Trending

জল, জঙ্গলের মানুষ তাঁরা। বেড়ে ওঠা সুন্দরবনে। তাই সুন্দরবন ছেড়ে এলেও শিকড়ের টান কি সহজে ভোলা যায়? দীর্ঘ চল্লিশ বছর কেটে গেছে। তবু কালীপুজোর রাতে ঘোর অমাবস্যায় তাঁরা পালন করে থাকেন এই সংস্কৃতি।
নদিয়ার হরিণঘাটা সুভাষ নগর গ্রামে বসবাস করছেন বাইশটি আদিবাসী পরিবার। এঁরা সকলেই দীর্ঘ চল্লিশ বছর হল ছেড়ে এসেছেন সুন্দরবন। কিন্তু এখনো ভাটা পড়েনি তাঁদের রীতিনীতিতে। তাই কালীপুজোর দিন তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে করছেন জাগরণ। কী এই জাগরণ, শুনে নেওয়া যাক তাঁদের মুখ থেকেই।
নাচগানের পাশাপাশি পূর্বপুরুষদের কথা ভেবে তাঁরা বিলাপ করেন। সুন্দরবনের ঐতিহ্য মেনে দেশীয় মদ দেশীয় হাড়িয়া খেয়ে সারারাত কাটিয়ে দেন। ডালা সাজিয়ে দেওয়া হয় পিঠে, পুলি। তবে এখানেই শেষ নয়। তাঁরা পুজো করেন গো দেবতার। এই পুজোয় তাঁদের অভাব দূর হয় বলেই তাঁদের বিশ্বাস। চলে ছাপড়া গান। ঠাকুর তলায় মিলিত হয়ে তাঁরা নিধন করেন কালো মুরগি। তারপর সবাই মিলে একসঙ্গে কাটিয়ে দেন গোটা দিন। এই ছাপড়া গান করেই। এই ছাপড়া গানের বিশেষত্ব কী? কেন করা হয় এই গান? বললেন আদিবাসী মহিলা প্রতিমা মাহাতো।
বিষাদ, আনন্দ একইসঙ্গে পূর্বপুরুষদের জানানো হয় শ্রদ্ধা, সম্মান। তাঁদের কেউ ভুলে যাননি পরবর্তী প্রজন্মরা। বরং তাঁরা বিশ্বাস করেন, কালী পুজোর অমাবস্যার রাতে তাদের পূর্ব পুরুষরা তাদের কাছে আসেন। মিলিত হন। সুন্দরবনের এই আদিবাসী সংস্কৃতি মেনে এখনো তাঁরা জাগরণ করে থাকেন। এটাই তাঁদের কাছে পৌষ পার্বণ। এটাই তাঁদের কাছে কোজাগরী।
সুব্রত সরকার
নদিয়া