Daily
ভোজনরসিক বাঙালির পাতে মাছ কিংবা মাংসের তরিজুতি যতই থাকুক না কেন, প্রথম পাতে শাক কিংবা তেঁতো থাকা মাস্ট। পাট পাতা থেকে নটে শাক। লাউ শাক অথবা লাল শাক। তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পুষ্টিগুণে ভরপুর এইসব রকমারি শাক। আর এই শাক চাষ করেই এলাকার অর্থনীতির চালচিত্র বদলে দিচ্ছেন নদীয়ার কল্যাণী ব্লকের বাবুডাঙ্গা, খালধার পাড়া, তেলিগাছা সহ বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা।
মরশুমি ফসল চাষের পাশাপাশি, বছরভর শাক চাষ করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। বছরের যে কোন সময় এই সমস্ত এলাকায় একবার ঢুঁ মারলে আপনার চোখে পড়বে বিঘের পর বিঘে জমিতে চাষ হচ্ছে সবুজ আর লাল শাক। মাঠে যেন রঙিন কার্পেট বিছিয়ে রেখেছেন চাষিভাইরা। এখানকার কম বেশি প্রায় সব মানুষই এই শাক চাষের সঙ্গে যুক্ত। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন এই কাজে সামিল হতে।
সারা বছরই শাক-পাতার ডিম্যান্ড বেশ হাই থাকে। তাই শাক চাষ করে মোটামুটি ভালো রকমেরই লাভ পাচ্ছেন চাষিরা। লাল শাক চাষের জন্য প্রয়োজনীয় বীজ তারা নিজেরাই তৈরি করেন। আর নটে শাকের জন্য নির্ভর করতে হয় কোম্পানির উপর। উৎপাদিত ফসল তারা বিক্রি করেন মদনপুর স্টেশন সংলগ্ন হাটে। আর সেখান থেকে একটা বড় অংশের সবজি যায় শিয়ালদার মার্কেটে। এছাড়াও অন্যান্য হাটেও রপ্তানি হয় এখনকার সবজি।
শুধুমাত্র বাবুডাঙা এলাকাতেই ৫০ থেকে ৮০ বিঘে জমিতে শাক সবজি চাষ করেন কৃষকেরা। শুধুমাত্র কৃষকেরাই নন। এখানে লেবার হিসেবেও কাজ করেন একটা বড় অংশের মানুষজন। সকালে ১৫০ টাকা আর বিকেলে ১০০ টাকা রোজের বিনিময়ে কাজ করেন তারা।
সারাবছর ধরে এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতে শাক সবজি চাষ করে মোটামুটি ভালোভাবেই সংসার চালাচ্ছেন এখানকার মানুষজন। কাজেই পুষ্টিগুণে ভরপুর এই শাক চাষ যে এখানকার অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যে বদল এনেছে, তা বলাই যায়।
সুব্রত সরকার
নদীয়া