Daily

ব্রহ্মাণ্ড। বলা ভালো, সুবিশাল কৌতূহলপুরী। প্রতিনিয়ত সেখানে কত যে ঘটনা ঘটছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। যা ঘটে, তার সিকিভাগ হয়তো আঁচ করা যায়। সিংহভাগটাই তার অজানা। আর অজানা জিনিসের প্রতি কৌতূহল যে থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। কাজেই প্রতি মুহূর্তে চলে পরীক্ষা, নিরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ। আসলে, মহাকাশে ঘটে যাওয়া খুব সামান্য ঘটনারই সাক্ষী থাকে জ্যোতির্বিজ্ঞান। আর এবারেও এমনই এক বিরল তথা নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ঘটনাটা কি জানেন? নক্ষত্রের আত্মহত্যা।
হ্যাঁ! একদম ঠিক দেখছেন। নক্ষত্ররাও আত্মহত্যা করে। মৃত্যু হয় নক্ষত্রদেরও। আর মৃত্যুর সময় ঠিক কি কি ঘটে? মানে ঠিক কি কি পরিবর্তন ঘটে, জানেন? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানেন। ব্রহ্মাণ্ডে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিকতম ঘটনায় অন্তত এমনই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকলো গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানমহল। ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লো এক দৈত্যাকার নক্ষত্র। আর শুরু থেকে শেষ-এই গোটা বিষয়টা ধরা পড়লো গ্রাউন্ড বেসড টেলিস্কোপে। রিয়েল টাইমে বিস্ফোরণে ফলে কোনও দৈত্যাকার নক্ষত্রের মৃত্যুর মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবী থেকে সুদূর ১২০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই দৈত্যাকার নক্ষত্রের মৃত্যু দেখলো জ্যোতির্বিজ্ঞান। অবস্থান তার NGC ৫৭৩১ গ্যালাক্সিতে। আকারে সূর্যের থেকে প্রায় ১০ গুণ বড়। ধ্বংসের পর টাইপ- ২ সুপারনোভাতে ভেঙে পড়েছে ওই দৈত্যাকার নক্ষত্র। নক্ষত্রটি নাকি নিজে নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই নক্ষত্রের মধ্যে ছিল হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং কোর বা কেন্দ্রস্থলে ছিল অন্যান্য আরও উপাদান। আর ঠিক যে কারনে, আত্মহত্যার সময় তুমুল বিস্ফোরণ ঘটায় এই জায়েন্ট স্টার।
মহাকাশবিজ্ঞানের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া এমন এক নাটকীয় মুহূর্ত আসলে মাইলফলক তৈরি করেছে বাস্তবে। এই প্রথম এতটা বিস্তারিতভাবে কোনো নক্ষত্রের মৃত্যু দেখলো জ্যোতির্বিজ্ঞান। গত ৬ জানুয়ারির এই ঘটনায় উন্মোচিত হয়েছে নতুন গবেষণার পথ। বদলেছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বহু ধারণা। আর এই ঘটনার ফলে সামনে এসেছে, নক্ষত্রের মৃত্যুর আগে ঠিক কি পরিস্থিতি থাকে। কিরকম পরিবর্তন ঘটে ব্রহ্মাণ্ডে। কেমন থাকে মহাকাশের আবহাওয়া, তাপমাত্রা। আর নক্ষত্রের এই আত্মহত্যার এই ঘটনা, জ্যোতির্বিজ্ঞান মহলে নিঃসন্দেহে একটা অ্যাসেট।
ব্যুরো রিপোর্ট