Trending

লাল মখমলের বাক্স যেন আলিবাবার গুপ্তধন। অতি যত্নে সাজানো থাকে বিভিন্ন ডিজাইনের গয়না। বাক্স খুলতেই চওড়া হয় ক্রেতার হাসি। ভবিষ্যতের ভিত মজবুতের অন্যতম চাবিকাঠি। কিন্তু একদিকে যখন এই গয়নাই ক্রেতাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে নিশ্চিন্দির বার্তা, তখন অন্যদিকে চরম অনিশ্চয়তা জমা হচ্ছে এই গয়না শিল্পের সঙ্গে যুক্ত একশ্রেণির মানুষের মধ্যে।
অতিমারির ভয় এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জেরবার সাধারণ মানুষ। তার কোপ সরাসরি পড়েছে গয়না বিক্রিতে। একইসঙ্গে দেখা দিয়েছে কাঁচামালের অভাব। যে কারণে কার্যত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন গয়নার বাক্স তৈরির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগরে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন চার পাঁচ হাজার শ্রমিক। রয়েছে সারি সারি কারখানা। আগে যেখানে এই বাক্স তৈরি করেই বহু মানুষের সংসার চলত স্বস্তিতে আজ সেইসকল মানুষরাই ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকটা ধন্ধে। বিক্রি কমেছে। তাই তাঁদের দৈনিক রোজগারেও নেমেছে ভাটা।
একদিকে মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে অতিমারির সংকট। পাওয়া যাচ্ছে না সঠিক দাম। তারউপর আবার কমে গিয়েছে মজুরি। যদি সেইভাবে ক্রেতাদের মধ্যে গয়নার চাহিদা না বৃদ্ধি পায় তাহলে কিভাবেই বা বাক্সের বরাত পাবেন তাঁরা? ফলে এই ব্যবসার ভবিষ্যৎ অনেকটাই হোঁচট খেয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে একের পর এক কারখানা। পরিবহন মসৃণ না হওয়ায় কাঁচামালের জোগানে অভাব দেখা দিয়েছে। আর সবমিলিয়ে কার্যত পথে বসার অবস্থা জুয়েলারি বাক্সের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের।
তবে শ্রমিকদের সংকটমোচনে বেশ তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। জুয়েলারি হাব তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। যা অসংগঠিত এই শ্রমিকদের এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে তাঁদের আর্থিক উন্নতির পথ অনেকটা মসৃণ করবে। জানালেন অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী।
সরকারের তরফ থেকে জুয়েলারি হাব তৈরি হলে তা শ্রমিকদের আয়ের পথ অনেকটাই মসৃণ করে দেবে। ঘুরে দাঁড়াবেন এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা। চালু হবে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা। হতাশার মেঘ কাটিয়ে আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠবে অশোকনগরের জুয়েলারি বাক্সের ব্যবসা।
দেবস্মিতা মণ্ডল, অঙ্কিত মুখার্জী
অশোকনগর