Daily
কাবুলে তালিবানরা যখন সরকার গঠনের দোরগোড়ায়, তখন দিল্লিতে সাউথ ব্লকের আকাশে দেখা দিল সিঁদুরে মেঘ। দিল্লির কাছে খবর রয়েছে, আফগান সেনাদের ছেড়ে যাওয়া অস্ত্র এখন তালিবানরা এসকর্ট করে পৌঁছে দিচ্ছে আইএসআই-এর ডেরায়। ভারতের এই উদ্বেগ দোহাতে প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের মাধ্যমে তালিবানদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা হলেও এখনও পর্যন্ত তাতে বিশেষ পরিবর্তন আসেনি বলেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের খবর।
তালিবানরা কাবুল দখল করতেই হাতে এসে পড়ে আফগান সেনাদের ছেড়ে যাওয়া অত্যাধুনিক মার্কিনী অস্ত্রসম্ভার। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের অভিযোগ এই বিপুল অস্ত্রসম্ভারে নজর বসিয়েছে পাকিস্তান। এক্ষেত্রে তারা ট্রানজিট লজিস্টিক হিসেবে ব্যবহার করছে তালিবানদের।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর তালিবানরা ট্রাকে করে এই অস্ত্রসম্ভার পৌঁছে দিয়েছে পাকিস্তানে। পাকিস্তানে আইএসআই-এর মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে এইসব মারাত্মক অস্ত্র। যা শেষ পর্যন্ত ব্যবহার করা হবে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সংগঠনে।
পাকিস্তানের সরকারি দল তেহেরিক-ই-ইনসাফ এর নেত্রী যেভাবে আফগানিস্তানে তালিবানদের ক্ষমতা দখলে উৎফুল্ল হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বিবৃতি জারি করেছেন তা নিয়ে রীতিমত চিন্তিত রয়েছে দিল্লির সাউথ ব্লক।
ভারতের অভিযোগ তালিবানরা আফগান সেনার থেকে অন্ততপক্ষে ৫ লক্ষ এম-১৬ ও এম-৪ অ্যাসল্ট রাইফেল পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়েছে। এছাড়াও লাইট মেশিন গান, নাইট ভিশন গগলস সহ দুহাজার সাঁজোয়া গাড়ি ও ৪০টিরও বেশি বিমান, হেলিকপ্টার তুলে দিয়েছে। যদিও সরকারিভাবে ভারতের তোলা অভিযোগের কোন জবাব পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত দেয়নি।
এই বিপুল অস্ত্রসম্ভার পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির হাতে গিয়ে পড়লে তাদের পারস্পরিক রেষারেষি এমন পর্যায়ে পৌঁছবে যে পাকিস্তানের মাটিতেই শুরু হয়ে যাবে রক্তক্ষয়ী গোষ্ঠী সংগ্রাম। একেতেই অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের ইমরান সরকার। সেখানে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির হাতে বিপুল অস্ত্র পৌঁছনোর অর্থই হল পাকিস্তানের অর্থনীতির আরও বেহাল দশা। এদিকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত বিরোধে তালিবান গোষ্ঠী কী ভূমিকা নেবে এবং তার জেরে সীমান্তে উত্তেজনা কোন পর্যায়ে পৌঁছবে সেকথা যেমন অজানা তেমনই সেই উত্তেজনা আরও একবার সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানকে মুখোমুখি লড়াইয়ের ময়দানে নিয়ে আসবে নাতো? সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ভারত-পাকিস্তান সীমানা বরাবর ভারত যেমন সেনা সমাবেশ বৃদ্ধির কাজে হাত দিয়েছে তেমনই কড়া নজর রাখা হচ্ছে ভারত-চিন সীমান্ত অঞ্চলগুলিতেও।
ব্যুরো রিপোর্ট