Market
বিনিয়োগ মানে সেখানে কমবেশি ঝুঁকি থাকেই। সেটা শেয়ার বাজার হতে পারে, মিউচুয়াল ফান্ড বা এসআইপি হতে পারে। তবে এখানেই একটা ব্যপার। অনেকের মনেই প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, যেভাবে শেয়ার বাজারের সূচক কার্যত রেকর্ড তৈরি করেছে, তারপর কি আদৌ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার সঠিক সময় এটাকে বলা যেতে পারে? সেই উত্তর খুঁজতেই আজকের এই ছোট্ট প্রতিবেদন।
প্রথমেই বলি, শেয়ার বাজারের সূচক যে ঘোরদৌড় দিয়েছিল তার অন্যতম কারণ বিদেশি বিনিয়োগ। এই ট্রেন্ডটা আগেও একবার লক্ষ্য করা গেছিল। কবে জানেন? ২০০৮ সালে। যখন বিশ্বব্যাপী রিসেশন নামে, তখন শেয়ার বাজার স্টেবল রাখার কাজটা ভারত দারুণভাবে করতে পারে। সেই সময় ফরেন ইনভেস্টরদের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়। সেটারই রিফ্লেকশন বলা যেতে পারে। এখন, বিষয়টা হচ্ছে ভারতের বাজারকে তার মানে খুব স্টেবল মনে করছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা? ঠিক কিসের কারণে ভারতে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে? একঃ পপুলেশন। সেটা দক্ষ এবং শিক্ষিত। একইসঙ্গে কর্মক্ষম। এই বিপুল পরিমাণ কমবয়সী জনসংখ্যা একদিকে যেমন উন্নতমানের ম্যানুফ্যাকচারিং করতে পারবে, ঠিক তেমনই যে কোন পণ্য কেনার ক্রয়ক্ষমতা বাড়তে পারবে অন্য যে-কোন দেশের থেকে। আর সেই সঙ্গে কাজ করছে মোদী ম্যাজিক।
মোদী বিরোধী মনোভাব নিয়ে দেশের মধ্যে আপনি যতই চেঁচামেচি করুন না কেন, বিদেশের মাটিতে মোদী ম্যাজিক দুর্ধর্ষ কাজ করছে। বিদেশের ইনভেস্টররা আস্থা রাখছেন এনডিএ জোটের ওপর। কারণ এটা একেবারে প্রমাণিত যে, পলিটিক্যাল স্টেবিলিটি না থাকলে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট সেভাবে আসে না। দেখুন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আফটার এফেক্টস গোটা বিশ্বে পড়েছে। কিন্তু ভারতের সুচারু ডিপ্লোম্যাটিক চালের জন্য সেই প্রভাব অনেকটাই এড়াতে পেরেছে ভারত। আর ঝোরো বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সূচক থেকেছে ওপরের দিকে। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। তাহলে কি এখন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা উচিৎ? শেয়ার বাজারে যেসকল সংস্থা রয়েছে তাদের মোট মার্কেট মূলধন যদি জিডিপির থেকে রেশিওর নিরিখে ১০০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে বাজারকে ওভারভ্যালুড মনে করা হয়। ভারতের শেয়ার মার্কেটের বর্তমান সিনারিও বলছে, এই রেশিও রয়েছে ৯৬-৯৭% মধ্যে। এদিকে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো বিনিয়োগ নেওয়া অনেকটাই বন্ধ করে দিল। তার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, হয়ত কোথায় তাঁরা বিনিয়োগ করবে, সেই জায়গাটা ধরতে পারছে না। তাহলে কি এখন বিনিয়োগ করবেন না? নাকি যা করেছেন, সেগুলো তুলে নেবেন?
বাজার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যদি লং টার্ম বিনিয়োগের কথা ভেবে থাকেন মানে যদি ইনভেস্টমেন্ট ১০ বা ২০ বছরের হয় তাহলে হঠাৎ মনে হলেই বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়া ঠিক নয়। শেয়ার বাজার মাঝেমধ্যে ওভারভ্যালুড হতেই পারে। তার মানে আপনি টাকা তুলে নেবেন এই অভ্যেসটা রাখবেন না। এটা ঠিক যে মার্কেট ওভারভ্যালুড যদি হয়ে যায় বা সেদিকেই যদি তার গতি থাকে তাহলে মার্কেট পড়ে যাবার পসিবিলিটি অনেকটাই থাকে। আর যদি আন্ডারভ্যালুড থাকে তাহলে বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে অনেকটা। সুতরাং ভয় পেয়ে এখনই টাকা তুলবেন না। মানে আপনার ইনভেস্টমেন্ট ভাঙবেন না। সঙ্গে যদি আপনি এসআইপি বা মিউচুয়াল ফাণ্ডে বিনিয়োগ করতে থাকেন, তাহলে সেটা করে চলুন। তবে নতুন করে যদি অনেক টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করতে নামার কথা ভাবেন, তাহলে অবশ্যই সেটা দু’বার ভাবনাচিন্তা করে তবেই নামবেন। আর শেষে একটাই কথা। খেয়াল রাখবেন সবসময় বিনিয়োগে ঝুঁকি রয়েছেই। তাই সবদিক বিবেচনা করে তবেই বিনিয়োগ করুন। প্রতিবেদনটি শেয়ার করুন লাইক করুন। আর সাবস্ক্রাইব করে নিন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ