Trending
দেশজুড়ে বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রায় ভ্যানিশ বিজেপি। ঝোড়ো ব্যাটিং চালাচ্ছে ইন্ডিয়া জোট। বাংলায় হোয়াইট ওয়াশড তো বটেই। পাশাপাশি অনান্য রাজ্যেও প্রায় ধরাশায়ী গেরুয়া শিবির।
দেশজুড়ে ১৩ টি আসনে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে ১০ জুলাই। বিধায়কদের মৃত্যু বা পদত্যাগের কারণেই উপনির্বাচনের প্রয়োজন হয়। আজ তার ফলাফল ঘোষণার দিন। আর সেখানেই ইন্ডিয়া জোট এখন রীতিমত দাপট দেখা যাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, বাংলার রায়গঞ্জ, বাগদা, রাণাঘাট দক্ষিণ এবং মাণিকতলা কেন্দ্র সহ, বিহারের রুপাউলি, তামিলনাড়ুর বিক্রভান্দি, মধ্যপ্রদেশের অমরওয়ারা, উত্তরাখণ্ডের বদ্রিনাথ ও মঙ্গলৌর, পাঞ্জাবের জলন্ধর পশ্চিম এবং হিমাচল প্রদেশের দেহরা, হামিড়পুর এবং নালাগড়ে উপনির্বাচনের ফলাফলের দিন আজ।
প্রথমেই নজর রাখবো বাংলার দিকে। বাংলায় দুরন্ত ব্যাটিং টিএমসি-র। বাংলার ক্ষেত্রে একেবারে চারে চার তৃণমূলের। সকাল থেকে বড়ো অঙ্কের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলই টিএমসি। আর দিনশেষে শেষ হাসিও হাসল সেই সবুজ ঝড়। লোকসভার পর বাংলার উপনির্বাচনেও ভরাডুবি বিজেপি-র। মানিকতলায় হার। সেখানে জয়ী প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সাধন পান্ডের স্ত্রী সুপ্তি পান্ডে। প্রায় ৬২ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে।
অন্যদিকে, জেতা ৩ আসনও হাতছাড়া বিজেপি-র। রাণাঘাট দক্ষিনে ৩৮ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের মুকুটমণি অধিকারী। মতুয়াগড় বাগদায় দীর্ঘ ২৫ বছর পর সবুজ ঝড়। ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর। যিনি প্রায় ৫৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হলেন। উপনির্বাচনের লড়াইতে একটা বড়ো অঙ্কের লড়াইতে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী।
বাংলার পাশাপাশি অনান্য রাজ্যের ছবিটা কেমন? সেটা এবার দেখে নেওয়া যাক। বাংলায় সবুজে সবুজে ছয়লাপ। অন্যদিকে গোটা দেশে ইন্ডিয়া জোটের বাজিমাৎ। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাংলা তথা গোটা দেশের উপনির্বাচনেই কিন্তু একটা জোরদার ধাক্কা খেয়েছে পদ্ম শিবির। বিজেপি বা এনডিএ জোটকে পিছনে ফেলে জিতছে ইন্ডিয়া জোট। লোকসভার পর প্রথম পরীক্ষার মুখোমুখি এনডিএ এবং ইন্ডিয়া। আর সেই প্রথম পরীক্ষাতেই ধরাশায়ী এনডিএ। উপনির্বাচনে ১৩ আসনের ১০-টিতেই জয়ের মুকুট ইন্ডিয়া-র মাথায়। বিহারের রুপাউলিতে এগিয়ে রয়েছেন এক নির্দল প্রার্থী। হিমাচলের হামিরপুর কেন্দ্রে ফুটেছে পদ্ম ফুল। বাকী দুই কেন্দ্রে যদি ইন্ডিয়া। পাঞ্জাবের একটি আসনে আপের প্রার্থী এবং তামিলনাড়ুর একটি আসনে জিতেছেন ডিএমকে প্রার্থী। যারা দুজনেই ইন্ডিয়া জোটের শরিক। মধ্যপ্রদেশের একটি কেন্দ্রে জয়ী বিজেপি এবং উত্তরাখণ্ডের দুটি কেন্দ্রের মধ্যে দুটিতেই জয়ী হয়েছে কংগ্রেস।
কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে লোকসভা ভোট। ৪০০ পার করার দাবি নিয়ে প্রতিটি নির্বাচনী মঞ্চে গলা ফাটালেও বিজেপির কপালে জুটেছে ২৪০ টি আসন। সেখানে এনডিএ-র হাত না ধরলে তারা হয়তো এবার সরকার গঠন করতেই পারত না। অন্যদিকে ২৩৪ টি আসন পেয়ে বিরোধী শিবির যথেষ্ট মজবুত আসন নিয়েছে। সবমিলিয়ে যা দেখা যাচ্ছে, লোকসভা ভোটের সময় ইন্ডিয়া জোটের পালে যে হাওয়া লেগেছিল তা এখনও বহাল রয়েছে। এদিকে সামনেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে আবার বিধানসভা ভোটের দামামা বাজবে। সেখানে টিকে থাকতে গেলে নতুন কোন না কোন স্ট্র্যাটেজি নিতেই হবে ইন্ডিয়া জোটকে। কারণ উপনির্বাচনের ফলাফল যে একটা ভালোরকম ধাক্কা দিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কাজেই আসছে বিধানসভা নির্বাচনে যদি নতুন কোন পরিকল্পনা না নেয় তারা, সেক্ষেত্রে সিঁদুরে মেঘ দেখার সম্ভাবনা যে আরও বেশি প্রকট হবে- তা বোঝাই যাচ্ছে।
সঙ্গে থাকুন দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।