Trending

সত্যজিত রায়ের সেপ্টোপাসের খিদে গল্পটা মনে আছে? যেখানে বটানিস্ট কান্তিবাবু এক মাংসাশী উদ্ভিদ নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েন? আজ আপনাদের তেমনি এক মাংসাশী উদ্ভিদের কথা বলব। তবে সে মানুষকে গিলে খায় না। বরং খায় পোকামাকড়। আর এই গাছটা কিন্তু কোনভাবেই কোন মানুষের জীবন নিয়েও ছিনিমিনি খেলেনি। বরং মানুষই চাইছে বেঁচেবর্তে থাকুক এই পতঙ্গভুক উদ্ভিদটি।
সপুষ্পক বা অপুষ্পক নয়। বহু বছর পর দেখা মিলল লুপ্তপ্রায় পতঙ্গভুক উদ্ভিদ, সূর্যশিশিরের। না না। জীবন বিজ্ঞান বইতে নয়। বাস্তবে। চলুন, আপনাদের নিয়ে যাই দুর্গাপুরের অন্তর্গত কাঁসাই থানার শিবপুর গ্রামে। একটা দুটো নয়। কর্দমাক্ত স্যাঁতস্যাঁতে জমিতে সার দিয়ে জন্মেছে ছোট ছোট লাল রঙের পতঙ্গভুক ভেষজ উদ্ভিদ সূর্যশিশির। আর যে কারণে গ্রামবাসীরা এখন সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে, যদি সংরক্ষণের কথা ভাবা হয় প্রকৃতির এই দানকে।
পাতার মধ্যে অসংখ্য সরু সরু শুঁয়ো থাকে। প্রকৃত শিকারীর মত ঘাস বা ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থেকে আকৃষ্ট করে পোকামাকড়কে। লাল রঙের গোলাকার পাতার মধ্যে থাকা অসংখ্য শুঁয়োর মধ্যে জমা করে রাখে এক প্রকার তরল। সুন্দর গন্ধ ছড়িয়ে আকৃষ্ট করে পতঙ্গদের। আর এমন এক উদ্ভিদের অস্তিত্ব তাদের গ্রামের মাটিতে আছে জানতে পেরে গর্বিত সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন সদস্য, প্রত্যেকেই। প্রায় প্রত্যেকের মুখেই শোনা গেলো সরকারি সংরক্ষণের সুর।
সূর্যশিশির নিয়ে ঠিক কী বললেন কেন্দ্রীয় কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানী সুব্রত সরকার, শুনে নেওয়া যাক।
প্রকৃতি আসলে প্রাণীজগতকে সমৃদ্ধ করে। অথচ প্রকৃতির এমন কত সৃষ্টিই আজ অনুকূল পরিবেশের অভাবে বিপন্ন। তাদেরকে যথাযথ সংরক্ষণ করা গেলে হয়তো বাস্তুতন্ত্রটাই অন্যরকম হত। শিবপুর গ্রামের পরিত্যক্ত জমিতে ছোট ছোট সুর্যশিশিরের উপস্থিতি হয়তো এমনই কোনো বার্তা দিলো আপামর জনগণকে।
কাঞ্চন দাস
দুর্গাপুর