Trending

শ্রীলঙ্কায় চিনা দৌরাত্ম্য
ভারতের ব্যবসায়িক গ্রোথে ধাক্কা
তেল ব্যবসায় বড়সড় কামড় বসাচ্ছে চিন
তাহলে কি এবার ভারতের ব্যবসা লাটে উঠতে চলেছে
একের পর এক প্রশ্ন। আর সেই প্রশ্ন ক্রমশ জোরালো হচ্ছে চিনা প্রবেশের কারণে। তাহলে এখন সমস্যা- আদৌ কি ভারত পারবে চিনা প্রবেশ আটকাতে? শ্রীলঙ্কায় নিজেদের অধিকার ধরে রাখতে? আজকের ছোট্ট প্রতিবেদনে আলোচনা এটা নিয়েই।
শ্রীলঙ্কার জ্বালানী বাজারে মোটামুটি নিজেদের অধিকার ধরে রেখেছে লঙ্কা আইওসি বা লঙ্কা ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন। শ্রীলঙ্কার জ্বালানী ব্যবসায় যে সবসময় থাকে ফ্রন্ট ফুটে। লঙ্কা আইওসি ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের একটা শাখা। রাবণের দেশে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন প্রথম পা রাখে ২০০৩ সালে। তারপর থেকে লঙ্কা আইওসির ব্যবসা রমরমিয়ে চলেছে। বলা যেতে পারে ঐ দেশের পেট্রোল এবং ডিজেল ব্যবসার ১৬ শতাংশ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় লঙ্কা আইওসি। শুধু তাই নয়। একইসঙ্গে লুব্রিক্যান্ট, বিটুমিন বা বাঙ্কারিং-এর মতো সামুদ্রিক জ্বালানীর বাজারের ৩৫ শতাংশ নিজেদের অধিকারে নিতে পারে তাঁরা। কিন্তু গল্পের প্লট পরিবর্তন হতে শুরু করল যখন শ্রীলঙ্কার সরকার ভারতের কথা একেবারে ভুলে গিয়ে চিনা সংস্থা সিনোপেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিল। যে আসলে নিজেকে সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলল লঙ্কা আইওসির কাছে।
চিনের অন্যতম রিনাউন্ড তেল শোধনকারী সংস্থা সিনোপেক। যে পেতে চলেছে নিজের ব্যবসা সম্প্রসারণের দুর্দান্ত সুযোগ শ্রীলঙ্কার মাটিতে দাঁড়িয়ে। যেটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে সেলিয়ন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন যা আসলে শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল তেল সংস্থা, তারাই নাকি ১৫০-টি পেট্রোল পাম্প হাতে তুলে দিয়েছে সিনোপেকের কাছে। আগামী ২০ বছরের জন্য। তারপরেই কার্যত নড়েচড়ে বসেছে নয়া দিল্লি। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে রয়েছে হাম্বানটোটা বন্দরের কথা। চিনের আনুকূল্যে যা চিনেরই দখলে। প্রায় ১৯ বছরের জন্য এই বন্দরটি লিজ নিয়েছে চিন। যেখান থেকে সবধরণের বাণিজ্যিক কাজকর্ম চালানো খুব সহজ। আর এবার ৪০০ কোটি ডলারের একটা তেল শোধনাগার তৈরির প্ল্যান করছে কলম্বো। আর এই দায়িত্ব একদিকে যেমন পাচ্ছে সুজারল্যান্ডের ভিটোল তেমনই চিনের সিনোপেক। আর এতেই ভারতের ব্যবসা ভালোরকম মারধর খেতে পারে।
আসলে শ্রীলঙ্কা দেশটা চিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর পশ্চিমে পাকিস্তান এবং দক্ষিনে শ্রীলঙ্কা- এই দুটো দেশকে ব্যবহার করেই ভারতকে জুজুৎসুর প্যাঁচে ফেলতে চাইছে চিন। জিনপিং সরকার মনে করছে এর ফলে ভারতের ওপর একটা চাপ তৈরি তো হবেই। একইসঙ্গে ভারত মহাসাগরে ছড়ি ঘোরাতে পারবে তাঁরা। কিন্তু এটা কি সত্যিই সম্ভব? আর সেই কারণে শ্রীলঙ্কার দিকে সবিশেশ নজর রেখেছে চিন এবং ভারত দু’জনেই। তবে চিনের থেকে শিক্ষা নেয়নি শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার ভাঁড়ার যখন শূন্য হয়েছিল, তখন কিছুটা হলেও অক্সিজেন জোগাতে পেরেছিল একমাআত্র লঙ্কা আইওসি। সেই সময় প্রায় ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দেয় ভারত। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে সেই পুরোনো বন্ধু কোনদিক থেকে বিট্রে করছে এবং ধীরে ধীরে ভারতের ব্যবসাকে গিলে খেতে চাইছে। শ্রীলঙ্কার ইকোনমিক ক্রাইসিস গ্রাফের একেবারে ওপরের সারিতে উঠে এসেছিল। ফরেক্স রিজার্ভ প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতি যাতে না-হয় তার জন্যই বাজার আরও ছড়িয়ে দেবার দিকে মন দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। আর যে কারণে ভারত খানিকটা হতাশ আর খানিকতা বিরক্তি নিয়ে থাকলেও শ্রীলঙ্কা চিনের সঙ্গে থেকে বিষয়টাকে আরও এনক্যাশ করার চেষ্টা করছে। তবে শুধু চিন বলেই নয়। জ্বালানী ব্যবসায় আর যে দুজন রয়েছে তাঁরা হল আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া। আর যে কারণে মনে করা হচ্ছে, শ্রীলঙ্কার তেল ব্যবসায় হয়ত বা ভালোরকম মার খেতে চলেছে ভারত। আপনার কী মনে হয় জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন আর নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করে নিন বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ