Agriculture news
পৃথিবীর কোথাও তালিপামে ফুল ধরবে না। ফল ধরবে না আরও ১০০ বছর। তবে ২০১০ সালে বিশ্বের শেষ তালিপাম গাছটা যে ফল দিয়ে গিয়েছিল, সেখান থেকে চারা তৈরি করে এই প্রজাতিকে নতুন জন্ম দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বলা ভালো বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। কারণ ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয় দাবি করে যে তাদের ক্যাম্পাসেই নাকি বিশ্বের শেষ তালিপাম গাছটি ছিল। পুনর্জন্ম! ঠিক যেন ফিনিক্স পাখির গল্প। তবে এক্ষেত্রে পাখি নয়। গাছের নবজন্ম। সরকারী ভবনে বা উদ্যানে আকচার এখন যাকে দেখা যায়। বিশ্বাস করুন, খাতায় কলমে এই তালিপাম এখন একটা লুপ্তপ্রায় গাছ।
তালিপাম, নামটা বেশ অদ্ভুত তাই না? দেখতে অনেকটা তাল গাছের মতই। মিল রয়েছে পাম গাছের সঙ্গেও। ১০০ বছরে একবার ফুল ও ফল দেয়। আর ফুল হওয়ার পরই গাছের মৃত্যু হয়। তাই ফুলের নাম মরণফুল। উদ্যানসজ্জায় এই গাছের জুড়ি মেলা ভার। তাই তালিপাম গাছের ফলের বেশ ভালো ডিম্যান্ড। ফলগুলো দেখতে অনেকটা বড় সুপারির মতো। মুজিব শেখের মতো বেশ কিছু মানুষ এই ফল সংগ্রহের মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত। তারা তালিপামের ফল সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট নার্সারিতে বিক্রি করে। এবং সেই নার্সারি থেকে গাছের চারা তৈরি হয়। সেই চারা তারপর পৌঁছে যায় বিভিন্ন সরকারী ভবনে। উদ্যানে। বিভিন্ন রাজ্যে। এমনকি দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও।
মে থেকে জুলাই মাস নাগাদ ফল পাকে। তখনই তারা গাছ কাটা ছেড়ে মার্কেটে নেমে পড়েন। প্রতিটি গাছের ফল বাবদ গাছের মালিককে আড়াইশো থেকে তিনশো টাকা দাম দেন। শুধুমাত্র মুঁচিশাতেই প্রায় ১৫-২০ জন মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। গাছটা খাতায় কলমে লুপ্তপ্রায় হয়েও এই এতগুলো মানুষের রুজিরুটির ব্যবস্থা করছে। কাজেই শুধু উদ্যানসজ্জাই নয়। অর্থনৈতিকভাবেও এই গাছের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে, তা বলাই যায়।
সুব্রত সরকার
নদীয়া