Story
সোনার ডিম পাড়া হাঁস কেটে ফেলে ক্ষতির মুখোমুখি পড়তে হয়েছিল কৃষককে। আর সোনালি মুরগি প্রতিপালন করে লাভবান হয়েছেন বেলডাঙার মহম্মদ ইকবাল হোসেন। ডিম বা মাংসের জন্য তাঁকে মুরগিও কাটতে হয়নি। বরং প্রতিপালন করে এখন তিনি কার্যত নজির গড়েছেন গোটা রাজ্যে।
সোনালি মুরগি চাষ শুরু করেছিলেন ১০০-১৫০ মুরগি দিয়ে। বর্তমানে ১৫০০ মুরগি প্রতিপালন করছেন ইকবাল হোসেন। কিন্তু কেন সোনালি মুরগি চাষেই মনোযোগী হলেন তিনি?
পাঁচ মাস থেকেই ডিম আসা শুরু করে সোনালি মুরগির। তারপর এক বছর মত ডিম নিয়ে মুরগি বিক্রি করে দেন ইকবালবাবু।
ইকবালবাবুর বক্তব্য অনুযায়ী, একটি মুরগি বছরে ২২০ থেকে ২২৫ টি মত ডিম দেয়। আর ঠিকঠাক পরিচর্যা করতে পারলে মাংস থেকেও যথেষ্ট লাভবান হওয়া যায়। তবে প্রতি মুরগির পিছনে কত খরচা হয় ইকবালবাবুর?
ইকবাল হোসেনের এই উত্থানের সাক্ষী থেকেছেন বহরমপুরের রাজ্য মুরগি খামারের ইনচার্জ নইমুদ্দিন শেখ। শুধু সোনালি মুরগি চাষই নয়। হ্যাচারীর প্রশিক্ষণ নিয়ে ইকবাল হোসেন বর্তমানে রাজ্যে খামারির একটি মুখ হয়ে উঠেছেন।
বর্তমানে ইকবাল বাবু বিভিন্ন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে হ্যাচারি মেশিন সাপ্লাই করে থাকেন। তবে ইকবালের সাফল্য দিশা দেখিয়েছে রামকানাই পোদ্দারকেও। তিনি ইকবালের দেখানো পথে হেঁটে সোনালি মুরগি চাষ করেছেন। এবং যথেষ্ট লাভবানও হয়েছেন।
একই কথা বললেন ইকবাল হোসেন নিজেও। রিস্ক হয়ত আছে, একইসঙ্গে সঠিকভাবে মুরগি পরিচর্যা করতে পারলে লাভের মুখ ভালোভাবে দেখা যায়।
আর ইকবালবাবু যে কার্যত নজির তৈরি করেছেন এই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নইমুদ্দীন শেখ নিজেও। তাঁর বক্তব্য, সোনালি মুরগির ফার্ম করলে গ্রামের আর্থিক পরিকাঠামো যেমন মজবুত হবে তেমনই রাজ্য জুড়ে ডিমের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করবে সোনালি মুরগি।
মুরগির চাহিদা সবসময়ই থাকে ওপরের দিকে। আর মহঃ ইকবাল হোসেনের মুরগির চাহিদা স্থানীয় বাজার থেকে শুরু করে পৌঁছে যায় অসম, ছত্তিশগঢ়, ঝাড়খন্ড এবং ওড়িশাতেও। সঠিকভাবে মুরগি প্রতিপালন করায় ইকবাল বাবু প্রতি মাসে আয় করছেন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। যা রীতিমত টেক্কা দেবে কোন বড় অফিসের মাসমাইনেকেও। একদিকে যখন ক্রমশই দেশজুড়ে চওড়া হচ্ছে বেকারত্বের থাবা, তখন অন্যদিকে ইকবাল হোসেনের মত মানুষরাই স্বনির্ভরতার নজির তৈরি করেছেন গোটা রাজ্যের বুকে।
কুশল শরিফ, মুর্শিদাবাদ