Daily
প্রায় ১৯৮ বছরের মেলার ইতিহাস। একদিকে জমিদার বাড়ি, আরেকদিকে যমুনা নদীর ধার। যেখানে কৃষক থেকে ব্যবসায়ী থেকে ক্রেতা সবাই জড়ো হন একজায়গায়, পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র মশলা মেলায়। যেখানে মশলাই হচ্ছে বিকিকিনির একমাত্র বস্তু।
উত্তর ২৪ পরগণার গোবরডাঙ্গা জমিদারবাড়ি সংলগ্ন মাঠে প্রতি বছর পয়লা বৈশাখের দিন সূচনা হয় মশলা মেলার। চলে প্রায় ১০ দিন পর্যন্ত। সিংহদ্বার দিয়ে ঢুকে রাজবাড়ির সামনে দাঁড়ালে ইতিহাসই জানিয়ে দেবে এই মেলার গল্পকথা। ১২৩০ সালে তৎকালীন জমিদার কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় প্রথম এই মেলার সূচনা করেন। যেখানে কৃষকেরা উৎপাদিত ফসল মশলা বিক্রিও করতে পারবেন, একইসঙ্গে মেটাতে পারবেন জমিদারের খাজনা। তার জন্য জমিদার কালিপ্রসন্ন বেছে নিয়েছিলেন বৈশাখের প্রথম দিনটিকেই। মেলা ইতিহাসের কাহিনী ধরা পড়ল ঐতিহাসিকের গলায়।
আদা, হলুদ, শুকনো লঙ্কা, রসুন, ধনে, পেঁয়াজ কী নেই! সব ধরণের মশলার পসরা সাজিয়ে বসেছেন দূর দুরান্ত থেকে আসা কৃষক, বিক্রেতারা। বহু ব্যবসায়ী আছেন, যারা পাইকারি দরে বস্তা বস্তা মশলা কিনে নিয়ে যান। এই মেলায় নজর কাড়েন ক্রেতারাও। গোটা বছরের মশলা কিনে নিয়ে যান তাঁরা।
আগেরবছর অবশ্য ভাইরাসের থাবা পড়ায় একেবারেই বন্ধ ছিল এই মেলা। এই বছরে করোনা বিধি মেনে চালু হলেও মেলার রঙে পড়েছে ভাটা। মশলার বস্তা একটার ওপর একটা থরে থরে সাজানো। কিন্তু ব্যবসা তেমন নেই, বলছেন কৃষকরাই।
কালীপ্রসন্নবাবুর এই স্বপ্নের মশলা মেলার উদ্দ্যেশ্য জমিদারির অর্থনীতির ভিতকে মজবুত করা হলেও আজ কিন্তু কালের নিয়মে যমুনা স্রোতে বয়ে এই মেলাই হয়ে উঠেছে গোবরডাঙা সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার মশলা অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র।
দেবস্মিতা মণ্ডল, উত্তর ২৪ পরগনা