Daily
ভাদ্র মাস পড়তে না পড়তেই কিন্তু বাঙালির পুজো মোড অন। বিশ্বকর্মা পুজো দিয়ে শুরু। আর লক্ষ্মী পুজো, কালী পুজো, কার্ত্তিক পুজো পেরিয়ে শেষ সেই জগদ্ধাত্রী পুজোতে। পুজো মানেই তো সাজসজ্জা। তা সে ঘরবাড়ি সাজানোই হোক, বা মণ্ডপসজ্জা। আর এই মণ্ডপসজ্জারই একটা প্রধান উপকরণ হচ্ছে কদম ফুল। তা সেই কদম ফুল কোথায় তৈরি হয় বা কারা তৈরি করেন, জানেন? চলুন আজ আপনাদের নিয়ে যাই শোলার কদম ফুলের পাড়ায়।
উত্তর ২৪ পরগণা জেলার হাবড়ার বানিপুরের পূর্বপাড়া। পূর্বপাড়া না বলে মালাপাড়া বললে লোকজন বেশি ভালো করে চিনতে পারবেন। আষাঢ় মাস পড়তে না পড়তেই সেখানে শুরু হয়ে যায় পিক আওয়ার। আর এখন তো এনাদের দম ফেলার সময়টুকুও নেই। কারণ পুজোর জন্য তৈরি করতে হবে কদম ফুল। কেউ শোলা কাটছেন। কেউ আবার রং করছেন। কেউ কেউ সেই সমস্ত শোলা কেটে দরিতে গেঁথে ফুটিয়ে তুলছেন শোলার কদম ফুল। সত্যই, কি নিপুণ তাদের সৃষ্টি।
এখন কদম ফুল তৈরিতে ভারি ব্যস্ত বাড়ির মেয়ে বউরা। কারণ পুজোর এই সময়টুকুই তাদের বছরভরের সঞ্চয়। এলাকার প্রায় ৫০০ ঘরের জলপানির জোগান দেয় এই ব্যবসা। তবে এই বছর দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় শোলার সঞ্চয়ে ঘাটতি পড়েছে। শোলা আদৌ আসবে কি না তাই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে শিল্পীদের মধ্যে। কাজেই গত বছরের শোলার সঞ্চয়ই এখন তাদের ভরসা। আর এখন নতুন শোলা আসলে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন শোলা শিল্পীরা।
তবে কি জানেন তো? এসব প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও তারা কিন্তু এখন যতটুকু সময় পাচ্ছেন সবটা দিয়েই শোলার কদম ফুল তৈরি করছেন। নয়ত সাপ্লাইয়ে সমস্যা হবে। এখানকার শোলার কদম ফুলে সেজে ওঠে শহর কোলকাতার বড় বড় মণ্ডপ। আর শুধু কলকাতাই কেন? তাদের তৈরি এই কদম ফুলের চাহিদা রয়েছে তারকেশ্বর, আরামবাগ, সহ গোটা রাজ্যে। ঠিক কখন শুরু হয় এই কদম ফুল তৈরির কাজ?
এই কাজ করে শিল্পীরা কত উপার্জন করেন জানেন?
পুজোর সিজেন শেষ হলে এখানকার শিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিয়ের সিজেন ধরতে। শুরু হয় টোপর তৈরির কাজ। মানে গোটা বছরটাই শোলার ভারে ব্যস্ত থাকে হাবড়ার মালাপাড়া। আর এই শোলার উপরেই নির্ভর করে এই অঞ্চলের অর্থনীতি। যা পুজোর সময় একদম পিকে থাকে।
সুব্রত সরকার
হাবড়া