ্রামে, টোম্যাটো চাষ এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে আজ গ্রামের প্রায় প্রত্যেক কৃষকবন্ধুই টোম্যাটো চাষে নজর দিয়েছেন। এই বিষয়ে কী বললেন চাষিরা শুনে নেওয়া যাক।
কৃষকদের টম্যাটো চাষে এতটা আগ্রহ নজর কেড়েছে হর্টিকালচার ডিপার্টমেন্টের। আধিকারিকরা লক্ষ্য করেছেন কিভাবে কৃষকবন্ধুরা অন্যান্য চাষকে একপাশে সরিয়ে রেখে টোম্যাটো চাষকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আর যে কারণে তাঁদেরকেও সবদিক থেকে সাহায্য করছেন আধিকারিকরা।
প্রতিদিন গাড়ির পর গাড়ি আসে। সেই গাড়িতে বোঝাই হয় টোম্যাটো। তারপর ছড়িয়ে যায় নিজের রাজ্য তো বটেই, এমনকি ভিন রাজ্যেও। মূলত বিহার,ওডিষা,ঝাড়খন্ডের বাজার এরাপুরের টোম্যাটোর এখন দুর্দান্ত ডিম্যান্ড। কৃষকবন্ধুরা নিজেরাই বলছেন, এরাপুরের টোম্যাটোর যেমন রং, তেমনই তার স্বাদ। সব মিলিয়ে তাই বলাই যায়, এলাকার কৃষকদের এখন প্রধান আয়ের উৎস্য এখন টমাটো চাষ। আর একটা কথা, পাঁশকুঁড়া আগে মনে করা হত শুধু ফুলের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু যেভাবে দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসছেন টোম্যাটোর জন্য, তারপর আর শুধু ফুল নয়। এখন এরাপুর টোম্যাটো চাষের জন্য যে জনপ্রিয় হচ্ছে, সে কথা হলফ করে বলাই যায়।
প্রসূন ব্যানার্জী
পূর্ব মেদিনীপুর