Trending
পাঁচ বছরের জন্য বিসিসিআই চুক্তি সারল স্পোর্টসওয়্যার জায়ান্ট অ্যাডিডাসের সঙ্গে। এই বিষয়টা নিজের মুখে সরাসরি জানিয়েছেন বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ। ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমের অফিশিয়াল কিট স্পনসরার হিসেবে অ্যাডিডাস এই চুক্তি সেরেছে। এই ডিল থাকছে চলতি আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ থেকে একেবারে ২০২৮ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত। বিষয়টা আরও খোলসা করছি। তার জন্য প্রতিবেদনটি দেখুন একেবারে শেষ পর্যন্ত।
পাঁচ বছরের জন্য বিসিসিআই এবং অ্যাডিডাসের যে চুক্তি হয়েছে, তার অঙ্কটা কত সেটা এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। তার কারণ কোন পক্ষ থেকেই সেভাবে অফিশিয়ালি বিষয়টা জানানো হয়নি। তবে অনুমান করা গিয়েছে, পাঁচ বছরের জন্য চুক্তির অঙ্কটা দাঁড়িয়েছে ২৫০ কোটি টাকায়। অ্যাডিডাস এবার ডিজাইন করবে, জার্সি ম্যানুফ্যাকচার করবে ইন্ডিয়ার মেন, উইমেন এবং আন্ডার-১৯ এর জন্য। চুক্তি মতন অ্যাডিডাস হয়ে উঠল একমাত্র সাপ্লায়ার। প্রত্যেক ম্যাচের জন্য অ্যাডিডাস কাজ করবে চুক্তি মতন। একইসঙ্গে ট্রেনিং ওয়্যার এবং ট্র্যাভেল ওয়্যার তৈরি করবে তারাই। আর এটা করা হচ্ছে মেন, উইমেন এবং ইউথ টিমের জন্য।
সূত্র মতে বলা হচ্ছে, প্রতি ম্যাচের জন্য অ্যাডিডাস পে করবে ৭৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু ভেবে দেখুন, ২০২০ সাল পর্যন্ত যখন বিসিসিআই-এর সঙ্গে চুক্তি ছিল নাইকির, তখন নাইকি ফি ম্যাচ বিসিসিআইকে দিত ৮৮ লক্ষ টাকা। তবে অ্যাডিডাসের সঙ্গে এই চুক্তি হবার কারণে সংস্থাকে প্রতি বছর বিসিসিআইকে দেবে ১০ কোটি টাকা। ২০০৪ সালে যখন বিসিসিআই ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমে কিট স্পনসরশিপ হিসেবে বিড ডেকেছিল, তখন নাইকি সবাইকে পিছনে ফেলে ডিলের অঙ্ক পৌঁছে দেয় ২০০ কোটি টাকায়- পাঁচ বছরের জন্য। নাইকির বিড সেই সময় অ্যাডিডাসের থেকে ৬০% বেশি ছিল। স্বাভাবিকভাবেই নাইকির দাপটে পিছিয়ে পড়ে অ্যাডিডাস। ২০১১ সালে নাইকি কনট্র্যাক্ট করে ২৭০ কোটি টাকার পরিবর্তে। এরপর আবার ২০১৬ সালে নাইকির সঙ্গে ডিলের অঙ্ক পৌঁছে যায় ৩৭০ কোটি টাকায়। আর এই গোটা সময় নাইকি থেকে যায় ইন্ডিয়ান টিমের কিট স্পন্সর হিসেবে। তারপর ঘুরে গেল চাল।
টি২০-র জন্য কলার ছাড়া ডার্ক ব্লু জার্সি, ওডিআই-এর জন্য কলার দেওয়া লাইট ব্লু জার্সি, এবং টেস্ট ক্রিকেটের জন্য সাদা জার্সির লুক প্রকাশ্যে আনে অ্যাডিডাস। লন্ডনের ওভালে ৭ জুন থেকে যে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়েছে, সেখানেই অ্যাডিডাসের তৈরি সাদা জার্সি পরে প্রথমবারের মতন মাঠে খেলতে নেমেছে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিম। যদি একটু ইতিহাসের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব, ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমের অফিশিয়াল জার্সি স্পন্সর করত আইটিসি। ২০০১ সালে এই ফিল্ডে ঢুকে পড়ে সাহারা। আর সেই স্পনসরশীপ থেকে যায় ২০১৩ সাল পর্যন্ত। এরপর অবশ্য স্টার ইন্ডিয়া, ওপ্পো, তারপর আসে বাইজু’স। এখানেই জানিয়ে রাখি যে বাইজু’সের চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে চলতি বছরের মার্চেই। কিন্তু বাইজু’সের নিজের অবস্থাই এখন কাহিল। ২০১৯ সালে বাইজু’সের ইকোনমিক কন্ডিশন যখন মধ্যগগনে, সেই সময় বিসিসিআই-এর চুক্তি ওপ্পোর থেকে কার্যত নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় এই এডটেক সংস্থা। তার জন্য বাইজু’স মূল্য চুকিয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৭৯ কোটি টাকা। যার মধ্যে বাইল্যাটারাল ম্যাচ পিছু তাদের দিতে হত ৪.৬১ কোটি টাকা। অন্যদিকে আইসিসি ম্যাচ প্রতি দিতে হত ১.৫৬ কোটি টাকা। ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত তারা চুক্তি মতন টাকা দিয়েছিল। এখন বিষয়টা হচ্ছে, এই চুক্তি কিছুটা টানা হয়েছিল ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত। আর সেটা কন্টিনিউ হত ২০২৩ মানে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু বাইজু’স নিজেদের আর্থিক পরিস্থিতি বুঝতে পেরেই কার্যত বিসিসিআই-এর কাছে অনুরোধ জানায় চুক্তি তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্য। আর যে কারণে নভেম্বরে ছ’মাস বাকি থাকতেই শেষ হয়ে যায় কন্ট্র্যাক্ট। বাইজু’স বেরিয়ে যায়। বিসিসিআই ডাক দেয়। তারপরেই এগিয়ে আসে অ্যাডিডাস। এবং অবশেষে সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ