Daily
প্রায় দেড়শো দিনের মাথায় আবার উপনির্বাচনে সেই বিজেপির মুখোমুখি হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাও আবার নিজের খাসতালুক ভবানীপুরে।
নন্দীগ্রামে বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে এবার ভবানীপুরে তৃণমূল নেত্রীকে এক লক্ষেরও বেশি ব্যবধানে জিতিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে একেবারেই নবাগতা বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের এই আইনজীবী যথেষ্ট বেগ দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে। সেই বেগের অনেকটাই ভোটের ময়দানে ফিরে আসবে না তো? এমন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
আসুন দেখে নেওয়া যাক ভবানীপুর বিধানসভার অতীতের নির্বাচনগুলোর ফলাফল। ১৯৫২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বরাবরই ভবানীপুর কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। কংগ্রেসের সেই শক্ত ঘাঁটি এখন বদলে গিয়েছে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে।
১৯৬৯ সালে সিপিএমের সাধন গুপ্ত বাদে বরাবরই এই আসনে মানুষ জিতিয়েছেন কংগ্রেসী ঘরানার প্রার্থীদের। সেই কংগ্রেসী ঘটনা এখানে বদলে গিয়েছে তৃণমূল ঘরানায়। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে ঐতিহ্যগতভাবে ভবানীপুরে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই উপনির্বাচন ঘিরে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে যে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে সেখানে গোটা রাজ্যের সঙ্গে গোটা দেশের জনগণ তাকিয়ে রয়েছেন এই উপনির্বাচনের দিকে। ভোটের প্রচার শেষ হয় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় পেয়েছিলেন ৫৭.৭১ শতাংশ ভোট। আর বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ পেয়েছিলেন ৩৫.১৬ শতাংশ ভোট। পরিসংখ্যানের বিচারেও এই কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাত পোহালেই ভবানীপুরে নির্বিঘ্নে ভোট সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। মোট ১৫ কোম্পানি আধা সেনা মোতায়েন থাকছে নির্বাচন পরিচালনার জন্য। একইসঙ্গে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে এই প্রথম ভবানীপুরের নটা থানায় দায়িত্বে থাকছেন একজন করে ডেপুটি কমিশনার। জারি হয়ে গিয়েছে ১৪৪ ধারা। চলছে মোড়ে মোড়ে পুলিশের নাকা তল্লাশিও।
সবমিলিয়ে ভবানীপুরে মার্জিন বাড়িয়ে নন্দীগ্রামের গ্লানি মুছে ফেলতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে বিশ্লেষকেরা দাবি করছেন, বিজেপির লক্ষ্য তৃণমূল নেত্রীকে আরো একবার পরাজিত করে মানুষের সামনে তৃণমূলের নৈতিক পরাজয়কে প্রতিষ্ঠিত করতে।
এখন কার বিশ্লেষণ কোথায় গিয়ে মিলে যাবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েক ঘন্টা।
ব্যুরো রিপোর্ট, বিজনেস প্রাইম নিউজ।